নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভরা মৌসুম হওয়ায় বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে তুলনামূলক কম যাচ্ছে সব ধরনের সবজির দাম। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে কম দামে অন্তত সবজিটা কিনতে পেরে কিছুটা হলেও খুশি ক্রেতারা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মুরগি। গত মাসের মাঝামাঝি সময়ের পর থেকেই একটু একটু করে বাড়তে থাকা মুরগির দাম। এছাড়া ছোট-বড় বিভিন্ন জাতের মাছের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। বিশেষ করে একসময়ের কম দামের পাঙাশও এখন ছুঁয়েছে প্রায় তিনশ টাকা।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় কম দামে কিনে স্বস্তি পাচ্ছেন ক্রেতারা। আজকের বাজারে প্রতি কেজি লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, গোল বেগুন প্রতি কেজি ৫০ টাকা। এ ছাড়া ঝিঙা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পেঁয়াজের ফুল প্রতি মুঠো ১০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, শালগম প্রতি কেজি ২০ টাকা, মূলা প্রতি কেজি ২০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বরবটি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বিচিওয়ালা শিম প্রতি কেজি ৬০ টাকা, সাধারণ শিম প্রতি কেজি ৩০ টাকা, মটরশুঁটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ২০ টাকা, আলু প্রতি কেজি ৩০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ২০ টাকা, ক্ষিরা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৫০ টাকা এবং কাঁচা টমেটো প্রতি কেজি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অপরিবর্তিত রয়েছে আলু, পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি আলু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে এসেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০-২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩২০-৩৩০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০-২৯০ টাকা, এবং দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। এর সঙ্গে বাড়তি চাহিদা রয়েছে হাঁসের। প্রতিকেজি হাঁস ৫৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস হাড়সহ ৮০০ টাকা এবং হাড়ছাড়া ১০০০ টাকা এবং ছাগল-খাসির মাংস ১০০০-১২০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে স্থিতিশীল রয়েছে ডিমের দাম। প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩৫-১৪০ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৩৫-২৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, মাছ বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বছরের শুরু ও শীত মৌসুমে বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কারণে চাহিদা বেড়ে গেছে মাছের। তবে সেই তুলনায় বাজারে সরবরাহ কম, যে কারণে দাম বেড়েছে।
অন্যদিকে, আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ। তেলাপিয়া কিংবা পাঙাশ, কার্ফু কিংবা ব্রিগেড দাসব মাছের মই তুলনামূলকভাবে বেশি। একটু বড় সাইজের পাঙাশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে আরও অস্থির হয়েছে ইলিশের বাজার। কেজিপ্রতি ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সুস্বাদু এ রুপালি মাছ। বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ টাকায়। এছাড়া দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ৩২০০ টাকা, ১ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২৮০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২০০০-২২০০ টাকা হারে বিক্রি হচ্ছে, আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১২০০-১৩০০ টাকা ও ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, কোরাল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।
অস্থিরতা কমেনি চালের বাজারেও। বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট ৮০ টাকা, আটাইশ ৫৮-৬০ টাকা, মোটা স্বর্ণা ৫২-৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১১৬-১১৮ টাকায়।
বিক্রেতারা জানান, মিল পর্যায়ে চালের দাম বাড়ায় এর প্রভাব খুচরা পর্যায়েও পড়ছে। দাম বাড়ায় কমেছে চালের বেচাকেনাও। বাড়তি দামের প্রভাবে মানুষ চাল কম কিনছেন।
মুদি দোকানে অন্যান্য পণ্যের মধ্যে প্রতিলিটার বোতলের সয়াবিন তেল ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৬৮ টাকা, পাম তেল ১৫৫ থেকে ১৫৮ টাকায়, পাম তেল সুপার ১৫৯ থেকে ১৬২ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতিলিটার ২৪০ টাকা ও বোতলের তেল ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া প্যাকেটজাত চিনি প্রতিকেজি ১২৫ টাকা, চিনি ১৩০ টাকা, ছোট মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৫৫ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, চনার ডাল ১৪৫ টাকা, ছোলা ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুই কেজি প্যাকেট আটা ১২৫ টাকা, ময়দা ১৫০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকা, দেশি রসুন ২৬০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা এবং নতুন ভারতীয় আদা ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেঠে।