আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) দেশটির রাজধানী অটোয়ায় নিজ বাসভবনের বাইরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
জাস্টিন ট্রুডো বলেন, দল নতুন নেতা নির্বাচন করার পর দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন তিনি।
লিবারেল পার্টির নেতা ট্রুডো ৯ বছর ধরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেন, নিজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর তিনি পদত্যাগের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর সফলতার পেছনে পরিবারের ভূমিকা রয়েছে। গত রাতে নৈশভোজের সময় সন্তানদের কাছে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানান।
ট্রুডো ২০১৫ সালে লিবারেল পার্টির পক্ষ থেকে নির্বাচন করে কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে লড়াই করার মতো প্রগতিশীল অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক চাপের মুখে ছিলেন ট্রুডো। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগে চাপে পড়েন তিনি। দেশের রাজনীতিতে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন ট্রুডো। বর্তমান সময়ে তার জনপ্রিয়তা অনেকটাই হ্রাস পায়। বিরোধীরা তো বটেই তার নিজ দলের মধ্য থেকেও পদত্যাগের দাবি উঠছিল।
এর আগে নিজ দল লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান জাস্টিন ট্রুডো। আগামী অক্টোবরে দেশটিতে পার্লামেন্ট নির্বাচন। তার পদত্যাগে বড়ধরনের সংকটে পড়ল দলটিও।
ট্রুডো ২০১৩ সালে কানাডার লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তখন কানাডার লিবারেল দল ছিল গভীর সংকটে এবং প্রথমবারের মতো হাউস অব কমন্সে তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছিল। তার নেতৃত্বে দলটি পুনরুজ্জীবিত হলেও, বর্তমান সময়ে ট্রুডোর জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে।
তবে ট্রুডোর পদত্যাগের পর লিবারেল পার্টি রাজনৈতিক মঞ্চে স্থায়ী নেতৃত্ববিহীন অবস্থায় চলে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষত যখন নির্বাচনের আগে জরিপগুলোও বলছে, আগামী অক্টোবরের নির্বাচনে লিবারেলরা রক্ষণশীলদের কাছে ব্যাপকভাবে পরাজিত হতে পারে। এর ফলে নতুন নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো অর্থমন্ত্রী ডমিনিক লেব্ল্যাঙ্কের সঙ্গে আলোচনা করেছেন, যাতে তিনি অন্তর্বর্তী নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে ইচ্ছুক কিনা। এক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এভাবে, ট্রুডোর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত কানাডার রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন বলে মনে করা হচ্ছে। যা লিবারেল পার্টির ভবিষ্যতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।