মুম্বাই ফিল্মের এক সময়ের সুপারস্টার রাজকুমার বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন সেই সময়ের ড্রিমগার্লখ্যাত হেমামালিনীকে। কিন্তু হেমা সুপারস্টার রাজকুমারের প্রস্তাব সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন। এ নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত আছে।
মুম্বাই পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর থেকে কুলভূষণ পণ্ডিত হয়ে উঠেছিলেন বলিউডের প্রথম সারির অভিনেতা। ইন্ডাস্ট্রি তাকে রাজকুমার নামেই চেনে। ৪ দশকের ফিল্মি কেরিয়ারে অস্কার মনোনীত ‘মাদার ইন্ডিয়া’সহ ৭০টি ফিল্মে কাজ করেছেন তিনি।
সে সময়ের সুপারস্টার রাজকুমারের সঙ্গে কাজ করার জন্য একপায়ে খাড়া ছিলেন ছোট-বড় সমস্ত নায়িকাই। বরং কোনো নায়িকাকে তিনি ফিল্মে নেবেন আর কাকে নেবেন না তা স্থির করতেন রাজকুমার নিজেই। কখনো কোনো নায়িকার নাক পছন্দ হতো না তো, কখনো কোনো নায়িকার চুলে তেলের গন্ধ ভালো লাগতো না তার।
এমন নানা কারণে অনেকের সঙ্গেই তিনি অভিনয় করতে চাইতেন না। নাকচ করতে ওস্তাদ ছিলেন যিনি, সেই তার প্রস্তাবই একবার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এক নবাগত নায়িকা। সে সময় ইন্ডাস্ট্রির ওই নবাগত নায়িকা ছিলেন হেমা মালিনি। তার সাহস দেখে অবাক হয়েছিলো গোটা ইন্ডাস্ট্রি।
১৯৭১ সালের ফিল্ম ‘লাল পাথর’। ফিল্মে মুখ্য চরিত্রে ছিলেন রাজকুমার। ফিল্মের পরিচালক চেয়েছিলেন রাজকুমারের বিপরীতে কাজ করুন বৈজয়ন্তীমালা। এ নিয়ে কথাবার্তাও এগিয়েছিল খানিকটা। তার মাঝেই আচমকা বেঁকে বসেন রাজকুমার। বৈজয়ন্তীমালার সঙ্গে জুটি বাঁধতে রাজি ছিলেন না তিনি। বদলে অন্য এক নায়িকার কথা জানান।
রাজকুমারের পছন্দের সেই নায়িকা ছিলেন হেমা মালিনি। বৈজয়ন্তীমালা তখন সুপারস্টার। দর্শকমহলে জনপ্রিয় মুখ। তার পরিবর্তে কোনো উঠতি নায়িকা! রাজকুমারের এহেন সিদ্ধান্তে হতবাক হন পরিচালক। শেষে রাজকুমারের কথামতো হেমাকেই নেওয়া হয়। ফিল্মটি করতে হেমাকে প্রচুর সাহায্যও করেন রাজকুমার।
আরও পড়ুন : নায়িকা বুবলির খোঁজ মিললো যেভাবে
শুটিংয়ের সময় হেমাকে এতটাই ভালো লেগে গিয়েছিলো যে ছবি মুক্তি পাওয়ার পরই তাকে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসেন রাজকুমার। এর মাত্র কয়েক বছর আগেই ১৯৬৮ সালে বলি ডেবিউ করেছিলেন হেমা।
তার সৌন্দর্য্য এবং অভিনয় দিয়ে তিনি দর্শকদের মনে ‘ড্রিমগার্ল’ হয়ে উঠতে শুরু করেছিলেন। এ সময় কেরিয়ারের বাইরে আর কিছুই ভাবতে চাননি তিনি। তাই অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী রাজকুমার তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার পরই হেমা তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।
রাজকুমারের ভক্ত বলে পরিচিত হেমা সাফ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ভালো লাগা আর ভালোবাসা তার কাছে সম্পূর্ণ আলাদা। তিনি রাজকুমারের অভিনয়ের ভক্ত, ব্যক্তিগত জীবনে তাকে নিয়ে এগোনোর কথা ভাবেননি।
হেমার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়াটা পরবর্তীতে রাজকুমারকে ধর্মেন্দ্রর শত্রু করে দিয়েছিলো। হেমার সঙ্গে যখন ধর্মেন্দ্রর সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হলো ইন্ডাস্ট্রিতে কারণে অকারণে নানা মন্তব্য করতে শুরু করেন রাজকুমার।
কখনো ধর্মেন্দ্রকে ‘পালোয়ান’ তো কখনো তাকে ‘মদ্যপ’ বলে বিতর্ক তৈরি করতেন। ধর্মেন্দ্র যদিও এগুলোকে হালকা ভাবেই নিতেন। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।