নিজস্ব প্রতিবেদক :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই জড়ো হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ভোর থেকে সারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে আসতে শুরু করেন।
নেতৃবৃন্দ দল বেঁধে ক্যাম্পাসে ঘুরে ঘুরে ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘দিল্লি না ঢাকা ঢাকা’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ,’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন।
এদিন সবচেয়ে আগে শহীদ মিনারে উপস্থিত হয় মৌলভীবাজার ইউনিট। জানা গেছে, এখনো বেশ কয়েকটি ইউনিট পথে আছে। বিকাল তিনটায় মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে, এর আগে চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও অন্যান্য কার্যক্রম।
প্রথমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত ‘জুলাই আন্দোলনের’ ঘোষণাপত্র প্রকাশের কথা থাকলেও, গতরাতে কর্মসূচিটি বাতিল করা হয়। তার পরিবর্তে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়, যা দেশের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
মধ্যরাতে কর্মসূচি ঘোষণার পর, ভোর থেকে শহীদ মিনারে মঞ্চ তৈরি ও প্রস্তুতি চলছিল।
জানা যায়, গণজমায়েতে অংশ নিতে সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রত্যাশা, ফ্যাসিবাদবিরোধী শপথে সারা দেশের মানুষ এক হওয়ার শপথ নেবে।
এর আগে, সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনটির সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আবির্ভূত জন-আকাঙ্ক্ষা তথা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কায়েমের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ এক ঐতিহাসিক পটভূমিতে আবির্ভূত হয়েছে। হাজারও শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি ও জন-আকাঙ্ক্ষার দলিল স্বরূপ ‘জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র’ অত্যাবশ্যক ছিল। এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের ঐতিহাসিক দায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর বর্তায়। নানান প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার পক্ষে এই ঐতিহাসিক ঘোষণাপত্র প্রণয়ন ও ঘোষণার দায়িত্ব নিয়েছিল।
আরিফ সোহেল বলেন, আমাদের উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের আপামর ছাত্র-জনতার মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত ও ইতিবাচক সাড়া সঞ্চারিত হয়েছে। এ অবস্থায় ছাত্র-জনতার আহ্বানে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতা এই সময়পোযোগী উদ্যোগ সাধুবাদ জানাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান- আপনারা যে উদ্দীপনায় সংগঠিত হয়েছেন, তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সমন্বয়ক সারজিস আলম উপস্থিত ছিলেন।