চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
আদালত বা সরকার নিষিদ্ধ না করলে আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে বাদ দেয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, আওয়ামী লীগ যেহেতু নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, তাই রাজনৈতিকভাবে বা আদালত নিষিদ্ধ না করলে নির্বাচনে আসতে কোন বাধা নেই। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে কমিশন বদ্ধপরিকর।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনের অংশগ্রহণের বিষয়টি মূলত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অথবা আদালতের আইনি সিদ্ধান্ত। শুনেছি, দলটি যাতে নির্বাচনে না আসতে পারে সেজন্য কেউ কেউ মামলা করেছেন। এক্ষেত্রে আদালত যে রায় দেবেন আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
নাসির উদ্দীন বলেন, দল করার অধিকার সবার আছে। আপনারা যে দলটির (আওয়ামী লীগ) কথা বলছেন, তারা অনেক আগে থেকেই রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত। সরকার যদি সেই দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করে আমরা তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে পারি না।
সিইসি বলেন, গেল তিনটি নির্বাচনে কী হয়েছে সেটি সবাই দেখেছে। এবার নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। দেশীয় কিংবা বহির্বিশ্বে কোনো চাপ নেই। আর তাই সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে কমিশন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
সিইসি বলেন, সংবিধানে যে নির্দেশনা রয়েছে সেই নির্দেশনা অনুযায়ীই নির্বাচন কমিশন তার কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। খুব দ্রুতই ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজ শুরু হবে। কেউ অবৈধভাবে ভোটার হতে চাইলে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিইসি বলেন, আমরা ভোটারদের আস্থাহীনতা দূর করব। এ জন্য বাড়ি বাড়ি যাব। ৬ মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ করব। ভোটার তালিকা থেকে যারা বাদ পড়ে গেছে তাদের অন্তর্ভুক্ত করব।
তিনি বলেন, আপনাদের বলতে চাই এবারের নির্বাচন আগের মতো হবে না। এ জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। এ জন্য সবার সহযোগিতা লাগবে।
গণ-আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া দল আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না সেটি নিয়ে রাজনীতির মাঠে নানা আলোচনা চলছে। বাংলাদেশে গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্ররা বিভিন্ন সংস্কার করে অনুষ্ঠিতব্য আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সুযোগ না দেওয়ার কথা বলছে। ছাত্র নেতাদের দাবি, জুলাই হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত পতিত আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করার সুযোগ যেন না দেওয়া হয়।
এই সভায় আগামী ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ এবং মার্চ মাসে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের কথা জানান সিইসি।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলীর সভাপতিত্বে সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামসহ সকল জেলা-উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা অংশ নেন।