নিজস্ব প্রতিবেদক :
চলতি মাসের ২৮ দিনে দেশে বৈধপথে ২৪২ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৯ হাজার ৪০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে)। দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৮ কোটি ৬৪ লাখ ডলার।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত সবশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিসেম্বরের প্রথম ২৮ দিনে দেশে প্রবাসীরা মোট ২৪২ কোটি ৫ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। গত নভেম্বরে এই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৫ কোটি ২৪ লাখ ডলার এবং অক্টোবর মাসে এসেছিল ২১৬ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। অর্থাৎ, অক্টোবর ও নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরের প্রথম ৪ সপ্তাহে রেমিট্যান্সের পরিমাণ বেড়েছে।
২০২০ সালের জুলাই মাসে প্রবাসীরা সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার, যা বিগত ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ডিসেম্বরের প্রথম ৪ সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকগুলো থেকে রেমিট্যান্স এসেছে বিভিন্নভাবে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো থেকে এসেছে ৬৮ কোটি ৯৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো থেকে এসেছে ৯ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে এসেছে ১৬৩ কোটি ১৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলো থেকে এসেছে ৬৯ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।
বিস্তারিতভাবে জানানো হয়েছে, ২২ থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ৪১ কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কম। তবে ১৫ থেকে ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে এসেছিল ৬২ কোটি ৫৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আর ৮ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে এসেছিল ৭৬ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার ডলার। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রবাসীরা ৬১ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন।
এতে বলা হয়, ডিসেম্বর মাসের প্রথম চার সপ্তাহে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ৯টি। এর মধ্যে রয়েছে একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক, একটি বিশেষায়িত ব্যাংক, ৪টি বেসরকারি ব্যাংক ও ৩টি বিদেশি ব্যাংক।
ডিসেম্বরের প্রথম ২৮ দিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত খাতের রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব ও বেসরকারি খাতের কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, সিটিজেন্স ব্যাংক পিএলসি, পদ্মা ব্যাংক পিএলসি ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংকে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।
এ ছাড়া কোনো রেমিট্যান্স আসেনি বিদেশি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং হাবিব ব্যাংকেও।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে (২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত) এক হাজার ৩৫৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে এসেছে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার, অক্টোবরে এসেছে ২৪০ কোটি ডলার এবং সবশেষ নভেম্বরে মাসে এসেছে ২২০ কোটি মার্কিন ডলার।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই হাজার ৩৯২ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রার যার পরিমাণ দুই লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। রেমিট্যান্সের এ অঙ্ক এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আহরণ। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে; পরিমাণ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার।