নিজস্ব প্রতিবেদক :
চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচজনের সবাই মারা গেছেন। এর ফলে এবার নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যুর হার ১০০ ভাগ। ২০২৩ সালে এই হার ছিল ৭৭ শতাংশ। গত বছর ১৩ জন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মারা যান ১০ জন।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) আয়োজিত ‘নিপাহ ভাইরাসের বিস্তার এবং ঝুঁকি বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময়’ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য দেওয়া জানানো হয়।
সভায় আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন নিপাহ ভাইরাসের বিস্তার এবং ঝুঁকিবিষয়ক একটি তথ্যনির্ভর উপস্থাপনা তুলে ধরেন।
জানা যায়, এ বছর আক্রান্তদের ৫ জনের মাঝে পাঁচজন পুরুষ, একজন নারী। এদের মধ্যে দুইজন শিশুও ছিল। মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে দুইজন মানিকগঞ্জের বাসিন্দা। অন্য তিনজন মারা গেছেন খুলনা, শরীয়তপুর ও নওগাঁয়।
বক্তারা বলেন, খেজুরের কাঁচা রস থেকে নিপাহ ভাইরাস মানুষে সংক্রমিত হয়। শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার সূযোগ থাকে। নিপাহ ভাইরাস এ সময়েই ছড়ানোর সময়। নিপাহ একটি মারাত্মক রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস। নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় ৭১ শতাংশ রোগী মারা যায়। বাংলাদেশে শীতকালে কাঁচা খেজুরের রস পান করে সাধারণত মানুষ নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। তাই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতে মানুষকে সাবধান থাকতে হবে।
গেল বছর নিপা ভাইরাসে আক্রন্ত হয়েছিলেন ১৩ জন; তাদের মধ্যে মারা যান ১০ জন।
বাংলাদেশে ২০০১ সালে মেহেরপুরে প্রথমবারের মত নিপা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। নিপা আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হলেও পরে গুরুতর স্নায়বিক জটিলতায় পড়ার আশঙ্কা থাকে। গর্ভবতী নারীদের গর্ভাবস্থার শেষ দিকে এই জটিলতা আরও খারাপ হয়।
২০০৪ সালে রোগটি বাড়তে থাকে ও মৃত্যুর ব্যাপকতা দেখা দেয়। ওই বছর ৬৭ জন আক্রান্তের মধ্যে ৫০ জনের মৃত্যু হয়। সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্তদের মধ্যে ২০১৫ সালের পর থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে। শুরুর বছর থেকে চলতি বছর পর্যন্ত গত ২৩ বছরে ৩৪৩ জনের নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য উঠে এসেছে সভায়।