Dhaka রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণঅভ্যুত্থানের বিশ্বাসের সঙ্গে বেঈমানি করলে প্রধান উপদেষ্টাকেও ছাড় দেওয়া হবে না : সারজিস আলম

রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি : 

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের বিশ্বাসের সঙ্গে বেঈমানি করলে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকেও ছাড় দেওয়া হবে না।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারের মধ্যে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

১৯৭১ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের কাছে দেশকে ইজারা দিয়েছিলেন‌ মন্তব্য করে সারজিস আলম বলেন, ‘এখন যে কোনো দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হবে সমতা ও মর্যাদার। ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে মর্যাদার সম্পর্ক স্থাপন করতে চাইলে খুনি হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে হবে।এদেশের জনগণ তার বিচার করবে।’

তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার বিচারের জন্য তার লাশ যদি কবর থেকে তোলা না লাগে, তাহলে ২০২৪-এর গণহত্যার বিচারের জন্য শহিদদের লাশ কবর থেকে কেন তুলতে হবে? আর কোনো শহিদের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না। শহিদদের হত্যা মামলাগুলোতে বিচারকার্য পর্যন্ত নিয়ে যেতে যারা অসহযোগিতা করবে তারাও হত্যাকারী হিসেবে বিবেচিত হবে।

জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা দালাল নই, ক্ষমতা পিপাসু নই। এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিশ্বাসের সঙ্গে বেঈমানি করেছে- এমনকি প্রফেসর ড. ইউনুসও যদি হয় তাকেও আমরা ছেড়ে কথা বলব না। ’

সারজিস আলম বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কী হবে সেটি তাদের কাজের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। সম্পর্ক ভালো রাখতে চাইলে ভারতকে খুনি শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দিয়ে ফেরত দিতে হবে। এ বাংলাদেশের মানুষ তার বিচার করবে।

তিনি বলেন, গুলি চালানো পুলিশ সদস্যদের শাস্তির বদলে বদলি করে নতুন পোস্টিংয়ের তদবির চলছে। মামলা বাণিজ্যের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জড়িত হচ্ছে। শেখ মুজিব হত্যার বিচারের জন্য কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনের প্রয়োজন না হলে জুলাই-আগস্টের শহীদদের মরদেহ কেন তুলতে হবে? আর কোনো শহীদের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না।

সারজিস আলম বলেন, গুলি চালানো পুলিশ সদস্যদের শাস্তির বদলে বদলি করে নতুন করে পোস্টিং তদবির চলছে। মামলা বাণিজ্যের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জড়িত হচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের বিশ্বাসের সাথে বেঈমানি করলে কাউকেই ছাড়া দেওয়া হবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।

তিনি বলেন, চব্বিশের অভুত্থানে যারা শহীদ হয়েছে তাদের হত্যা মামলার জন্য কারও লাশ উত্তোলন করা যাবে না। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিচারিক যে মন্ত্রণালয় রয়েছে, সংশ্লিষ্ট সকলকে একটি কথা বলে দিতে চাই-যে ভাইয়ের জীবনের রক্তের ওপরে ওই চেয়ারে আপনারা বসে রয়েছেন, আপনারা কোনোদিন চারমাস পর তাদের লাশ উত্তোলন করতে পারেন না।

এখনও আওয়ামী লীগের অনেক নেতা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সারজিস বলেন, চব্বিশের অভুত্থানের চারমাস পেরিয়েছে। খুনি হাসিনার অন্যতম দোসর নাটোরের খুনি এমপি শিমুল আজও আমাদের সামনে রয়েছে। আজও পাবনার সাঈদ চেয়ারম্যান, এই বাংলাদেশে তার অস্তিত্ব রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এই খুনিরা প্রকাশ্যে আমার ভাইদেরকে পুড়িয়ে মেরেছে, গুলি করে হত্যা করেছে। যে শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আজকে আপনারা উপদেষ্টা, পুলিশ সুপার, আইজিপি, ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের রক্তের সাথে এই বেঈমানি কীভাবে সম্ভব?’

অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিভাগের ৪৬ জন শহীদের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে চেক দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কয়েকজন সমন্বয়ক বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আবহাওয়া

সংস্কারের অভাবে সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

গণঅভ্যুত্থানের বিশ্বাসের সঙ্গে বেঈমানি করলে প্রধান উপদেষ্টাকেও ছাড় দেওয়া হবে না : সারজিস আলম

প্রকাশের সময় : ০৪:৫৮:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি : 

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের বিশ্বাসের সঙ্গে বেঈমানি করলে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকেও ছাড় দেওয়া হবে না।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারের মধ্যে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

১৯৭১ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের কাছে দেশকে ইজারা দিয়েছিলেন‌ মন্তব্য করে সারজিস আলম বলেন, ‘এখন যে কোনো দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হবে সমতা ও মর্যাদার। ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে মর্যাদার সম্পর্ক স্থাপন করতে চাইলে খুনি হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে হবে।এদেশের জনগণ তার বিচার করবে।’

তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার বিচারের জন্য তার লাশ যদি কবর থেকে তোলা না লাগে, তাহলে ২০২৪-এর গণহত্যার বিচারের জন্য শহিদদের লাশ কবর থেকে কেন তুলতে হবে? আর কোনো শহিদের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না। শহিদদের হত্যা মামলাগুলোতে বিচারকার্য পর্যন্ত নিয়ে যেতে যারা অসহযোগিতা করবে তারাও হত্যাকারী হিসেবে বিবেচিত হবে।

জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা দালাল নই, ক্ষমতা পিপাসু নই। এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিশ্বাসের সঙ্গে বেঈমানি করেছে- এমনকি প্রফেসর ড. ইউনুসও যদি হয় তাকেও আমরা ছেড়ে কথা বলব না। ’

সারজিস আলম বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কী হবে সেটি তাদের কাজের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। সম্পর্ক ভালো রাখতে চাইলে ভারতকে খুনি শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দিয়ে ফেরত দিতে হবে। এ বাংলাদেশের মানুষ তার বিচার করবে।

তিনি বলেন, গুলি চালানো পুলিশ সদস্যদের শাস্তির বদলে বদলি করে নতুন পোস্টিংয়ের তদবির চলছে। মামলা বাণিজ্যের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জড়িত হচ্ছে। শেখ মুজিব হত্যার বিচারের জন্য কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনের প্রয়োজন না হলে জুলাই-আগস্টের শহীদদের মরদেহ কেন তুলতে হবে? আর কোনো শহীদের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না।

সারজিস আলম বলেন, গুলি চালানো পুলিশ সদস্যদের শাস্তির বদলে বদলি করে নতুন করে পোস্টিং তদবির চলছে। মামলা বাণিজ্যের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জড়িত হচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের বিশ্বাসের সাথে বেঈমানি করলে কাউকেই ছাড়া দেওয়া হবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।

তিনি বলেন, চব্বিশের অভুত্থানে যারা শহীদ হয়েছে তাদের হত্যা মামলার জন্য কারও লাশ উত্তোলন করা যাবে না। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিচারিক যে মন্ত্রণালয় রয়েছে, সংশ্লিষ্ট সকলকে একটি কথা বলে দিতে চাই-যে ভাইয়ের জীবনের রক্তের ওপরে ওই চেয়ারে আপনারা বসে রয়েছেন, আপনারা কোনোদিন চারমাস পর তাদের লাশ উত্তোলন করতে পারেন না।

এখনও আওয়ামী লীগের অনেক নেতা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সারজিস বলেন, চব্বিশের অভুত্থানের চারমাস পেরিয়েছে। খুনি হাসিনার অন্যতম দোসর নাটোরের খুনি এমপি শিমুল আজও আমাদের সামনে রয়েছে। আজও পাবনার সাঈদ চেয়ারম্যান, এই বাংলাদেশে তার অস্তিত্ব রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এই খুনিরা প্রকাশ্যে আমার ভাইদেরকে পুড়িয়ে মেরেছে, গুলি করে হত্যা করেছে। যে শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আজকে আপনারা উপদেষ্টা, পুলিশ সুপার, আইজিপি, ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের রক্তের সাথে এই বেঈমানি কীভাবে সম্ভব?’

অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিভাগের ৪৬ জন শহীদের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে চেক দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কয়েকজন সমন্বয়ক বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।