Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে না : জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে না বলে মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিমএম) কাদের বলেন, কেউ দোষ করলে তার বিচার হওয়া উচিত। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অবশ্যই অংশ নেওয়া উচিত।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে সংবিধান সংরক্ষণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেটা উচিতও নয়, কেউ দোষ করলে তার বিচার হওয়া উচিত। আগামী নির্বাচনে অবশ্যই আওয়ামী লীগের অংশ নেওয়া উচিত। আওয়ামী লীগের যারা দোষ করেছে, তাদের তদন্তের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করুন। অকারণে মামলা দিয়ে কাউকেই শাস্তি দেওয়া ঠিক নয়।

জি এম কাদের বলেন, একটি সংগঠনের সবাই কি অপরাধী? যদি তাই ভাবেন, তাহলে শেখ হাসিনার সঙ্গে আপনাদের তফাত কী? শেখ হাসিনা মনে করত বিএনপি ও জামায়াত করলেই অপরাধী, এখন তো আপনারা সেটাই করছেন। আমরা চাই আগামী নির্বাচনে সব দল অংশ নিক। যাদের নিবন্ধন দিয়েছেন, তাদের কেন নির্বাচনে আসতে দেবেন না?

জাপা চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, জাতীয় পার্টিকে সাংবিধানিকভাবে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। পার্টি অফিসে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এতই ঘৃণিত হয়ে গেলাম! দেশে অস্থিরতার বীজ বপন হয়ে গেল। নেতাদের পাসপোর্ট আটকে দেওয়া হয়েছে।

জিএম কাদের বলেন, মাত্র ১৮টি দলকে নিয়ে তারা জাতীয় ঐক্য করেছে। অথচ নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দল ৫৩টি। ৫০ শতাংশ মানুষকে জাতীয় ঐক্যের ডাক থেকে বাহিরে রেখে জাতীয় ঐক্যের নামে অনৈক্যর সূচনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। এতে জাতিগত ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, দেশে একটি সংঘাতময় অবিশ্বাসের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’

গণমাধ্যম নিয়ে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, ‘গণমাধ্যমে চরমভাবে সেল্ফ সেন্সরশিপ চলছে। স্বাধীনভাবে সাংবাদিকদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।’

নির্বাচন হতে হবে অবাধ, নিরপেক্ষ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল যদি সন্ত্রাসী সংগঠন না হয়, তাদের উদ্দেশ্য যদি আইনবিরোধী না হয়, তাহলে সেই সব সংগঠনকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে বাইরে রাখা যাবে না। তাদের মধ্যে কেউ সন্ত্রাসী বা অপরাধী হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এটাই নিয়ম।

জাতীয় ঐক্যের নামে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় অনৈক্যের সূচনা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়তে জাতীয় ঐক্য দরকার। সংস্কারে সবার মতামত দরকার আছে, পরবর্তীকালে এটি সংসদেও পাস করতে হবে। বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকার কি সবার মতামতের ভিত্তিতে সংস্কার করছে? এখন দেখা যাচ্ছে, ঐক্যের চেয়ে প্রতিশোধের বিষয়টি সামনে আসছে।

সরকারের সমালোচনা করে কাদের আরও বলেন, আমরা সরকারকে সমর্থন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে ছিলাম। কিন্তু সরকার সেই সমর্থন পদদলিত করেছে। সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছিলাম। ওনাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা সেটি হস্তান্তর করতে চেয়েছিলাম। তারা কর্মচারী দিয়ে সেই প্রস্তাবনা গ্রহণ করেছে, এমনকি ছবি তুলতেও নিষেধ ছিল তাতে। তারা সময় দিয়েও আমাদের কাছ থেকে প্রস্তাবনা গ্রহণ করতে চাইনি।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিমানের ফ্লাইটে ফের ত্রুটি, শারজাহ না গিয়ে ফিরে এলো ঢাকায়

অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে না : জিএম কাদের

প্রকাশের সময় : ০৯:৪৬:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে না বলে মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিমএম) কাদের বলেন, কেউ দোষ করলে তার বিচার হওয়া উচিত। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অবশ্যই অংশ নেওয়া উচিত।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে সংবিধান সংরক্ষণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেটা উচিতও নয়, কেউ দোষ করলে তার বিচার হওয়া উচিত। আগামী নির্বাচনে অবশ্যই আওয়ামী লীগের অংশ নেওয়া উচিত। আওয়ামী লীগের যারা দোষ করেছে, তাদের তদন্তের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করুন। অকারণে মামলা দিয়ে কাউকেই শাস্তি দেওয়া ঠিক নয়।

জি এম কাদের বলেন, একটি সংগঠনের সবাই কি অপরাধী? যদি তাই ভাবেন, তাহলে শেখ হাসিনার সঙ্গে আপনাদের তফাত কী? শেখ হাসিনা মনে করত বিএনপি ও জামায়াত করলেই অপরাধী, এখন তো আপনারা সেটাই করছেন। আমরা চাই আগামী নির্বাচনে সব দল অংশ নিক। যাদের নিবন্ধন দিয়েছেন, তাদের কেন নির্বাচনে আসতে দেবেন না?

জাপা চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, জাতীয় পার্টিকে সাংবিধানিকভাবে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। পার্টি অফিসে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এতই ঘৃণিত হয়ে গেলাম! দেশে অস্থিরতার বীজ বপন হয়ে গেল। নেতাদের পাসপোর্ট আটকে দেওয়া হয়েছে।

জিএম কাদের বলেন, মাত্র ১৮টি দলকে নিয়ে তারা জাতীয় ঐক্য করেছে। অথচ নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দল ৫৩টি। ৫০ শতাংশ মানুষকে জাতীয় ঐক্যের ডাক থেকে বাহিরে রেখে জাতীয় ঐক্যের নামে অনৈক্যর সূচনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। এতে জাতিগত ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, দেশে একটি সংঘাতময় অবিশ্বাসের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’

গণমাধ্যম নিয়ে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, ‘গণমাধ্যমে চরমভাবে সেল্ফ সেন্সরশিপ চলছে। স্বাধীনভাবে সাংবাদিকদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।’

নির্বাচন হতে হবে অবাধ, নিরপেক্ষ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল যদি সন্ত্রাসী সংগঠন না হয়, তাদের উদ্দেশ্য যদি আইনবিরোধী না হয়, তাহলে সেই সব সংগঠনকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে বাইরে রাখা যাবে না। তাদের মধ্যে কেউ সন্ত্রাসী বা অপরাধী হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এটাই নিয়ম।

জাতীয় ঐক্যের নামে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় অনৈক্যের সূচনা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়তে জাতীয় ঐক্য দরকার। সংস্কারে সবার মতামত দরকার আছে, পরবর্তীকালে এটি সংসদেও পাস করতে হবে। বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকার কি সবার মতামতের ভিত্তিতে সংস্কার করছে? এখন দেখা যাচ্ছে, ঐক্যের চেয়ে প্রতিশোধের বিষয়টি সামনে আসছে।

সরকারের সমালোচনা করে কাদের আরও বলেন, আমরা সরকারকে সমর্থন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে ছিলাম। কিন্তু সরকার সেই সমর্থন পদদলিত করেছে। সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছিলাম। ওনাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা সেটি হস্তান্তর করতে চেয়েছিলাম। তারা কর্মচারী দিয়ে সেই প্রস্তাবনা গ্রহণ করেছে, এমনকি ছবি তুলতেও নিষেধ ছিল তাতে। তারা সময় দিয়েও আমাদের কাছ থেকে প্রস্তাবনা গ্রহণ করতে চাইনি।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।