Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত হঠাৎ করেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। যারা আধিপত্যবাদী মানসিকতা পোষণ করে তাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চাই না। ভারত আচরণ পরিবর্তন না করলে বাংলাদেশ আগামীতে তাদের সঙ্গে ব্যবসা করবে না।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে ভারতীয় পণ্য বর্জনের দাবিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যে সরকার চায়, ভারত তাদের পছন্দ করে না। তারা মনে করে পেঁয়াজ, রসুন, আদা বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে মরবে। সঙ্গে তারা এও মনে করে, এসব পণ্য আমাদের দেশ উৎপাদন কিংবা অন্য দেশ থেকে আনতে পারবে না। কিন্তু তাদের ধারণা ভুল।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে আপনারা ভারতকে বিভাজন করছেন, ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে গণতন্ত্রের যে একটি ঐতিহ্য ছিল এটাকেও ভুলণ্ঠিত করছেন। আর সেই সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে কট্টর হিন্দুত্বাবাদীদের উসকে দিয়ে আপনারা চাচ্ছেন উপমহাদেশে আপনাদের আধিপত্য কায়েম করতে। আপনাদের এই বিদ্বেষপূর্ণ ও হিংসাশ্রয়ীমূলক মনোভাব, এই ধরনের অপরকে ঘৃণা করার মনোভাবের কারণে আজকে নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ আপনাদের সাথে নেই। পাকিস্তান তো নেই-ই,বাংলাদেশও আপনাদের সাথে নেই। শুধু আপনাদের অহংকার এবং একের পর এক শোষণের যে মনোভাব সেই কারণে।

ভারতের উদ্দেশে বিএনপির এই মুখপাত্র আরও বলেন, আপনারা মনে করছেন আপনারা পেঁয়াজ বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের মানুষ তরকারিতে পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারবে না। আপনারা রসুন,আদা, সয়াবিন তেল বন্ধ করে দিলে আমরা এগুলো আর রান্নায় ব্যবহার করতে পারবো না! এটা তো আপনারা দুঃস্বপ্ন দেখছেন। আপনারা গরু রপ্তানি পাঁচ- ছয় বছর ধরে বন্ধ করে দিয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষ গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে তারা গরুর খামার, ছাগলের খামার গড়ে তুলে এক কোরবানি ঈদেই এক কোটি ২০ লাখ গবাদি পশু জবাই করে।

প্রতিবেশী রাষ্ট্রের উদ্দেশে রিজভী আরও বলেন, আপনারা ভুলে যাবেন না বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত শ্রম প্রিয়,কষ্ট প্রিয় পেঁয়াজ রসুন আদা তারা নিজেরাই উৎপাদন করতে জানে। আপনারা মনে করেন আপনারাই শুধু একটি দেশ আছে পৃথিবীতে! আর কি দেশ নেই পৃথিবীতে যাদের কাছ থেকে আমরা পেঁয়াজ আমদানি করতে পারব যাদের কাছ থেকে আমরা রসুন তেল আমদানি করতে পারবে। আপনারা মনে করেছেন, এগুলো বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থা কাহিল হবে। অবস্থা তো কাহিল হয়েছে আপনাদের। আপনাদের নিউমার্কেটের কোনো দোকান চলে না, আপনাদের মার্কেটগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বাংলাদেশের মানুষ ওই কলকাতায় গিয়ে ডলার খরচ করে তারা সেখানে কেনাকাটা করে চিকিৎসা করতে যায় হাসপাতালে। হাসপাতাল আর চলবে না। আপনারা বন্ধ করে দিয়ে মনে করেছেন বাংলাদেশের মানুষ অস্থির হয়ে গেছে, বাংলাদেশের মানুষ আনন্দিত। প্রয়োজন হলে থাইল্যান্ড যাবে, মালয়েশিয়া যাবে ইন্দোনেশিয়া যাবে কিংবা অন্য দেশে যাবে। আপনাদের মত হিংসাদ্রোহী যারা আমাদেরকে ঘৃণা পোষণ করেন সেই দেশে মানুষ যেতে চায় না। কারণ রক্ত মূল্যে স্বাধীনতা কেনা এই জাতি। এই জাতিকে আপনি ভয় দেখিয়ে আপনাদের নতজানু করবেন সেই জাতি বাংলাদেশ নয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, রিপাবলিক বাংলা টিভি বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা দাবি করছে। তারা যদি এই দাবি করে বাংলাদেশের মানুষও বিহার উড়িষ্যা দাবি করবে। সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে বাংলাদেশে আধিপত্য কায়েম করতে চায় ভারত। এই জন্য তাদের কোনো প্রতিবেশী তাদের সঙ্গে নেই।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, যারা এমন আধিপত্যবাদী মানসিকতা পোষণ করে, তাদের সঙ্গে কেউ ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চায় না। ভারত যদি নিজেদের আচরণে পরিবর্তন না আনে, তাহলে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ আগামীতে ব্যবসা করবে কিনা সেটা ভাবা হবে।

বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ডলার খরচ করে ভারতে চিকিৎসা নিতে যায়। সেখানকার হোটেলগুলোতে এখন হাহাকার শুরু হয়ে গেছে। যারা এত ঘৃণা পোষণ করে তাদের দেশে মানুষও যেতে চায়না।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি জাহিদুল কবির, ছাত্রদল নেতা তৌহিদ আওয়াল, রাজু আহমেদ প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির ৫ দফা দাবিতে ১৫ দিনের আলটিমেটাম (ভিডিও)

ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০৫:৪৬:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত হঠাৎ করেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। যারা আধিপত্যবাদী মানসিকতা পোষণ করে তাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চাই না। ভারত আচরণ পরিবর্তন না করলে বাংলাদেশ আগামীতে তাদের সঙ্গে ব্যবসা করবে না।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে ভারতীয় পণ্য বর্জনের দাবিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যে সরকার চায়, ভারত তাদের পছন্দ করে না। তারা মনে করে পেঁয়াজ, রসুন, আদা বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে মরবে। সঙ্গে তারা এও মনে করে, এসব পণ্য আমাদের দেশ উৎপাদন কিংবা অন্য দেশ থেকে আনতে পারবে না। কিন্তু তাদের ধারণা ভুল।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে আপনারা ভারতকে বিভাজন করছেন, ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে গণতন্ত্রের যে একটি ঐতিহ্য ছিল এটাকেও ভুলণ্ঠিত করছেন। আর সেই সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে কট্টর হিন্দুত্বাবাদীদের উসকে দিয়ে আপনারা চাচ্ছেন উপমহাদেশে আপনাদের আধিপত্য কায়েম করতে। আপনাদের এই বিদ্বেষপূর্ণ ও হিংসাশ্রয়ীমূলক মনোভাব, এই ধরনের অপরকে ঘৃণা করার মনোভাবের কারণে আজকে নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ আপনাদের সাথে নেই। পাকিস্তান তো নেই-ই,বাংলাদেশও আপনাদের সাথে নেই। শুধু আপনাদের অহংকার এবং একের পর এক শোষণের যে মনোভাব সেই কারণে।

ভারতের উদ্দেশে বিএনপির এই মুখপাত্র আরও বলেন, আপনারা মনে করছেন আপনারা পেঁয়াজ বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের মানুষ তরকারিতে পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারবে না। আপনারা রসুন,আদা, সয়াবিন তেল বন্ধ করে দিলে আমরা এগুলো আর রান্নায় ব্যবহার করতে পারবো না! এটা তো আপনারা দুঃস্বপ্ন দেখছেন। আপনারা গরু রপ্তানি পাঁচ- ছয় বছর ধরে বন্ধ করে দিয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষ গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে তারা গরুর খামার, ছাগলের খামার গড়ে তুলে এক কোরবানি ঈদেই এক কোটি ২০ লাখ গবাদি পশু জবাই করে।

প্রতিবেশী রাষ্ট্রের উদ্দেশে রিজভী আরও বলেন, আপনারা ভুলে যাবেন না বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত শ্রম প্রিয়,কষ্ট প্রিয় পেঁয়াজ রসুন আদা তারা নিজেরাই উৎপাদন করতে জানে। আপনারা মনে করেন আপনারাই শুধু একটি দেশ আছে পৃথিবীতে! আর কি দেশ নেই পৃথিবীতে যাদের কাছ থেকে আমরা পেঁয়াজ আমদানি করতে পারব যাদের কাছ থেকে আমরা রসুন তেল আমদানি করতে পারবে। আপনারা মনে করেছেন, এগুলো বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থা কাহিল হবে। অবস্থা তো কাহিল হয়েছে আপনাদের। আপনাদের নিউমার্কেটের কোনো দোকান চলে না, আপনাদের মার্কেটগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বাংলাদেশের মানুষ ওই কলকাতায় গিয়ে ডলার খরচ করে তারা সেখানে কেনাকাটা করে চিকিৎসা করতে যায় হাসপাতালে। হাসপাতাল আর চলবে না। আপনারা বন্ধ করে দিয়ে মনে করেছেন বাংলাদেশের মানুষ অস্থির হয়ে গেছে, বাংলাদেশের মানুষ আনন্দিত। প্রয়োজন হলে থাইল্যান্ড যাবে, মালয়েশিয়া যাবে ইন্দোনেশিয়া যাবে কিংবা অন্য দেশে যাবে। আপনাদের মত হিংসাদ্রোহী যারা আমাদেরকে ঘৃণা পোষণ করেন সেই দেশে মানুষ যেতে চায় না। কারণ রক্ত মূল্যে স্বাধীনতা কেনা এই জাতি। এই জাতিকে আপনি ভয় দেখিয়ে আপনাদের নতজানু করবেন সেই জাতি বাংলাদেশ নয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, রিপাবলিক বাংলা টিভি বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা দাবি করছে। তারা যদি এই দাবি করে বাংলাদেশের মানুষও বিহার উড়িষ্যা দাবি করবে। সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে বাংলাদেশে আধিপত্য কায়েম করতে চায় ভারত। এই জন্য তাদের কোনো প্রতিবেশী তাদের সঙ্গে নেই।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, যারা এমন আধিপত্যবাদী মানসিকতা পোষণ করে, তাদের সঙ্গে কেউ ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চায় না। ভারত যদি নিজেদের আচরণে পরিবর্তন না আনে, তাহলে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ আগামীতে ব্যবসা করবে কিনা সেটা ভাবা হবে।

বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ডলার খরচ করে ভারতে চিকিৎসা নিতে যায়। সেখানকার হোটেলগুলোতে এখন হাহাকার শুরু হয়ে গেছে। যারা এত ঘৃণা পোষণ করে তাদের দেশে মানুষও যেতে চায়না।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি জাহিদুল কবির, ছাত্রদল নেতা তৌহিদ আওয়াল, রাজু আহমেদ প্রমুখ।