স্পোর্টস ডেস্ক :
ব্যাট-বলের লড়াই তো ছিলই, মনস্তাত্ত্বিক লড়াইও চলছিল মাঠে। তাতে আজিজুল হাকিম যেন তেতে উঠলেন আরও। আলি রাজার বলে চোখধাঁধানো এক শটে ছক্কা মেরে প্রায় তেড়ে গিয়ে ইশারা করে দেখালেন কাউকে। পরের বলে ছক্কা মারলেন আরেকটি। ব্যক্তিগত এই লড়াইয়ে যেমন দাপটে জিতলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, তেমনি তার দলও যেন স্রেফ তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিল পাকিস্তানকে।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দুবাইয়ে যুব এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে টানা দ্বিতীয়বার এসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৩৭ ওভার ব্যাট করে ১১৬ রানে সব উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। রান তাড়ায় নেমে ২২ ওভার ১ বল খেলেই জয় পায় বাংলাদেশের যুবারা। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ আরেক সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারানো ভারতের যুবারা।
পাকিস্তানি যুবাদের লক্ষ্য তাড়ায় টাইগারদের শুরুটা ছিল খুবই ধীরগতির। অবশ্য পাকিস্তানি বোলারদের বোলিং তোপও ছিল দেখার মতো। ফলে প্রথম ৪ ওভারে বাংলাদেশ মাত্র ৪ রান তোলে। ষষ্ঠ ওভারে দলীয় ২০ রানে আউট হয়ে যান ওপেনার কালাম সিদ্দিকী অ্যালেন। ১৪ বল খেলেও তিনি রানের খাতা খুলতে পারেননি। আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরার ১৭ রানে বিদায় নেন দলীয় ২৪ রানে।
তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক তামিম ও শিহাব জেমস মিলে গড়েন ৫৭ রানের জুটি। সেই জুটিতেই মূলত জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় ইয়াং টাইগার্সের। তবে জয় থেকে ৩২ রান দূরে থাকাবস্থায় বিলাসী শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন জেমস। ৩৬ বলে তিনি ২৬ রান করেছেন। একপ্রান্ত আগলে রাখা বাংলাদেশ অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম বাকি কাজ সেরেছেন অনায়াসে। ৪২ বলে ৭টি চার ও ৩ ছক্কায় তিনি ৬১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
পাকিস্তানের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন আলি রাজা, আবদুল সুবহান ও নাভিদ আহমেদ খান। শুরুতে তারা ইকোনমিক্যাল থাকলেও, তাদের ওপর মূল চাপটা ব্যাটাররাই তুলে দিয়েছেন বড় পুঁজি তুলতে ব্যর্থ হওয়ায়।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি পাকিস্তান দল। ইনিংসের প্রথম ওভারেই উসমান খানকে সাজঘরে ফেরেন মারুফ মৃধা। এক ওভার পরে আরেক ওপেনার শাগজাইদকে আউট করে নিজের দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন এই টাইগার পেসার। দুজনেই শূন্য রাতে আউট হন।
তিনে ব্যাট করতে নেমে সাদ বেগকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন মোহাম্মাদ রেজাউল্লাহ। কিন্তু ইনিংস বড় করতে করতে পারেননি দুইজনের কেউই। ৪১ বলে ১৮ রান করে সাদ বেগ আউট হলে, ২ রানে করে রান আউট হন নাভেদ আহমেদ খান।
এরপর ৬৫ বলে ২৮ রান করে রিজাউল্লাহ আউট হলে দলীয় ৭৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে পাকিস্তান। সপ্তম উইকেটে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন ফারহান ইউসুফ। তবে হারুন আর্শাদ ১০ রানে আউট হলে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি ইউসুফ। ৩২ রান করেন তিনি।
শেষ দিকে ওমার জাইব (১), আব্দুল সুবহান (০) এবং আলী রিয়াজ শূন্য রানে আউট হলে ১৩ ওভার হাতে থাকতেই ১১৬ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন ইকবাল হোসেন। এ ছাড়াও মারুফ মৃধা দুটি, আল ফাহাদ এবং দেবাশীষ দেবা নেন একটি উইকেট।