চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে ইসকন সমর্থকদের হামলায় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে চট্টগ্রামের এক সরকারি আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল ৫টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। হামলার ঘটনায় আহত আরও ৭-৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ এনামুল হক।
তিনি বলেন, সাইফুল ইসলাম ২০১৮ সালে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন। পরে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধন পান। সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।
নিহত সাইফুল ইসলাম আলিফ চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম জালাল উদ্দিন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) হুমায়ুন করীর বলেন, বিক্ষোভকারীদের হামলায় এক আইনজীবী নিহতের খবর পেয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সঙ্গে ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কায়েছ উদ্দিন দিদার বলেন, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম রঙ্গন কমিউনিটি সেন্টারের গলির মুখে ছিলেন। সেখান থেকে চিন্ময় সমর্থকরা তাকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
সিনিয়র আইনজীবী নুরুল মোস্তফা সোহেল বলেন, মসজিদে হামলার খবর পেয়ে আলিফ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। সেখান থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এর আগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন না মঞ্জুর করায় তার বহন করা প্রিজনভ্যানটি আদালত প্রাঙ্গণে আড়াই ঘণ্টা আটকে রাখেন তার সমর্থকরা। এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের সমর্থকরা বিভিন্ন স্থাপনা ও আইনজীবীদের গাড়িতে হামলা শুরু করে।
ছত্রভঙ্গ হয়ে ইসকন সদস্যরা আদালতের কেন্দ্রীয় মসজিদের জানালার কাচ ভাঙচুরের অভিযোগ করেন মুসল্লিরা। এছাড়া আইনজীবীদের পাঁচটি প্রাইভেটকার ও ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। পরে নগরের লালদিঘী ও কোতোয়ালি এলাকায় তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মুসল্লিদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, রাস্তা ফাঁকা করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ছুড়লে ইসকন কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন ভবনে ও গাড়িতে হামলা শুরু করে।