আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের রস আল-নাবা এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় ইরানপন্থি হিজবুল্লাহর গণমাধ্যম শাখার প্রধান মোহাম্মদ আফিফ নিহত হয়েছেন।
রোববার (১৭ নভেম্বর) লেবাননের দুটি গোয়েন্দা সূত্র এই দাবি করেছে। তবে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এ খবর নিশ্চিত করা হয়নি।
রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। হামলার আগে ওই এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্রের অ্যাকাউন্ট থেকে কোনও সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়নি।
হামলায় রস আল-নাবা এলাকার একটি ভবনকে নিশানা করা হয়। এই এলাকায় বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানিয়েছে, হামলার লক্ষ্যবস্তু ভবনটিতে বাথ পার্টির অফিস ছিল। লেবাননে বাথ পার্টির প্রধান আলি হিজাজি লেবানিজ ব্রডকাস্টার আল-জাদিদকে জানান, আফিফ ওই ভবনে অবস্থান করছিলেন।
পরবর্তী সময়ে ওই সম্প্রচারমাধ্যমও আফিফের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। তারা একটি ধসে পড়া ভবনের দৃশ্য দেখিয়েছে যেখানে উদ্ধারকর্মীরা কাজ করছিলেন।
মোহাম্মদ আফিফ হিজবুল্লাহর সাবেক মহাসচিব হাসান নাসরাল্লাহর দীর্ঘদিনের মিডিয়া উপদেষ্টা ছিলেন। নাসরাল্লাহ ২৭ সেপ্টেম্বর বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন। আফিফ কয়েক বছর ধরে হিজবুল্লাহর আল-মানার টেলিভিশন চ্যানেলের ব্যবস্থাপনা দেখভাল করেন এবং পরে সংগঠনটির মিডিয়া বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব নেন।
২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর ফিলিস্তিনি মিত্র হামাসের দক্ষিণ ইসরায়েলে আক্রমণের পরদিন থেকেই হিজবুল্লাহ ইসরায়েলি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রকেট হামলা শুরু করে। এরপর থেকে উভয়পক্ষের মধ্যে প্রায় এক বছর ধরে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে।
সম্প্রতি সেপ্টেম্বরে ইসরায়েল লেবাননে তাদের সামরিক অভিযান ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করে। দক্ষিণ লেবানন, পূর্বাঞ্চল ও বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে বোমা বর্ষণের পাশাপাশি সীমান্তে স্থল অভিযান চালানো হয়।
আফিফ সাংবাদিকদের জন্য বৈরুতের ধ্বংসস্তূপে কয়েকটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন। ১১ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, ইসরায়েলি বাহিনী লেবাননের কোনও এলাকা দখল করতে সক্ষম হয়নি এবং হিজবুল্লাহ দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ চালানোর মতো অস্ত্র ও সরঞ্জাম মজুদ করেছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, হামলায় একজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন শোনা যায় এবং গুলির শব্দে এলাকাটি নিরাপত্তারক্ষীরা সিল করে দেয়। জনতাকে কাছে আসা থেকে বিরত রাখতে এসব গুলি ছোড়া হয়।