Dhaka মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আ. লীগের নেতাকর্মীরা মিথ্যার প্রতিযোগিতা করেছে : শফিকুর রহমান

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি : 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিথ্যার প্রতিযোগিতা করেছে। তারা মানুষ খুন, গুম, হত্যা করেছে। তারা আয়না ঘর তৈরি করেছিল। তারা দাম্ভিকতা দেখিয়েছে। শেখ হাসিনার সময় বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে, অন্যায় করা হয়েছে ফরমায়েশি রায় প্রদান করা হয়েছে।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকাল ১১টায় নীলফামারী বড় মাঠে নীলফামারী জেলা জামায়েতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ক্ষমতা চলে গেলেও দেশ থেকে পালাবেন না। ক্ষমতা যেতেই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, একজন শাসক প্রায় সাড়ে ১৫ বছর ধরে দেশের শাসনভার ধারণ করেছেন। যখন তিনি কিছু বলতেন, তখন সাধারণ মানুষ বলতো, ‘ও হাসিনা, আমরা আর হাসি না!’ তিনি মানুষের সঙ্গে খেলা করতেন, তাদের উত্তেজিত করে হাসানোর চেষ্টা করতেন। তবে তার শাসনামলে যে কিছুই হয়নি, তা আজ সকলেই জানে। এই শাসকরা কেবল জাতিকে ধোঁকা দিয়েছে, তার চেয়েও বড় কথা, তারা মানুষকে নির্যাতন করেছে, গুম করেছে, হাজারো মায়ের বুক খালি করেছে। হাজার হাজার মানুষের বাড়ি-ঘর তছনছ করেছে এবং গণহত্যার মতো ভয়াবহ অপরাধ ঘটিয়েছে। তারা বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে। এমনকি জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর অফিস সিলগালা করে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই উত্তরাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল। জামায়াতে ইসলামী মনে করে, এই অঞ্চলের মানুষের ঋণ পরিশোধ করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা কোনোদিনও উত্তরবঙ্গের মানুষের উন্নয়নকে উপেক্ষা করবো না, আমরা তাদের পাশে আছি।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গত ১৫ বছর জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর নির্মম অচ্যাচার নির্যাতন করা হয়েছে। দলীয় কার্যালয়গুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়। বাড়িতেও থাকতে পারেনি নেতাকর্মীরা। বাড়িতে বসলেও জঙ্গি হিসেবে আখ্যা দিয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে। শুধু জামায়াত নয়, বিরোধী মতের সবার ওেপর পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে। অন্যায়ের বিচার হতে হবে, না হলে অন্যায়কারীরা উৎসাহ পাবে অপরাধ কমবে না। শেখ হাসিনা যেমন ছিলেন তার উজির নাজিররাও একই রকমের ছিলেন। কে কত মিথ্যা বলতে পারবে সেই প্রতিযোগিতা ছিল গত ১৫ বছরে।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেই ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ঝাল মিটিয়েছিল দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীর ওপর। পিলখানার দরবার হলে ৫৭ জন সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে। রাতের অন্ধকারে খুনিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল হাসিনার সরকার। শেখ হাসিনার নিদের্শেই এটি করা হয়। গত ১৫ বছরে যত অন্যায় অত্যাচার জুলুম করা হয়েছে তা ছিল শেখ হাসিনার মদদেই।

দলীয় নেতাকর্মীদের আইন হাতে তুলে না নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, জামায়াত কোনো অন্যায় করবে না, অত্যাচার করবে না। মানুষের ক্ষতি করবে না। যেখানে অন্যায় দেখবেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে খবর দেবেন।

নীলফামারী জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবুল হাসনাত মো. আবদুল হালিম।

সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, সাবেক জেলা আমির মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ ও জেলা সেক্রেটারি আন্তাজুল ইসলাম, নায়েবে আমির অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

আবহাওয়া

২৪ ঘণ্টায় আ.লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ১১ নেতাকর্মী গ্রেফতার

আ. লীগের নেতাকর্মীরা মিথ্যার প্রতিযোগিতা করেছে : শফিকুর রহমান

প্রকাশের সময় : ০৫:০৭:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি : 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিথ্যার প্রতিযোগিতা করেছে। তারা মানুষ খুন, গুম, হত্যা করেছে। তারা আয়না ঘর তৈরি করেছিল। তারা দাম্ভিকতা দেখিয়েছে। শেখ হাসিনার সময় বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে, অন্যায় করা হয়েছে ফরমায়েশি রায় প্রদান করা হয়েছে।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকাল ১১টায় নীলফামারী বড় মাঠে নীলফামারী জেলা জামায়েতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ক্ষমতা চলে গেলেও দেশ থেকে পালাবেন না। ক্ষমতা যেতেই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, একজন শাসক প্রায় সাড়ে ১৫ বছর ধরে দেশের শাসনভার ধারণ করেছেন। যখন তিনি কিছু বলতেন, তখন সাধারণ মানুষ বলতো, ‘ও হাসিনা, আমরা আর হাসি না!’ তিনি মানুষের সঙ্গে খেলা করতেন, তাদের উত্তেজিত করে হাসানোর চেষ্টা করতেন। তবে তার শাসনামলে যে কিছুই হয়নি, তা আজ সকলেই জানে। এই শাসকরা কেবল জাতিকে ধোঁকা দিয়েছে, তার চেয়েও বড় কথা, তারা মানুষকে নির্যাতন করেছে, গুম করেছে, হাজারো মায়ের বুক খালি করেছে। হাজার হাজার মানুষের বাড়ি-ঘর তছনছ করেছে এবং গণহত্যার মতো ভয়াবহ অপরাধ ঘটিয়েছে। তারা বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে। এমনকি জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর অফিস সিলগালা করে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই উত্তরাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল। জামায়াতে ইসলামী মনে করে, এই অঞ্চলের মানুষের ঋণ পরিশোধ করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা কোনোদিনও উত্তরবঙ্গের মানুষের উন্নয়নকে উপেক্ষা করবো না, আমরা তাদের পাশে আছি।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গত ১৫ বছর জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর নির্মম অচ্যাচার নির্যাতন করা হয়েছে। দলীয় কার্যালয়গুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়। বাড়িতেও থাকতে পারেনি নেতাকর্মীরা। বাড়িতে বসলেও জঙ্গি হিসেবে আখ্যা দিয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে। শুধু জামায়াত নয়, বিরোধী মতের সবার ওেপর পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে। অন্যায়ের বিচার হতে হবে, না হলে অন্যায়কারীরা উৎসাহ পাবে অপরাধ কমবে না। শেখ হাসিনা যেমন ছিলেন তার উজির নাজিররাও একই রকমের ছিলেন। কে কত মিথ্যা বলতে পারবে সেই প্রতিযোগিতা ছিল গত ১৫ বছরে।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেই ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ঝাল মিটিয়েছিল দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীর ওপর। পিলখানার দরবার হলে ৫৭ জন সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে। রাতের অন্ধকারে খুনিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল হাসিনার সরকার। শেখ হাসিনার নিদের্শেই এটি করা হয়। গত ১৫ বছরে যত অন্যায় অত্যাচার জুলুম করা হয়েছে তা ছিল শেখ হাসিনার মদদেই।

দলীয় নেতাকর্মীদের আইন হাতে তুলে না নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, জামায়াত কোনো অন্যায় করবে না, অত্যাচার করবে না। মানুষের ক্ষতি করবে না। যেখানে অন্যায় দেখবেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে খবর দেবেন।

নীলফামারী জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবুল হাসনাত মো. আবদুল হালিম।

সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, সাবেক জেলা আমির মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ ও জেলা সেক্রেটারি আন্তাজুল ইসলাম, নায়েবে আমির অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।