আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফেরানোর দাবি নিয়ে বিধানসভায় অধিবেশন চলাকালে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছেন ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রীতিমতো হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দুই পক্ষের বিধায়কেরা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনুচ্ছেদ ৩৭০ নিয়ে বিধানসভায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ সময় ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের সদস্যরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে নিরাপত্তারক্ষীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, একটি পোস্টারকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে অধিবেশন শুরু হলে বারামুলার সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার রশিদের ভাই তথা আওয়ামি ইত্তেহাদ পার্টির বিধায়ক খুরশিদ আহমেদ শেখ অনুচ্ছেদ ৩৭০-এর সমর্থনে একটি পোস্টার তুলে ধরেন। তার এ পোস্টারে বিরোধী দলনেতা আপত্তি জানান। এরপর তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। ফলে বিরোধী ও ক্ষমতাসীন দলের সদস্যদের মধ্যে প্রথমে ধস্তাধস্তি ও পরে হাতাহাতি লেগে যায়।
এ ঘটনায় বিজেপির অভিযোগ, ওই বিধায়কের পাশে জম্মু ও কাশ্মীরের শাসকদল ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) এবং কংগ্রেস দাঁড়িয়েছে। এ সময় সেখানকার বিজেপি সভাপতি রবীন্দ্র রায়না জোটকে আক্রমণ করে বলেন, ওরা পাকিস্তানের হাত শক্ত করছে। জঙ্গিদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।
সাজ্জাদ লোন পরে সাংবাদিকদের বলেছেন, ন্যাশনাল কনফারেন্স বিধায়করা খুরশিদকে বাঁচাতে আসেননি। আমরা তার সঙ্গে নির্বাচনে লড়েছি। কিন্তু কাশ্মীরি হিসেবে আমি যখন দেখেছি, তিনি আক্রান্ত হয়েছেন, তখন তাকে বাঁচাতে গেছি। আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি।
বিরোধী নেতা সুশীল শর্মা সাংবাদিকদের বলেছেন, ওই প্রস্তাব যতক্ষণ প্রত্যাহার না করা হচ্ছে, ততক্ষণ তারা বিধানসভা চালাতে দেবেন না। বিজেপি বিধানসভার বাইরেও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাবে।
বিজেপি-র অভিযোগ, স্পিকার ন্য়াশনাল কনফারেন্স নেতার মতো ব্যবহার করছেন। তিনি স্পিকারের মতো নিরপেক্ষ অবস্থান নিচ্ছেন না।
দিল্লিতে সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেসের সমালোচনা করে বলেছেন, তারা জম্মু ও কাশ্মীরে সংবিধানের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে দিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা বলেছেন, পিডিপি প্রথমে একটা প্রস্তাব এনেছিল। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য ঠিক থাকলে তারা নিশ্চয়ই ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে আলোচনা করতো।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষ ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্ত সমর্থন করে না। বুধবার ন্যাশনাল কনফারেন্সের আনা প্রস্তাব ধ্বনিভোটে গৃহীত হয়।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ছয় বছর পর গত সোমবার জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় অধিবেশন বসে। প্রথম দিনের অধিবেশনে অনুচ্ছেদ বাতিল নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। মেহবুবা মুফতির দল পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) বিধায়ক ওয়াহিদ পাররা অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পেশ করেন। এরপরই বিজেপির বিধায়করা হট্টগোল করেন।