Dhaka মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বান্দরবানে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি : 

দীর্ঘ একমাস বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) থেকে বান্দরবানে পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বান্দরবান জেলা সদর, আলীকদম, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি চারটি উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত দিয়েছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। এছাড়া অবশিষ্ট তিন উপজেলা- রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিতে এখনো নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের কাজ চলমান থাকায় আপাতত পর্যটকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকছে। তবে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে এসব উপজেলাতেও পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

বুধবার (৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দীন এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।

এ সময় তিনি পর্যটকদের বান্দরবান ভ্রমণের জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, জেলার পর্যটন স্পটগুলো আগের চেয়ে অনেক উন্নত করা হয়েছে। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সংযোজন করা হয়েছে আধুনিক রাইড। এছাড়াও অনেকগুলো পর্যটন স্পটে পর্যটকদের সুবিধায় নতুনভাবে সংস্কারের কাজও চলছে। পর্যটকরা বান্দরবানে এলে আগের চেয়ে ভিন্ন রূপ দেখতে পাবেন।

বন্ধ থাকা পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে তিনটি উপজেলায় কেএনএফ প্রসঙ্গে জনগণের নিরাপত্তা বিবেচনায় সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের পর্যবেক্ষক টিম তা নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে। জনসাধারণের নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনো আপস করা যাবে না। যখন আমরা সিদ্ধান্ত পাবো তখন অবশ্যই জানিয়ে দেওয়া হবে।

এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে জেলা পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ কাওছার বলেন, নিরাপত্তা বিষয়ে ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনলাইন প্লাটফর্মে মিটিং করা হয়েছে। সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের সহযোগিতা করবেন। আশা করছি পর্যটকরা নির্বিঘ্নে বান্দরবানের উন্মুক্ত পর্যটন স্পটগুলোতে ভ্রমণ করতে পারবেন।

এদিকে দীর্ঘদিন পর পর্যটকদের জন্য বান্দরবান ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্টে পর্যটকদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা রাখছেন ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে বান্দরবান রেসিডেন্সিয়াল হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন পর পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়ায় আমরা আনন্দিত। বান্দরবান ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় পর্যটকদের জন্য আবাসিক এবং যাতায়াতের ওপর বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হবে, যা আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানাবো। এই অফার থাকবে চলতি মাসের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।

এদিকে বেসরকারি হোটেল, মোটেল, রিসোর্টের ছাড়ের সিদ্ধান্তের সঙ্গে মিল রেখে জেলা প্রশাসনের পরিচালিত মোটেলগুলোতেও ছাড়ের ব্যবস্থা রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন।

প্রেসব্রিফিংয়ের সময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ কাওছার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম মনজুরুল হক, র‌্যাব-১৫ এর বান্দরবানের কোম্পানি ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ, বান্দরবান সেনা রিজিয়নের জিএসও-৩ আব্দুল মান্নান, প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, বান্দরবান রেসিডেন্সিয়াল হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

এর আগে, গত ৮ অক্টোবর থেকে নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি — তিন পার্বত্য জেলা ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করে প্রশাসন। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় বান্দরবানের সব পর্যটন কেন্দ্র। বাতিল হয়ে যায় হোটেল মোটেলের বুকিং।

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফের তৎপরতার কারণে বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় দফায় দফায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রশাসন। সবশেষ রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এসব উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণ উন্মুক্ত ছিল। গত ৮ অক্টোবর থেকে নিরাপত্তার কারণে এগুলোতেও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

আবহাওয়া

যুক্তরাষ্ট্রে শাকিব-বুবলী ইস্যুতে অবশেষে সরব অপু বিশ্বাস

বান্দরবানে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৩:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি : 

দীর্ঘ একমাস বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) থেকে বান্দরবানে পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বান্দরবান জেলা সদর, আলীকদম, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি চারটি উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত দিয়েছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। এছাড়া অবশিষ্ট তিন উপজেলা- রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিতে এখনো নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের কাজ চলমান থাকায় আপাতত পর্যটকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকছে। তবে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে এসব উপজেলাতেও পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

বুধবার (৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দীন এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।

এ সময় তিনি পর্যটকদের বান্দরবান ভ্রমণের জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, জেলার পর্যটন স্পটগুলো আগের চেয়ে অনেক উন্নত করা হয়েছে। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সংযোজন করা হয়েছে আধুনিক রাইড। এছাড়াও অনেকগুলো পর্যটন স্পটে পর্যটকদের সুবিধায় নতুনভাবে সংস্কারের কাজও চলছে। পর্যটকরা বান্দরবানে এলে আগের চেয়ে ভিন্ন রূপ দেখতে পাবেন।

বন্ধ থাকা পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে তিনটি উপজেলায় কেএনএফ প্রসঙ্গে জনগণের নিরাপত্তা বিবেচনায় সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের পর্যবেক্ষক টিম তা নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে। জনসাধারণের নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনো আপস করা যাবে না। যখন আমরা সিদ্ধান্ত পাবো তখন অবশ্যই জানিয়ে দেওয়া হবে।

এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে জেলা পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ কাওছার বলেন, নিরাপত্তা বিষয়ে ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনলাইন প্লাটফর্মে মিটিং করা হয়েছে। সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের সহযোগিতা করবেন। আশা করছি পর্যটকরা নির্বিঘ্নে বান্দরবানের উন্মুক্ত পর্যটন স্পটগুলোতে ভ্রমণ করতে পারবেন।

এদিকে দীর্ঘদিন পর পর্যটকদের জন্য বান্দরবান ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্টে পর্যটকদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা রাখছেন ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে বান্দরবান রেসিডেন্সিয়াল হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন পর পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়ায় আমরা আনন্দিত। বান্দরবান ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় পর্যটকদের জন্য আবাসিক এবং যাতায়াতের ওপর বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হবে, যা আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানাবো। এই অফার থাকবে চলতি মাসের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।

এদিকে বেসরকারি হোটেল, মোটেল, রিসোর্টের ছাড়ের সিদ্ধান্তের সঙ্গে মিল রেখে জেলা প্রশাসনের পরিচালিত মোটেলগুলোতেও ছাড়ের ব্যবস্থা রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন।

প্রেসব্রিফিংয়ের সময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ কাওছার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম মনজুরুল হক, র‌্যাব-১৫ এর বান্দরবানের কোম্পানি ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ, বান্দরবান সেনা রিজিয়নের জিএসও-৩ আব্দুল মান্নান, প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, বান্দরবান রেসিডেন্সিয়াল হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

এর আগে, গত ৮ অক্টোবর থেকে নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি — তিন পার্বত্য জেলা ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করে প্রশাসন। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় বান্দরবানের সব পর্যটন কেন্দ্র। বাতিল হয়ে যায় হোটেল মোটেলের বুকিং।

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফের তৎপরতার কারণে বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় দফায় দফায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রশাসন। সবশেষ রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এসব উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণ উন্মুক্ত ছিল। গত ৮ অক্টোবর থেকে নিরাপত্তার কারণে এগুলোতেও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।