সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার বিউটি বেগম। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর তাকে এ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতের আদেশ যথাযথভাবে পালন না করায় নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পাঁচ কর্মকর্তা। এর মধ্যে সাবেক মহাপরিচালক মো. আবু হেনা মোস্তফা কামালও রয়েছেন।
আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন বিষয়ে সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) সর্বোচ্চ আদালতে হাজির হয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, গত ১০ ডিসেম্বর তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়োগ ২০১৭ সালের ৩ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে বলেও আদালতকে জানানো হয়েছে। এর ফলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে বিউটি বেগমের দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের অবসান ঘটল।
শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ভার্চুয়াল আপিল বিভাগ আদালত অবমাননার আবেদন নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন।
আপিল বিভাগে সোমবার বিউটি বেগমের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শফিক মাহমুদ।
২০০৮ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হন বিউটি বেগম। তবে তিনি নিয়োগবঞ্চিত হন। দ্বিতীয় স্থান অধিকারী নাজমা সুলতানাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ নিয়ে নিয়োগবঞ্চিত বিউটি বেগম গাইবান্ধার সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। মামলার শুনানি নিয়ে আদালত বিউটি বেগমকে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন : সিনহাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ওসি প্রদীপ
পরে উচ্চ আদালতে আপিল করার পর বিচারিক আদালতের ওই আদেশ হাইকোর্টও বহাল রাখেন। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন নাজমা সুলতানা।
এর বিরুদ্ধে আপিল শুনানি করে সর্বোচ্চ আদালতও ২০১৭ সালের ৩ আগাস্ট ১৫ দিনের মধ্যে বিউটি বেগমকে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেন। তারপরেও নিয়োগ না পেয়ে ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন বিউটি বেগম।
বিউটি বেগমের নিয়োগ বিষয়ে আদালতের রায় বাস্তবায়ন না হওয়ার প্রেক্ষাপটে ৭ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ ব্যাখ্যা জানাতে সাবেক মহাপরিচালক মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রমজান আলী, গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম, গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুমুল ইসলামকে ১৪ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।
এ অনুসারে সোমবার ৫ কর্মকর্তা আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম আদালত উপস্থিত ছিলেন।