Dhaka বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমাদের হাতে তো জাদুর চেরাগ নেই : ফাওজুল কবির খান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

টিকিট হয়রানিসহ রেলের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান বলেছেন, তারা সমস্যার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাদের সময় দিতে হবে, তাদের হাতে তো আর জাদুর চেরাগ নেই।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর রেল ভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ের রুট রেশনালাইজেশন এবং ই-টিকিটিং ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, অনলাইন টিকিটিং সিস্টেম সহজে টিকিট পাওয়া যায় না, কিন্তু কালোবাজারে পাওয়া যায়। এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। টিকিট কাটার সময় যাত্রীরা যাতে ভিন্ন সময় ও অন্যান্য স্টেশনের চিত্রও দেখতে পায়, সেটার ব্যবস্থা করতে সহজকে বলেছি।

তিনি বলেন, রেলের কর্মচারিসহ যারা কালোবাজারি করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো। এটা চলতে দেয়া যায় না। এটা আগে চলেছে, এগুলো বন্ধ করতে হবে। টিকিট নিয়ে হয়রানি বন্ধ হবে।

রেলওয়ের অনলাইন টিকিট পদ্ধতির সহযোগী ‘সহজ’ কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, যাত্রী যেন এখন থেকে এটা দেখতে পান কখন, কোথায় কোন স্টেশন থেকে টিকিট আছে। সহজ বলেছে, আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে এটা ঠিক হবে। না হলে আপনারা অভিযোগ করবেন।

ট্রেন থেকে মৌখিক ভাবে টিকিট বন্ধ করা রাখা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রেলে অনেকে কর্মকর্তা আছেন। এখানে কাজ করেন। কিন্তু এটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি না। এটা জনগনের সম্পত্তি। রেলের সচিব, মন্ত্রীর জরুরী কাজ আছে বলে অন্যদের নাই এমনতো না।

আমরা দেশটাকে সাধারণ মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই জানিয়ে তিনি বলেন, মৌখিক বা টেলিফোনে টিকিট বিতরণ বন্ধ হয়ে যাবে এখন থেকে। আবার বিভিন্ন স্টেশন থেকেও টিকিট বরাদ্দ আছে। এখন সেটা এক স্টেশনে বিক্রি না হলে অন্য স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে। সেটাও সহজকে বলা হয়েছে। আমরা এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

রেলে অনেক কর্মকর্তা আছেন যারা মৌখিক বা টেলিফোনে টিকিট নিয়ে থাকেন। কিন্তু আমরা দেশটাকে সাধারণ মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই। এটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি না। এখন থেকে মৌখিক বা টেলিফোনে টিকিট বিতরণ বন্ধ হয়ে যাবে।

ড. ফাওজুল কবির খান বলেন, আজকে একটা প্রেজেন্টেশন হয়েছে। সেখান আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। রেলের টিকিট পদ্ধতি নিয়ে একটা ডায়াগনস্টিক হয়েছে।

প্রেজেন্টেশনের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, তাদের প্রেজেন্টেশনে দেখা গেলো, কমলাপুর থেকে টিকিট চাইলেন সেখানে নেই। কিন্তু তেজগাঁও থেকে আছে। আবার ৭ টার ট্রেনে টিকিট নাই কিন্তু ১০ টার ট্রেনে আছে। তবে সেটির কি অবস্থা তা জানা যাচ্ছে না।

যারা কালোবাজারি করেন তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা রেলের লোক তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নিব। আমরা সমস্যার গোড়ায় যেতে চাই। সবাই বলে এই সরকার কিছু করে না। কিন্তু এটা সময় লাগবে। আমরা গত একমাসে সমস্যার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের যথেষ্ট লোকমোটিভ নেই, কোচ নাই। সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। রেলের রুট রেশনালাইজেশন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যেখানে যাত্রী নাই সেখানে ট্রেন যাচ্ছে। আবার যেখানে যাত্রী আছে সেখানে ট্রেন নাই। প্রবাসীরা যেসব জায়গা যায় যেমন ঢাকা-সিলেট, ঢাকা চট্টগ্রাম এসব রুটে আলাদা ব্যবস্থা নিবো।

তিনি বলেন, রেলের প্রকল্পগুলো নিয়ে রিভিউ চলছে। অনেক প্রকল্প আগে হয়েছে যেগুলো কম গুরুত্বপূর্ণ। সামনে রেলের প্রকল্প নিয়ে আমরা আরও বেশি সতর্ক আছে। আমরা সামনে বসবো। কোন প্রকল্প কেন বাদ দেওয়া হয়েছে সেটা আমরা জানাবো।

ঠিকাদারের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আর আগের মত পরিবেশ নাই। যে কেউ বিড করতে পারে। সেই সুযোগ তৈরি করতে হবে। এখন গিয়ে দেখি দুই তিনজন ঘুরেফিরে কাজ পাচ্ছে। এটা আর হবে না। সবাই কাজ পাবে। রেল ও সড়ককে সেই সুযোগ তৈরি করতে হবে।

রেল রুট রেশনালাইজেশনের জন্য কাজ শুরু করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, অনেক জায়গায় যাত্রী বেশি থাকলেও স্টেশন নাই, আবার যাত্রী তেমন না থাকলেও স্টেশন আছে। সেক্ষেত্রে আমরা রেল রুট রেশনালাইজেশনের জন্য আমরা কাজ করা শুরু করব। এটার জন্য আমাদের সময় দিতে হবে, আমাদের হাতে তো আর জাদুর চেরাগ নেই। প্রত্যেক সমস্যার গভীরে যেতে চাচ্ছি।

বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রকল্প রিভিউ করছি। অনেক প্রকল্প হয়ে গেছে, আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে সেগুলোর ব্যবহার বাড়ানো যায়।

সামনের প্রকল্প আমরা যাত্রী স্বার্থ বিবেচনা করে আনবো। কারো পছন্দের জন্য আর রেললাইন যাবে না, রেলস্টেশন হবে না। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প পুনর্বিবেচনায় কাজ করবো।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আপস করলে খালেদা জিয়া অনেক আগেই ক্ষমতায় বসতে পারতেন : সেলিমা রহমান

আমাদের হাতে তো জাদুর চেরাগ নেই : ফাওজুল কবির খান

প্রকাশের সময় : ০৩:১৮:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

টিকিট হয়রানিসহ রেলের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান বলেছেন, তারা সমস্যার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাদের সময় দিতে হবে, তাদের হাতে তো আর জাদুর চেরাগ নেই।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর রেল ভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ের রুট রেশনালাইজেশন এবং ই-টিকিটিং ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, অনলাইন টিকিটিং সিস্টেম সহজে টিকিট পাওয়া যায় না, কিন্তু কালোবাজারে পাওয়া যায়। এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। টিকিট কাটার সময় যাত্রীরা যাতে ভিন্ন সময় ও অন্যান্য স্টেশনের চিত্রও দেখতে পায়, সেটার ব্যবস্থা করতে সহজকে বলেছি।

তিনি বলেন, রেলের কর্মচারিসহ যারা কালোবাজারি করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো। এটা চলতে দেয়া যায় না। এটা আগে চলেছে, এগুলো বন্ধ করতে হবে। টিকিট নিয়ে হয়রানি বন্ধ হবে।

রেলওয়ের অনলাইন টিকিট পদ্ধতির সহযোগী ‘সহজ’ কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, যাত্রী যেন এখন থেকে এটা দেখতে পান কখন, কোথায় কোন স্টেশন থেকে টিকিট আছে। সহজ বলেছে, আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে এটা ঠিক হবে। না হলে আপনারা অভিযোগ করবেন।

ট্রেন থেকে মৌখিক ভাবে টিকিট বন্ধ করা রাখা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রেলে অনেকে কর্মকর্তা আছেন। এখানে কাজ করেন। কিন্তু এটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি না। এটা জনগনের সম্পত্তি। রেলের সচিব, মন্ত্রীর জরুরী কাজ আছে বলে অন্যদের নাই এমনতো না।

আমরা দেশটাকে সাধারণ মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই জানিয়ে তিনি বলেন, মৌখিক বা টেলিফোনে টিকিট বিতরণ বন্ধ হয়ে যাবে এখন থেকে। আবার বিভিন্ন স্টেশন থেকেও টিকিট বরাদ্দ আছে। এখন সেটা এক স্টেশনে বিক্রি না হলে অন্য স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে। সেটাও সহজকে বলা হয়েছে। আমরা এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

রেলে অনেক কর্মকর্তা আছেন যারা মৌখিক বা টেলিফোনে টিকিট নিয়ে থাকেন। কিন্তু আমরা দেশটাকে সাধারণ মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই। এটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি না। এখন থেকে মৌখিক বা টেলিফোনে টিকিট বিতরণ বন্ধ হয়ে যাবে।

ড. ফাওজুল কবির খান বলেন, আজকে একটা প্রেজেন্টেশন হয়েছে। সেখান আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। রেলের টিকিট পদ্ধতি নিয়ে একটা ডায়াগনস্টিক হয়েছে।

প্রেজেন্টেশনের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, তাদের প্রেজেন্টেশনে দেখা গেলো, কমলাপুর থেকে টিকিট চাইলেন সেখানে নেই। কিন্তু তেজগাঁও থেকে আছে। আবার ৭ টার ট্রেনে টিকিট নাই কিন্তু ১০ টার ট্রেনে আছে। তবে সেটির কি অবস্থা তা জানা যাচ্ছে না।

যারা কালোবাজারি করেন তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা রেলের লোক তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নিব। আমরা সমস্যার গোড়ায় যেতে চাই। সবাই বলে এই সরকার কিছু করে না। কিন্তু এটা সময় লাগবে। আমরা গত একমাসে সমস্যার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের যথেষ্ট লোকমোটিভ নেই, কোচ নাই। সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। রেলের রুট রেশনালাইজেশন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যেখানে যাত্রী নাই সেখানে ট্রেন যাচ্ছে। আবার যেখানে যাত্রী আছে সেখানে ট্রেন নাই। প্রবাসীরা যেসব জায়গা যায় যেমন ঢাকা-সিলেট, ঢাকা চট্টগ্রাম এসব রুটে আলাদা ব্যবস্থা নিবো।

তিনি বলেন, রেলের প্রকল্পগুলো নিয়ে রিভিউ চলছে। অনেক প্রকল্প আগে হয়েছে যেগুলো কম গুরুত্বপূর্ণ। সামনে রেলের প্রকল্প নিয়ে আমরা আরও বেশি সতর্ক আছে। আমরা সামনে বসবো। কোন প্রকল্প কেন বাদ দেওয়া হয়েছে সেটা আমরা জানাবো।

ঠিকাদারের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আর আগের মত পরিবেশ নাই। যে কেউ বিড করতে পারে। সেই সুযোগ তৈরি করতে হবে। এখন গিয়ে দেখি দুই তিনজন ঘুরেফিরে কাজ পাচ্ছে। এটা আর হবে না। সবাই কাজ পাবে। রেল ও সড়ককে সেই সুযোগ তৈরি করতে হবে।

রেল রুট রেশনালাইজেশনের জন্য কাজ শুরু করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, অনেক জায়গায় যাত্রী বেশি থাকলেও স্টেশন নাই, আবার যাত্রী তেমন না থাকলেও স্টেশন আছে। সেক্ষেত্রে আমরা রেল রুট রেশনালাইজেশনের জন্য আমরা কাজ করা শুরু করব। এটার জন্য আমাদের সময় দিতে হবে, আমাদের হাতে তো আর জাদুর চেরাগ নেই। প্রত্যেক সমস্যার গভীরে যেতে চাচ্ছি।

বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রকল্প রিভিউ করছি। অনেক প্রকল্প হয়ে গেছে, আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে সেগুলোর ব্যবহার বাড়ানো যায়।

সামনের প্রকল্প আমরা যাত্রী স্বার্থ বিবেচনা করে আনবো। কারো পছন্দের জন্য আর রেললাইন যাবে না, রেলস্টেশন হবে না। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প পুনর্বিবেচনায় কাজ করবো।