আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আল কায়দার প্রতিষ্ঠাতা ও গোষ্ঠীটির সাবেক শীর্ষ নেতা ওসামা বনি লাদেনের ছেলে ওমর বিন লাদেনকে (৪৩) স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ দিয়েছে ফ্রান্সের সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতেইল্যু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রকাশিত এক পোস্টে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ওমর বিন লাদেনকে শিগগিরই ফ্রান্স ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ওমর বিন লাদেন একজন ব্রিটিশ নাগরিকের স্বামী হিসেবে নরম্যান্ডি অঞ্চলের ওরনি এলাকায় থাকতেন। আল–কায়েদা নেতার ছেলে গত বছর সন্ত্রাসবাদের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ফ্রান্স ছাড়ার আদেশ জারি করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ওমর ‘যেন কোনোভাবেই ফ্রান্সে ফিরতে না পারেন’, সেই আদেশে তিনি সই করেছেন। তবে তিনি বিস্তারিত আর কিছু বলেননি। ওমর বিন লাদেন এরই মধ্যে ফ্রান্স ছেড়েছেন কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
ওমরের পেইন্টিং বিক্রি করতে যিনি সাহায্য করতেন সেই প্যাসকেল মার্টিন জানিয়েছেন, ওমর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ইসলামি মতাদর্শের বিরোধিতা করতেন। তিনি তার শিল্পকর্ম থেকে জীবিকা অর্জন করেছিলেন এবং কর প্রদান করতেন। ওমর বর্তমানে কাতারে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন মার্টিন।
ব্রুনো রেতেইল্যু পোস্টে উল্লেখ করেছেন, ২০২৩ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার কিছু মন্তব্য সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে, এসব মন্তব্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পর দেশটির আইনশৃঙ্খলা বিভাগ তদন্ত শুরু করে এবং অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে। এরপরই ওমরকে ফ্রান্স ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়।
৪৩ বছর বয়সী ওমর বিন লাদেনের জন্ম সৌদি আরবে। ১৯ বছর বয়সে বাবা ওসামা বিন লাদেনকে ছেড়ে যান তিনি। ছবি আঁকার জন্য তিনি ২০১৬ সাল থেকে উত্তর ফ্রান্সের নরম্যান্ডি এলাকায় বসবাস শুরু করেন।
ওসামা বিন লাদেনের মোট ২৪ জন সন্তান রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ওমর তাদের মধ্যে একজন। তার মা নাজওয়া ঘানেম সিরিয়ার নাগরিক এবং ওসামা বিন লাদেনের প্রথম স্ত্রী। নাজওয়া-লাদেন দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় ওমরের জন্ম সৌদি আরবে।
১৯ বছর বয়সে ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে তার। বাবার সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়ার পর কয়েক বছর সুদান এবং তারপর আফগানিস্তানে ছিলেন ওমর। ২০১৬ সালে তিনি ফ্রান্সে বসবাসের অনুমতি পান এবং দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় জেলা নরম্যান্ডির ওর্নি গ্রামে থিতু হন।
ছবি আঁকাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন ওমর। পাশাপাশি অল্পবিস্তর লেখালেখির সঙ্গেও যুক্ত আছেন তিনি। ‘গ্রোয়িং আপ বিন লাদেন’ নামে ২০১৯ সালে একটি বইও প্রকাশ করেছেন।
২০০৭ সালে নিজের চেয়ে ২০ বছরের বড় এক ব্রিটিশ নারীকে বিয়ে করেন ওমর বিন লাদেন। জেন ফেলিক্স ব্রাউন নামের ওই নারীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদন করেছিলেন ওমর। কিন্তু তার সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিলে ব্রিটেনের কর্তৃপক্ষ।