নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশকে সব ধরনের কালা কানুন থেকে মুক্ত করার কথা জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান এবং আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে। একইসঙ্গে সাইবার সুরক্ষা দিতে নতুন আইন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন শিগগিরই বাতিল করা হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব কালাকানুন বাতিল হবে। সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের পূর্বে যে মামলাগুলো ছিলো সেগুলো প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের একটা ধারণা আছে, আইন মন্ত্রণালয় চাইলেই সব মামলা প্রত্যাহার করে নিতে পারে। সেটা সত্যি না। একটা মামলার বিভিন্ন স্তর থাকে। পুলিশ তদন্ত স্তর, চার্জশিটের পরবর্তী স্তর থাকে, আবার সাজা হয়ে গেলে অন্যরকম স্তর থাকে। সব মামলা ইচ্ছে করলেই প্রত্যাহার করা যায় না।
যে মামলায় সাজা হয়ে যায় সেখানে যার সাজা হয়েছে তার আবেদন ছাড়া মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, কোনভাবেই আইন অনুযায়ী এটা সম্ভব না। অনেকেই বলেন, এটা স্বৈরাচার আমলের মামলা, প্রত্যাহার করা হচ্ছে না কেন? যখন সাজা হয়ে যায়, যত ভুয়া মামলায় হউক, ওই ফ্যাসিস্ট সরকারের ফরমায়েশি আদালতে সাজা হয়ে গেলে আপনি আমি যতই বলি না কেন সেটা প্রত্যাহার করা যায় না। যারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তাদের আবেদন করতে হবে।
আমাদের অবশ্যই সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, সেদিকেই আমরা যাবো। এই মুহূর্তে আইনটি পুরোটা বাতিল করবো নাকি কিছু অংশ রাখবো এই বিষয়টি নিয়ে আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে নিবো। পরবর্তীতে নতুন যে আইন হবে এটার মূল উদ্দেশ্য হবে নাগরিককে সুরক্ষা দেয়া। সেখানে নারী ও শিশুদের জন্য স্পেশাল সিকিউরিটি রাখার ব্যবস্থা করবো। নতুন টেকনোলজি বিষয়ে আমি সব কিছু বুঝি না, স্বপনের সঙ্গে কথা বলবো।
একই অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন মানুষের কাছে অনাস্থার জায়গা থেকেই যাবে। তাই আইন সংশোধন বা নাম রাখাকে সমর্থন করা যায় না। আইনের পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু পরিবর্তন বা সংশোধনের মাঝের সময়টুকুতে এটিকে স্থগিত বা কি করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যাতে করে এই আইনের আওতায় আর একটাও মামলা না হয়।
আলোচনায় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ ইকতেদার আহমেদ, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অন্যতম ভুক্তভোগী খাদিজাতুল কোবরা প্রমুখ অংশ নেন।