Dhaka মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাত ম্যাচ পর হারের মুখ দেখলো বার্সেলোনা

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৩:০৩:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১৯৭ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

লা লিগায় টানা ৭ ম্যাচ জিতে উড়ছিল বার্সেলোনা। নতুন কোচ হান্সি ফ্লিকের অধীনে উড়তে থাকা দলটিকে এবার মাটিতে নামালো ওসাসুনা।

ঘরের মাঠ এল সাদার স্টেডিয়ামে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে ওসাসুনা ৪-২ গোলে হারিয়েছে বার্সাকে। ওসাসুনার হয়ে জোড়া গোল করেছেন দলটির ফরোয়ার্ড আন্তে বুদিমির। বাকি দুই গোল উইঙ্গার ব্রায়ান সারাগোসা ও আবেল ব্রেতোনেসের। বার্সার হয়ে দুই গোল শোধ করেন পাউ ভিক্তর ও লামিনে ইয়ামাল।

এটি এবারের লিগে কাতালান জায়ান্টদের প্রথম হার। অন্যদিকে লিগে এক যুগ পর নিজেদের মাঠে বার্সেলোনাকে হারানো ওসাসুনা। তাদের সর্বশেষ জয়টি ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে।

এই হারে বার্সার নতুন কোচ হান্সি ফ্লিকের একটি কীর্তি গড়ার স্বপ্ন ভেঙে গেল। জেরার্দো মার্তিনোর গড়া লা লিগায় বার্সার হয়ে নিজের প্রথম ৮ ম্যাচ জেতার কীর্তিতে ভাগ বসাতে পারতেন জার্মান এই কোচ। কিন্তু তা আর হলো না।

ওসাসুনার বিপক্ষে দারুণ ফর্মে থাকা লামিনে ইয়ামালকে একাদশের বাইরে রাখে বার্সা। এমনকি রাফিনিয়াকেও রাখা হয় বেঞ্চে। চোটজর্জর দলে কিছুটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন হয়তো বার্সা বস ফ্লিক। লেফট-ব্যাক আলেক্স বালদের পরিবর্তে ক্লাবটির ‘বি’ টিমের খেলোয়াড় জেরার্দ মার্তিন এবং সেন্টার ব্যাক ইনিগো মার্তিনেসের পরিবর্তে সের্জি দমিঙ্গেসকে নামিয়ে দিয়েছিলেন ফ্লিক। আক্রমণভাগে ভিক্তর ও ফেরান তোরেসকে দিয়ে শুরু করান তিনি। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টো হারতে হয়েছে বাজেভাবেই।

এই নিয়ে তৃতীয়বার বার্সেলোনার বিপক্ষে ম্যাচে অন্তত চার গোল করল ওসাসুনা। আগের দুবার ছিল ১৯৩৬ সালের জুনে (স্প্যানিশ কাপে ৪-২) ও ১৯৮৪ সালের জানুয়ারিতে (লা লিগায় ৪-২)।

১৯৯৫ সালের অক্টোবরের পর সর্বকনিষ্ঠ একাদশ (গড় বয়স ২৩ বছর ২৯২ দিন) নিয়ে লা লিগার ম্যাচ খেলতে নামা বার্সেলোনা শুরুতে বল দখলে অনেক এগিয়ে থাকলেও, তাদের আক্রমণে ছিল না ধার। তাদের রক্ষণেই বরং বারবার ভীতি ছড়ায় ওসাসুনা।

অষ্টাদশ মিনিটে সমর্থকদের উল্লাসে ভাসিয়ে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। বাঁ দিক থেকে সারাগোসার ক্রসে ছয় গজ বক্সের মুখে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ক্রোয়াট স্ট্রাইকার বুদিমির।

পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা কাটিয়ে উঠবে কী, উল্টো ১০ মিনিট পর দ্বিতীয় গোল হজম করে বার্সেলোনা। মাঝমাঠে আলগা বল পেয়ে পাস দেন পাবলো ইবানেস। দারুণ ক্ষিপ্রতায় বল ধরে বক্সে ঢুকে এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে অসাধারণ বডি ডজে ফাঁকি দিয়ে গোলটি করেন স্প্যানিশ উইঙ্গার সারাগোসা।

৪৪তম মিনিটে গোলের জন্য প্রথম শট নিতে পারে বার্সেলোনা। এরিক গার্সিয়ার হেড অনায়াসে ঠেকান ওসাসুনার গোলরক্ষক সের্হিও এররেরা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে জুল কুন্দের হেডে বল ধরতেও বেগ পেতে হয়নি তাকে।

দ্বিতীয়ার্ধে শুরুটা ভালো করে বার্সেলোনা। ৫৩তম মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে রবের্ত লেভানদোভস্কির শট দারুণভাবে ফিরিয়ে জাল অক্ষত রাখেন এররেরা। পরক্ষণে তার ভুলেই ব্যবধান কমায় সফরকারীরা।

এররেরা বক্সে বল ধরে একটু এগিয়ে এসে পাস দেন নিজেদের এক খেলোয়াড়ের উদ্দেশ্যে; কিন্তু পাসটা ছিল লক্ষ্যহীন। বার্সেলোনার জেরার্দ মার্তিন বল ধরে পাস দেন পাউ ভিক্তরকে। বক্সের বাইরে থেকে এই তরুণ ফরোয়ার্ডের নেওয়া শটে খুব বেশি জোর ছিল না, এররেরা ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে হাত ছোঁয়ালেও জালে যাওয়া ঠেকাতে পারেননি। বার্সেলোনার জার্সিতে ২২ বছর বয়সী ভিক্তরের প্রথম গোল এটি।

৫৯তম মিনিটে জোড়া পরিবর্তন আনেন কোচ ফ্লিক। ভিক্তর ও পাবলো তোরেকে তুলে মাঠে নামান ইয়ামাল ও রাফিনিয়াকে। ৬৬তম মিনিটে সুযোগ পান ফেররান তরেস। ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে তার নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন এররেরা।

৭২তম মিনিটে সফল স্পট কিকে নিজের দ্বিতীয় গোলে ব্যবধান আবার বাড়ান বুদিমির। বক্সে তাকেই বার্সেলোনার তরুণ ডিফেন্ডার সের্গি দোমিঙ্গেস ফাউল করলে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। ৮৫তম মিনিটে স্কোরলাইন ৪-১ করেন ব্রেতোনেস। বক্সের বাইরে আলগা বল পেয়ে বাঁ পায়ের দারুণ শটে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি।

নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট বাকি থাকতে চমৎকার গোলে ব্যবধান কমান ইয়ামাল। বক্সের বাইরে থেকে তরুণ স্প্যানিশ উইঙ্গারের বাঁ পায়ের শট ওপরের কোণা দিয়ে জালে জড়ায়। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ইয়ামালের গোল হলো ৫টি, অ্যাসিস্টও ৫টি।

সাত মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ দিকে দুটি সুযোগ পায় বার্সেলোনা। ইয়ামালের দুর্দান্ত ক্রসে দূরের পোস্টে ফেররান তরেসের হেড পোস্টে লাগে। আর কাছ থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি রাফিনিয়া।

৮ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই আছে বার্সেলোনা। এক ম্যাচ কম খেলা রেয়াল মাদ্রিদ ১৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আতলেতিকো মাদ্রিদ। রোববার মুখোমুখি হবে মাদ্রিদের এই দুই দল। ৮ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে উঠেছে ওসাসুনা।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সাত ম্যাচ পর হারের মুখ দেখলো বার্সেলোনা

প্রকাশের সময় : ০৩:০৩:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্পোর্টস ডেস্ক : 

লা লিগায় টানা ৭ ম্যাচ জিতে উড়ছিল বার্সেলোনা। নতুন কোচ হান্সি ফ্লিকের অধীনে উড়তে থাকা দলটিকে এবার মাটিতে নামালো ওসাসুনা।

ঘরের মাঠ এল সাদার স্টেডিয়ামে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে ওসাসুনা ৪-২ গোলে হারিয়েছে বার্সাকে। ওসাসুনার হয়ে জোড়া গোল করেছেন দলটির ফরোয়ার্ড আন্তে বুদিমির। বাকি দুই গোল উইঙ্গার ব্রায়ান সারাগোসা ও আবেল ব্রেতোনেসের। বার্সার হয়ে দুই গোল শোধ করেন পাউ ভিক্তর ও লামিনে ইয়ামাল।

এটি এবারের লিগে কাতালান জায়ান্টদের প্রথম হার। অন্যদিকে লিগে এক যুগ পর নিজেদের মাঠে বার্সেলোনাকে হারানো ওসাসুনা। তাদের সর্বশেষ জয়টি ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে।

এই হারে বার্সার নতুন কোচ হান্সি ফ্লিকের একটি কীর্তি গড়ার স্বপ্ন ভেঙে গেল। জেরার্দো মার্তিনোর গড়া লা লিগায় বার্সার হয়ে নিজের প্রথম ৮ ম্যাচ জেতার কীর্তিতে ভাগ বসাতে পারতেন জার্মান এই কোচ। কিন্তু তা আর হলো না।

ওসাসুনার বিপক্ষে দারুণ ফর্মে থাকা লামিনে ইয়ামালকে একাদশের বাইরে রাখে বার্সা। এমনকি রাফিনিয়াকেও রাখা হয় বেঞ্চে। চোটজর্জর দলে কিছুটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন হয়তো বার্সা বস ফ্লিক। লেফট-ব্যাক আলেক্স বালদের পরিবর্তে ক্লাবটির ‘বি’ টিমের খেলোয়াড় জেরার্দ মার্তিন এবং সেন্টার ব্যাক ইনিগো মার্তিনেসের পরিবর্তে সের্জি দমিঙ্গেসকে নামিয়ে দিয়েছিলেন ফ্লিক। আক্রমণভাগে ভিক্তর ও ফেরান তোরেসকে দিয়ে শুরু করান তিনি। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টো হারতে হয়েছে বাজেভাবেই।

এই নিয়ে তৃতীয়বার বার্সেলোনার বিপক্ষে ম্যাচে অন্তত চার গোল করল ওসাসুনা। আগের দুবার ছিল ১৯৩৬ সালের জুনে (স্প্যানিশ কাপে ৪-২) ও ১৯৮৪ সালের জানুয়ারিতে (লা লিগায় ৪-২)।

১৯৯৫ সালের অক্টোবরের পর সর্বকনিষ্ঠ একাদশ (গড় বয়স ২৩ বছর ২৯২ দিন) নিয়ে লা লিগার ম্যাচ খেলতে নামা বার্সেলোনা শুরুতে বল দখলে অনেক এগিয়ে থাকলেও, তাদের আক্রমণে ছিল না ধার। তাদের রক্ষণেই বরং বারবার ভীতি ছড়ায় ওসাসুনা।

অষ্টাদশ মিনিটে সমর্থকদের উল্লাসে ভাসিয়ে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। বাঁ দিক থেকে সারাগোসার ক্রসে ছয় গজ বক্সের মুখে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ক্রোয়াট স্ট্রাইকার বুদিমির।

পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা কাটিয়ে উঠবে কী, উল্টো ১০ মিনিট পর দ্বিতীয় গোল হজম করে বার্সেলোনা। মাঝমাঠে আলগা বল পেয়ে পাস দেন পাবলো ইবানেস। দারুণ ক্ষিপ্রতায় বল ধরে বক্সে ঢুকে এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে অসাধারণ বডি ডজে ফাঁকি দিয়ে গোলটি করেন স্প্যানিশ উইঙ্গার সারাগোসা।

৪৪তম মিনিটে গোলের জন্য প্রথম শট নিতে পারে বার্সেলোনা। এরিক গার্সিয়ার হেড অনায়াসে ঠেকান ওসাসুনার গোলরক্ষক সের্হিও এররেরা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে জুল কুন্দের হেডে বল ধরতেও বেগ পেতে হয়নি তাকে।

দ্বিতীয়ার্ধে শুরুটা ভালো করে বার্সেলোনা। ৫৩তম মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে রবের্ত লেভানদোভস্কির শট দারুণভাবে ফিরিয়ে জাল অক্ষত রাখেন এররেরা। পরক্ষণে তার ভুলেই ব্যবধান কমায় সফরকারীরা।

এররেরা বক্সে বল ধরে একটু এগিয়ে এসে পাস দেন নিজেদের এক খেলোয়াড়ের উদ্দেশ্যে; কিন্তু পাসটা ছিল লক্ষ্যহীন। বার্সেলোনার জেরার্দ মার্তিন বল ধরে পাস দেন পাউ ভিক্তরকে। বক্সের বাইরে থেকে এই তরুণ ফরোয়ার্ডের নেওয়া শটে খুব বেশি জোর ছিল না, এররেরা ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে হাত ছোঁয়ালেও জালে যাওয়া ঠেকাতে পারেননি। বার্সেলোনার জার্সিতে ২২ বছর বয়সী ভিক্তরের প্রথম গোল এটি।

৫৯তম মিনিটে জোড়া পরিবর্তন আনেন কোচ ফ্লিক। ভিক্তর ও পাবলো তোরেকে তুলে মাঠে নামান ইয়ামাল ও রাফিনিয়াকে। ৬৬তম মিনিটে সুযোগ পান ফেররান তরেস। ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে তার নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন এররেরা।

৭২তম মিনিটে সফল স্পট কিকে নিজের দ্বিতীয় গোলে ব্যবধান আবার বাড়ান বুদিমির। বক্সে তাকেই বার্সেলোনার তরুণ ডিফেন্ডার সের্গি দোমিঙ্গেস ফাউল করলে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। ৮৫তম মিনিটে স্কোরলাইন ৪-১ করেন ব্রেতোনেস। বক্সের বাইরে আলগা বল পেয়ে বাঁ পায়ের দারুণ শটে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি।

নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট বাকি থাকতে চমৎকার গোলে ব্যবধান কমান ইয়ামাল। বক্সের বাইরে থেকে তরুণ স্প্যানিশ উইঙ্গারের বাঁ পায়ের শট ওপরের কোণা দিয়ে জালে জড়ায়। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ইয়ামালের গোল হলো ৫টি, অ্যাসিস্টও ৫টি।

সাত মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ দিকে দুটি সুযোগ পায় বার্সেলোনা। ইয়ামালের দুর্দান্ত ক্রসে দূরের পোস্টে ফেররান তরেসের হেড পোস্টে লাগে। আর কাছ থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি রাফিনিয়া।

৮ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই আছে বার্সেলোনা। এক ম্যাচ কম খেলা রেয়াল মাদ্রিদ ১৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আতলেতিকো মাদ্রিদ। রোববার মুখোমুখি হবে মাদ্রিদের এই দুই দল। ৮ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে উঠেছে ওসাসুনা।