Dhaka বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিচারক নিয়োগে নীতিমালা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে : প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগে নীতিমালা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে। একই সঙ্গে সুনির্দিষ্ট আইনও করা হবে।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের ইনার গার্ডেনে দেওয়া অভিভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। এ অনুষ্ঠানে দেশের অধস্তন আদালতের প্রায় দুই হাজার বিচারক অংশগ্রহণ করেন।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, বিচার বিভাগ পৃথক হলেও বিচার বিভাগে চলছে দ্বৈত শাসন। এ কারণে বিচারকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। বিচার বিভাগ পৃথক সচিবালয়ে না হলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, বিচারকদের বদলি এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে পদায়নের নীতিমালা করা হবে। এখনই সময় পৃথক সচিবালয়ে গঠনের। না হয়, মানুষ বিচার বিভাগের সুফল পাবে না।

প্রধান বিচারপতি বলেন, পৃথকভাবে সচিবালয়ে তৈরি করে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক বাজেট তৈরি করতে হবে। অন্য সার্ভিসের সঙ্গে বিচার বিভাগের বেতন, সুযোগসুবিধায় যে বৈষম্য রয়েছে, তা নিরসন করতে হবে। বিচার বিভাগে কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগে স্বচ্ছতার জন্য কমিশন নিয়োগ করতে হবে।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগে দুর্নীতিকে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করছি। জেলা জজ ও বিচারকদের দুর্নীতি দমনে ব্যর্থ হলে এটি তার সার্ভিসে ব্যর্থতা হিসেবে গণ্য করা হবে। কারণ বিচার বিভাগে কারও ব্যক্তির দুর্নীতি পুরো বিচার বিভাগের দুর্নাম হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টে বিভিন্ন শাখায় দুর্নীতি-অনিয়ম ছেয়ে গেছে৷ এটি এখন আর বরদাশত করা হবে না।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদেরকে কঠিন সময়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিদ্যমান বিচার বিভাগের স্বচ্ছতার জন্য মাসদার হোসেন মামলার রায় বাস্তবায়ন করতে হবে। মাঠ পর্যায়ে বিচারকদের গাড়ি, বাসস্থান ও এজলাস নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ৪২ লাখ মামলার জট রয়েছে। মুদ্রার ওই পিঠে রয়েছে বিচারক সংকট। মাত্র দুই হাজার বিচারক দিয়ে এটি সম্ভব নয়। দক্ষ জনবল নিয়োগ জরুরি।

নতুন বাংলাদেশে সততা, ন্যায় ও অধিকার বোধের বিচারবিভাগ প্রতিষ্ঠা করার প্রতিজ্ঞা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি ন্যায় ভিত্তিক বিচারব্যবস্থার কাজ হলো জনগণ ও রাষ্ট্রকে সুরক্ষা দেয়া। কারণ মানুষের আস্থার জায়গা এই বিচারবিভাগ। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে বিচারবিভাগের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। বঞ্চনার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিটির প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত রয়েছেন।

এসময় সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সারা দেশের অধস্তন আদালতের প্রায় ২ হাজার বিচারক, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিটির প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিচারক নিয়োগে নীতিমালা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে : প্রধান বিচারপতি

প্রকাশের সময় : ০১:১৪:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগে নীতিমালা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে। একই সঙ্গে সুনির্দিষ্ট আইনও করা হবে।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের ইনার গার্ডেনে দেওয়া অভিভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। এ অনুষ্ঠানে দেশের অধস্তন আদালতের প্রায় দুই হাজার বিচারক অংশগ্রহণ করেন।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, বিচার বিভাগ পৃথক হলেও বিচার বিভাগে চলছে দ্বৈত শাসন। এ কারণে বিচারকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। বিচার বিভাগ পৃথক সচিবালয়ে না হলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, বিচারকদের বদলি এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে পদায়নের নীতিমালা করা হবে। এখনই সময় পৃথক সচিবালয়ে গঠনের। না হয়, মানুষ বিচার বিভাগের সুফল পাবে না।

প্রধান বিচারপতি বলেন, পৃথকভাবে সচিবালয়ে তৈরি করে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক বাজেট তৈরি করতে হবে। অন্য সার্ভিসের সঙ্গে বিচার বিভাগের বেতন, সুযোগসুবিধায় যে বৈষম্য রয়েছে, তা নিরসন করতে হবে। বিচার বিভাগে কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগে স্বচ্ছতার জন্য কমিশন নিয়োগ করতে হবে।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগে দুর্নীতিকে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করছি। জেলা জজ ও বিচারকদের দুর্নীতি দমনে ব্যর্থ হলে এটি তার সার্ভিসে ব্যর্থতা হিসেবে গণ্য করা হবে। কারণ বিচার বিভাগে কারও ব্যক্তির দুর্নীতি পুরো বিচার বিভাগের দুর্নাম হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টে বিভিন্ন শাখায় দুর্নীতি-অনিয়ম ছেয়ে গেছে৷ এটি এখন আর বরদাশত করা হবে না।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদেরকে কঠিন সময়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিদ্যমান বিচার বিভাগের স্বচ্ছতার জন্য মাসদার হোসেন মামলার রায় বাস্তবায়ন করতে হবে। মাঠ পর্যায়ে বিচারকদের গাড়ি, বাসস্থান ও এজলাস নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ৪২ লাখ মামলার জট রয়েছে। মুদ্রার ওই পিঠে রয়েছে বিচারক সংকট। মাত্র দুই হাজার বিচারক দিয়ে এটি সম্ভব নয়। দক্ষ জনবল নিয়োগ জরুরি।

নতুন বাংলাদেশে সততা, ন্যায় ও অধিকার বোধের বিচারবিভাগ প্রতিষ্ঠা করার প্রতিজ্ঞা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি ন্যায় ভিত্তিক বিচারব্যবস্থার কাজ হলো জনগণ ও রাষ্ট্রকে সুরক্ষা দেয়া। কারণ মানুষের আস্থার জায়গা এই বিচারবিভাগ। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে বিচারবিভাগের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। বঞ্চনার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিটির প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত রয়েছেন।

এসময় সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সারা দেশের অধস্তন আদালতের প্রায় ২ হাজার বিচারক, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিটির প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।