Dhaka রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১০ দূতাবাসের ৩৮ জনের ‘দুর্নীতি’ নাকি অডিট অবজেকশন, দেখে ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থ আত্মসাৎ এবং সরকারের আর্থিক ক্ষতির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডাসহ ১০টি দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব অভিযোগ দুর্নীতি নাকি অডিট অবজেকশন, তা নিশ্চিত হওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ ১০ দেশে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্য চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুদককে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।

কয়েকটি মিশন থেকে রাষ্ট্রদূতদের ফেরত আসতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘চুক্তিভিত্তিক যারা ছিলেন তাদের সবাইকেই রিকল করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন অ্যাডমিন ক্যাডারের সাবেক কর্মকর্তা, গতকাল তাদের চুক্তি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের আমরা চার সপ্তাহ সময় দিয়েছিলাম। তারা সবাই চলে আসবেন। রিপ্লেসমেন্টে কিছুটা সময় লাগবে। হুট করে তো হবে না। এটা ভেবেচিন্তে দিতে হবে, অভিজ্ঞ যারা আছেন।’

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ ১০ দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্য চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এটা আজকের পত্রিকায় আমি প্রথম দেখলাম। এখানে কিছু কনফিউশান থাকতে পারে, সেগুলো আমরা দূর করবো। অডিট অবজেকশন এবং দুর্নীতি এক জিনিস না। একটি ছোট উদাহরণ দেই। আমি দায়িত্বে থাকাকালীন কলকাতা মিশনের একটি গাড়ি কেনা হয়। এর চেয়ে অনেক ছোট গাড়ি দিল্লিতে কম দামে কেনা গেছে। অ্যাডভান্স দেওয়া হয়েছে এজেন্টকে, এজেন্ট মানে দালাল। আসলে গাড়ির কোম্পানির এজেন্ট ওরা। অভিযোগ এসেছে যে দালালকে দেওয়া হয়েছে চার লাখ টাকা সেটা আদায়যোগ্য। অবজেকশনটা আমার বিরুদ্ধে। এটা আমি কেন দিলাম, আমার কাছ থেকে নাকি এ টাকা আদায়যোগ্য হবে। মিশন অডিটের ডিজিকে বললাম গাড়ি কিনতে হলে বুকিং দিতে হয়, সেজন্য আগাম কিছু টাকা দিতে হয়। অডিট অবজেকশন অনেকসময় এরকম হয়। সেগুলোকে দুর্নীতি হিসেবে দেখা হচ্ছে কি না দেখতে হবে। কারণ অভিযোগের ধরন দেখে মনে হচ্ছে এগুলো অনেকগুলো অডিট অবজেকশনের ফলাফল। অডিট অবজেকশন আর দুর্নীতি এক জিনিস না। আমরা দেখবো।’

দুদককে সহযোগিতা করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সহযোগিতা তো অবশ্যই করবো। আমরা তো চাই না কোনো দুর্নীতি হোক। কাজেই যেটুকু সহযোগিতা চাইবে আমরা করবো, দেখতে হবে দুর্নীতি হয়েছে কি না। সেটা দেখে সেভাবে সহযোগিতা করবো।’

এ বিষয়ে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ আছে বলে আমার মনে হয় না। তবে আমি নিশ্চিত করে কিছু বলবো না যতক্ষণ প্রতিটা কেইস আমি ডিটেইলস দেখবো।’

অনেকে অতি উৎসাহিত হয়ে অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করছেন, এটি তেমন কি না জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা হতেই পারে, সবসময়ই হয়। এটা নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’

উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ ১০ দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের ৩৮ কর্মকর্তা–কর্মচারীর তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় দুদক।

বিভিন্ন মিশন থেকে রাষ্ট্রদূতদের ফেরত আসতে বলা হয়েছে, সে বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চুক্তিতে যারা ছিলেন তাদের সবাইকেই রিকল করা হয়েছে। তার মধ্যে তিনজন ছিলেন অ্যাডমিন ক্যাডারের সাবেক কর্মকর্তা, তাদের ইতোমধ্যে গতকাল চুক্তি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের আমরা চার সপ্তাহ সময় দিয়েছিলাম। তারা সবাই চলে আসবে। তবে রিপ্লেসমেন্টে কিছুটা সময় লাগবে। হুট করে তো হবে না। এটা ভেবে চিন্তে দিতে হবে অভিজ্ঞ যারা আছেন।

অনেকে অতিউৎসাহী হয়ে অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করছেন, এটি তেমন কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটা হতেই পারে, সবসময়ই হয় এটা নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার কিছু নেই।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

১০ দূতাবাসের ৩৮ জনের ‘দুর্নীতি’ নাকি অডিট অবজেকশন, দেখে ব্যবস্থা

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৩:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থ আত্মসাৎ এবং সরকারের আর্থিক ক্ষতির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডাসহ ১০টি দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব অভিযোগ দুর্নীতি নাকি অডিট অবজেকশন, তা নিশ্চিত হওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ ১০ দেশে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্য চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুদককে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।

কয়েকটি মিশন থেকে রাষ্ট্রদূতদের ফেরত আসতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘চুক্তিভিত্তিক যারা ছিলেন তাদের সবাইকেই রিকল করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন অ্যাডমিন ক্যাডারের সাবেক কর্মকর্তা, গতকাল তাদের চুক্তি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের আমরা চার সপ্তাহ সময় দিয়েছিলাম। তারা সবাই চলে আসবেন। রিপ্লেসমেন্টে কিছুটা সময় লাগবে। হুট করে তো হবে না। এটা ভেবেচিন্তে দিতে হবে, অভিজ্ঞ যারা আছেন।’

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ ১০ দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্য চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এটা আজকের পত্রিকায় আমি প্রথম দেখলাম। এখানে কিছু কনফিউশান থাকতে পারে, সেগুলো আমরা দূর করবো। অডিট অবজেকশন এবং দুর্নীতি এক জিনিস না। একটি ছোট উদাহরণ দেই। আমি দায়িত্বে থাকাকালীন কলকাতা মিশনের একটি গাড়ি কেনা হয়। এর চেয়ে অনেক ছোট গাড়ি দিল্লিতে কম দামে কেনা গেছে। অ্যাডভান্স দেওয়া হয়েছে এজেন্টকে, এজেন্ট মানে দালাল। আসলে গাড়ির কোম্পানির এজেন্ট ওরা। অভিযোগ এসেছে যে দালালকে দেওয়া হয়েছে চার লাখ টাকা সেটা আদায়যোগ্য। অবজেকশনটা আমার বিরুদ্ধে। এটা আমি কেন দিলাম, আমার কাছ থেকে নাকি এ টাকা আদায়যোগ্য হবে। মিশন অডিটের ডিজিকে বললাম গাড়ি কিনতে হলে বুকিং দিতে হয়, সেজন্য আগাম কিছু টাকা দিতে হয়। অডিট অবজেকশন অনেকসময় এরকম হয়। সেগুলোকে দুর্নীতি হিসেবে দেখা হচ্ছে কি না দেখতে হবে। কারণ অভিযোগের ধরন দেখে মনে হচ্ছে এগুলো অনেকগুলো অডিট অবজেকশনের ফলাফল। অডিট অবজেকশন আর দুর্নীতি এক জিনিস না। আমরা দেখবো।’

দুদককে সহযোগিতা করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সহযোগিতা তো অবশ্যই করবো। আমরা তো চাই না কোনো দুর্নীতি হোক। কাজেই যেটুকু সহযোগিতা চাইবে আমরা করবো, দেখতে হবে দুর্নীতি হয়েছে কি না। সেটা দেখে সেভাবে সহযোগিতা করবো।’

এ বিষয়ে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ আছে বলে আমার মনে হয় না। তবে আমি নিশ্চিত করে কিছু বলবো না যতক্ষণ প্রতিটা কেইস আমি ডিটেইলস দেখবো।’

অনেকে অতি উৎসাহিত হয়ে অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করছেন, এটি তেমন কি না জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা হতেই পারে, সবসময়ই হয়। এটা নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’

উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ ১০ দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের ৩৮ কর্মকর্তা–কর্মচারীর তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় দুদক।

বিভিন্ন মিশন থেকে রাষ্ট্রদূতদের ফেরত আসতে বলা হয়েছে, সে বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চুক্তিতে যারা ছিলেন তাদের সবাইকেই রিকল করা হয়েছে। তার মধ্যে তিনজন ছিলেন অ্যাডমিন ক্যাডারের সাবেক কর্মকর্তা, তাদের ইতোমধ্যে গতকাল চুক্তি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের আমরা চার সপ্তাহ সময় দিয়েছিলাম। তারা সবাই চলে আসবে। তবে রিপ্লেসমেন্টে কিছুটা সময় লাগবে। হুট করে তো হবে না। এটা ভেবে চিন্তে দিতে হবে অভিজ্ঞ যারা আছেন।

অনেকে অতিউৎসাহী হয়ে অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করছেন, এটি তেমন কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটা হতেই পারে, সবসময়ই হয় এটা নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার কিছু নেই।