Dhaka মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভাসানী-বঙ্গবন্ধুর আ. লীগ আর হাসিনার আ. লীগ এক না : কাদের সিদ্দিকী

গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেন, ‘মাওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু ও জনগণের আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক না। আমি আওয়ামী লীগের কোনো দুর্দিন দেখি নাই। কারণ মওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয়। যে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে আর বর্তমান আওয়ামী লীগ এক নয়।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধের সামনে দাড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি একটা দল করেছি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নামে। যার প্রতীক গামছা। দলের একমাত্র উদ্দেশ্য মানুষকে পাহারা দেয়া, মানুষের সেবা করা। শেখ হাসিনা যতক্ষণ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থাকবে আমি ততক্ষণ তার সঙ্গে থাকবো।

তিনি বলেন, অনেকেই দেশ প্রেমের কথা বলে, কিন্তু দেশ প্রেম সহজ জিনিস নয়। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়েই বেঁচে থাকবো।

তিনি আরও বলেন, আমি আগেও বঙ্গবন্ধুর ছিলাম, যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন বঙ্গবন্ধুকে বুকে লালন করেই বেঁচে থাকবো। বঙ্গবন্ধুর আদর্শই আমার আদর্শ। কিছু অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে আমি সব সময় ছিলাম আছি ও আগামীতেও থাকবো। আর টুঙ্গিপাড়ার মানুষদের অভিনন্দন জানাই। এরকম একটা দুর্বিপাকের মধ্যেও তারা বঙ্গবন্ধুর যথাযথ সম্মান রেখেছে।

জনতা লীগ সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি আমার রাজনৈতিক পিতার মুক্তির কারণেই টুঙ্গিপাড়া এসেছি। সবাই যখন ইঁদুরের গর্তে ছিল তখন বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলাম। তার জন্য সম্মান পাইনি। মানুষের কাছ থেকে পেয়েছি কিন্তু যাদের কাছ থেকে পাওয়া দরকার তাদের কাছ থেকে সম্মান পায়নি বরং অনেক অসম্মান হয়েছে।

ছাত্র-জনতার উদ্দেশে খেতাবপ্রাপ্ত এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাফল্য আমি মনেপ্রাণে কামনা করি ও বিশ্বাস করি। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশকে স্বাধীন করেছি। বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে বাংলাদেশে নেতৃত্ব করা যাবে না। বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করে, সম্মান করে, যতটা সম্মান তাঁর প্রাপ্য, ততখানি সম্মান দিয়েই আমাদের চলতে হবে।’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘যে মূল্যবোধ দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলাম, সেই মূল্যবোধ এখন আর নেই। বঙ্গবন্ধুকে পেয়ে আমি দেশকে ভালোবাসতে শিখেছি। অনেকে দেশপ্রেমের কথা বলেন, কিন্তু দেশপ্রেম এত সহজ জিনিস নয়। এটা অর্জন করতে নানা ঘাত-প্রতিঘাত পার করতে হয়।’

সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘ঝড়-তুফান এলে আবার তা কেটে যায়। কোনো অন্ধকারই চিরস্থায়ী নয়। কোনো দুর্যোগ স্থায়ী নয়। আকাশ আবার পরিষ্কার হবে। বঙ্গবন্ধুর মাজারে আজ আমাকে একজন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনি কতক্ষণ শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবেন? আমি বলতে পারি যতক্ষণ উনি (শেখ হাসিনা) বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সঙ্গে থাকবেন, ততক্ষণ আমি তাঁর সঙ্গে থাকব।’

এর আগে দুপুরে বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী তার বড় ভাই আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে সঙ্গে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের মূল টম্বের ভেতর বঙ্গবন্ধুর সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া ও মোনাজাত করে। পরে তিনি টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের বিশ্রামাগারে রক্ষিত পরিদর্শন বইতে মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করেন।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দলের সদস্য ফরিদ আহমেদ, আব্দুর রহমান, পারভেজ, হাবিবুন নবী সোহেল, আরমান হোসেন তাপসসহ গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মির্জাপুর, সখিপুর, মধুপুর, বাশাইল ও ঢাকার শতাধিক দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ভাসানী-বঙ্গবন্ধুর আ. লীগ আর হাসিনার আ. লীগ এক না : কাদের সিদ্দিকী

প্রকাশের সময় : ০৮:২৩:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪

গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেন, ‘মাওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু ও জনগণের আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক না। আমি আওয়ামী লীগের কোনো দুর্দিন দেখি নাই। কারণ মওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয়। যে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে আর বর্তমান আওয়ামী লীগ এক নয়।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধের সামনে দাড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি একটা দল করেছি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নামে। যার প্রতীক গামছা। দলের একমাত্র উদ্দেশ্য মানুষকে পাহারা দেয়া, মানুষের সেবা করা। শেখ হাসিনা যতক্ষণ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থাকবে আমি ততক্ষণ তার সঙ্গে থাকবো।

তিনি বলেন, অনেকেই দেশ প্রেমের কথা বলে, কিন্তু দেশ প্রেম সহজ জিনিস নয়। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়েই বেঁচে থাকবো।

তিনি আরও বলেন, আমি আগেও বঙ্গবন্ধুর ছিলাম, যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন বঙ্গবন্ধুকে বুকে লালন করেই বেঁচে থাকবো। বঙ্গবন্ধুর আদর্শই আমার আদর্শ। কিছু অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে আমি সব সময় ছিলাম আছি ও আগামীতেও থাকবো। আর টুঙ্গিপাড়ার মানুষদের অভিনন্দন জানাই। এরকম একটা দুর্বিপাকের মধ্যেও তারা বঙ্গবন্ধুর যথাযথ সম্মান রেখেছে।

জনতা লীগ সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি আমার রাজনৈতিক পিতার মুক্তির কারণেই টুঙ্গিপাড়া এসেছি। সবাই যখন ইঁদুরের গর্তে ছিল তখন বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলাম। তার জন্য সম্মান পাইনি। মানুষের কাছ থেকে পেয়েছি কিন্তু যাদের কাছ থেকে পাওয়া দরকার তাদের কাছ থেকে সম্মান পায়নি বরং অনেক অসম্মান হয়েছে।

ছাত্র-জনতার উদ্দেশে খেতাবপ্রাপ্ত এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাফল্য আমি মনেপ্রাণে কামনা করি ও বিশ্বাস করি। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশকে স্বাধীন করেছি। বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে বাংলাদেশে নেতৃত্ব করা যাবে না। বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করে, সম্মান করে, যতটা সম্মান তাঁর প্রাপ্য, ততখানি সম্মান দিয়েই আমাদের চলতে হবে।’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘যে মূল্যবোধ দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলাম, সেই মূল্যবোধ এখন আর নেই। বঙ্গবন্ধুকে পেয়ে আমি দেশকে ভালোবাসতে শিখেছি। অনেকে দেশপ্রেমের কথা বলেন, কিন্তু দেশপ্রেম এত সহজ জিনিস নয়। এটা অর্জন করতে নানা ঘাত-প্রতিঘাত পার করতে হয়।’

সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘ঝড়-তুফান এলে আবার তা কেটে যায়। কোনো অন্ধকারই চিরস্থায়ী নয়। কোনো দুর্যোগ স্থায়ী নয়। আকাশ আবার পরিষ্কার হবে। বঙ্গবন্ধুর মাজারে আজ আমাকে একজন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনি কতক্ষণ শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবেন? আমি বলতে পারি যতক্ষণ উনি (শেখ হাসিনা) বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সঙ্গে থাকবেন, ততক্ষণ আমি তাঁর সঙ্গে থাকব।’

এর আগে দুপুরে বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী তার বড় ভাই আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে সঙ্গে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের মূল টম্বের ভেতর বঙ্গবন্ধুর সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া ও মোনাজাত করে। পরে তিনি টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের বিশ্রামাগারে রক্ষিত পরিদর্শন বইতে মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করেন।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দলের সদস্য ফরিদ আহমেদ, আব্দুর রহমান, পারভেজ, হাবিবুন নবী সোহেল, আরমান হোসেন তাপসসহ গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মির্জাপুর, সখিপুর, মধুপুর, বাশাইল ও ঢাকার শতাধিক দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।