কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের পেকুয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে শহীদুল ইসলাম শওকত (৩৬) নামে শ্রমিক দলের এক নেতা নিহত হয়েছেন।
সোমবার (২৬ আগস্ট) মধ্যরাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন।
রাত ১০টার দিকে উপজেলার পেকুয়া বাজারের ওয়াপদা অফিস এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। শহীদুল ইসলাম শওকত পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ভোলাইয়াঘোনা এলাকার মৃত শফিউল আলমের ছেলে এবং পেকুয়া সদর ইউনিয়নের পশ্চিম জোনের শ্রমিক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
আহত ব্যক্তিরা হলেন নিহত শওকতের ভাই মোহাম্মদ শাকের (২৮) ও চাচাতো ভাই মোহাম্মদ তারেক (২৩)। আহত দুজন পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পেকুয়া সদরের সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ম্যাজিক পরিবহনের স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। পেকুয়া শ্রমিক দলের আওতাধীন সদর পশ্চিম জোনের দুটি ইউনিট আছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন পশ্চিম জোন শ্রমিক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম শওকত, অপর পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক সহসভাপতি বদিউল আলম ও সাজ্জাদুল ইসলাম। এই বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, শ্রমিক দল ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত রোববার রাতে শওকত ও সাজ্জাদুল ইসলামের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ দুই পক্ষকে ডেকে বিরোধ মীমাংসা করে দেন। রাত ৮টার দিকে সদর ইউনিয়নের ভোলাইয়াঘোনা রাস্তার মাথায় সাজ্জাদুলের এক ভাইকে মারধর করেন শওকত ও তাঁর ভাই শাকের।
এ ঘটনার জেরে রাত ১০টার দিকে সাজ্জাদুল ইসলাম ও তাঁর লোকজন শওকত, শাকের ও তারেককে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। তাতে গুরুতর আহত শওকতকে স্থানীয় লোকজন পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেকে নেওয়ার পথে শওকতের মৃত্যু হয়। শওকতের এক স্বজন জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
এ বিষয় জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, হতাহত ও হামলাকারী-সবার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। এখানে শ্রমিক সংগঠনের কোনো বিষয় সম্পৃক্ত নেই। আমার সঙ্গে যে ওসমানের বিরোধের কথা বলা হচ্ছে, সেই ওসমানের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। হামলার কথা শুনে আমি আর ওসমান দুজনে একসঙ্গে হাসপাতালে গিয়েছি।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, হামলার কথা শুনার পরই ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছি। কারা খুন করেছে, কী কারণে এবং কেন খুন করা হয়েছে সব কিছুর তথ্য আমরা সংগ্রহ করছি। লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।