নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়ে তাদের গণতন্ত্রের প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির নবনিযুক্ত সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছেন। দুর্ভাগ্য আমাদের পাশের দেশ তাকে আশ্রয় দিয়েছে। সেখান থেকে হাসিনা বাংলাদেশের বিজয়কে নস্যাৎ করার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই ব্যক্তিকে (শেখ হাসিনা) এভাবে আশ্রয় দিয়ে ভারত তার যে কমিটমেন্ট টু ডেমোক্রেসি এটা তারা রক্ষা করেছে বলে আমার মনে হয় না। ভারতের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে— আপনারা তাকে আইনানুগভাবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে তু্লে দেন এবং দেশের মানুষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই সিদ্ধান্ত হচ্ছে তার বিচার করার, সেই বিচারের সম্মুখীন তাকে হতে দেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট অত্যাচারী-নিপীড়নকারী-হত্যাকারী শেখ হাসিনা দেশে থেকে তার জনগণকে ছেড়ে পালিয়েছেন। দুর্ভাগ্য আমাদের যে, আজকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত তাকে আশ্রয় দিয়েছে। সেখান থেকে তিনি আবার বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার যে বিপ্লব, সেটাকে নস্যাৎ করবার বিভিন্ন চক্রান্ত শুরু করেছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ দেশের মানুষ শেখ হাসিনার যে অপরাধ সেটাকে খাটো করে দেখে না। গত ১৫ বছরের দুঃশাসন দেশের স্বাধীনতাকে দুর্বল করে দিয়েছে। সে জাতিকে ১৮ লাখ কোটি টাকার ঋণে আবদ্ধ করে গেছে। পাচার হয়েছে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার। তিনি বলেন, ভারতের কাছে অনুরোধ করব আপনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে অপরাধীকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে তুলে দিন।
নির্বাচন নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের একটি সরকার। তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। বিগত আওয়ামী সরকার যে জঞ্জাল সৃষ্টি করে গিয়েছে সেটাকে পরিষ্কার করতে একটু সময় লাগবে। সে জন্য যে সময় প্রয়োজন সে সময় এ দেশের জনগণ দেবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমাদের বক্তব্য আগেও বলেছি, এখনও বলছি যে, গণঅভ্যুত্থানের পর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসেছে। তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে, এই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করে জনগণের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া। তবে আমি যেটা মনে করি, যে জঞ্জাল আওয়ামী লীগ সরকার সৃষ্টি করে গেছে, সেটাকে দূর করতে অবশ্যই কিছু সময় দরকারৃএকটি সঠিক সুন্দর নির্বাচন করার জন্য হলেও একটা সময়ের দরকার, যে সময়ে নির্বাচনকালীন নতুন সরকার, তারা সেই লক্ষ্যে কাজ করতে পারবে, সংস্কারগুলো করতে পারবে। সেই সময় অবশ্যই এদেশের মানুষ তাদেরকে দেবে।
অন্তবর্তীকালীন সরকার গত ১১ দিনে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তারও প্রশংসা করেন বিএনপি মহাসচিব।
সরকার পতনের পর সারাদেশে মামলা হয়েছে সেই বিচার কার্যক্রম নিয়ে ফখরুল বলেন, এই সরকারের মেয়াদ হয়েছে মাত্র ১১ দিন। এই কয়েক দিনে তারা যে কাজ করেছে তা প্রশংসনীয়।
এ সময় বিএনপি নেতা মীর সরফত আলী সপু, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, কাজী আবুল বাশার, যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়নসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।