Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মির্জাপুরে ছাত্রলীগের হামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক আহত, আটক ২

মির্জাপুর উপজেলা প্রতিনিধি : 

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কোটা সংস্কার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্ময়ককে ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। গুরুতর অবস্থায় তিন জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এসময় এলাকাবাসী হামলাকারী ছাত্রলীগের দুই নেতা সীমান্ত ও আপনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধীরা ছাত্ররা ছাত্রলীগ নেতা কাওসার আহমেদ জিএমের বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে মির্জাপুর উপজেলা সদরের থানা সংলগ্ন শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।

আহত সমন্বয়কেরা হলেন মোজাহিদুল ইসলাম (১৮), ইমন সিদ্দিকী (২৩) ও জাকির হোসেন (২৪)। তাঁদের মধ্যে মোজাহিদুল ইসলামকে প্রথমে কুমুদিনী হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। ঘটনার পর আপন মিয়া নামের ছাত্রলীগের এক কর্মীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের কয়েকজন কলেজের ভেতরে মাঠে অবস্থান করছিলেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে হঠাৎ উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য সীমন্ত ও কর্মী আপনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী দেশি অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করেন। এতে ওই তিনজন আহত হন। এ সময় অন্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান।

শিক্ষার্থীরা আহত তিনজনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তিনজনকে ভর্তি করা হয়। মোজাহিদুল ইসলামের ঘাড়ে দায়ের কোপে গভীর ক্ষত হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানান। ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের হাতে আটক কর্মী আপনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তিনি উপজেলা সদরের পোস্টকামুরী গ্রামের বাসিন্দা শ্রমিক লীগের কর্মী মাহফুজ হোসেনের ছেলে।

এদিকে এই ঘটনা সাধারণ শিক্ষার্থী ও কোটা সংস্কার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অপর সমন্ময়কদের মধ্যে ছড়িয়ে পরলে লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা কাওসার আহমেদ জিএম এর বাবা আকতার হোসেনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইতালি প্লাজায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে। এ সময় শহরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনীর সদস্যগন শহরের বিভিন্ন রাস্তায় টহল দিয়ে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানায় যোগাযোগ করা হলে ডিউটি অফিসার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনার পর কোটা সংস্কার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্ময়কদের পক্ষ থেকে বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা চলছে। ছাত্রলীগের দুই নেতাকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা থানা হেফাজতে রয়েছে। মামলা রেকর্ড হওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান লায়ন বাশার গ্রেফতার

মির্জাপুরে ছাত্রলীগের হামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক আহত, আটক ২

প্রকাশের সময় : ০৯:১২:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৪

মির্জাপুর উপজেলা প্রতিনিধি : 

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কোটা সংস্কার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্ময়ককে ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। গুরুতর অবস্থায় তিন জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এসময় এলাকাবাসী হামলাকারী ছাত্রলীগের দুই নেতা সীমান্ত ও আপনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধীরা ছাত্ররা ছাত্রলীগ নেতা কাওসার আহমেদ জিএমের বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে মির্জাপুর উপজেলা সদরের থানা সংলগ্ন শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।

আহত সমন্বয়কেরা হলেন মোজাহিদুল ইসলাম (১৮), ইমন সিদ্দিকী (২৩) ও জাকির হোসেন (২৪)। তাঁদের মধ্যে মোজাহিদুল ইসলামকে প্রথমে কুমুদিনী হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। ঘটনার পর আপন মিয়া নামের ছাত্রলীগের এক কর্মীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের কয়েকজন কলেজের ভেতরে মাঠে অবস্থান করছিলেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে হঠাৎ উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য সীমন্ত ও কর্মী আপনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী দেশি অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করেন। এতে ওই তিনজন আহত হন। এ সময় অন্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান।

শিক্ষার্থীরা আহত তিনজনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তিনজনকে ভর্তি করা হয়। মোজাহিদুল ইসলামের ঘাড়ে দায়ের কোপে গভীর ক্ষত হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানান। ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের হাতে আটক কর্মী আপনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তিনি উপজেলা সদরের পোস্টকামুরী গ্রামের বাসিন্দা শ্রমিক লীগের কর্মী মাহফুজ হোসেনের ছেলে।

এদিকে এই ঘটনা সাধারণ শিক্ষার্থী ও কোটা সংস্কার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অপর সমন্ময়কদের মধ্যে ছড়িয়ে পরলে লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা কাওসার আহমেদ জিএম এর বাবা আকতার হোসেনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইতালি প্লাজায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে। এ সময় শহরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনীর সদস্যগন শহরের বিভিন্ন রাস্তায় টহল দিয়ে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানায় যোগাযোগ করা হলে ডিউটি অফিসার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনার পর কোটা সংস্কার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্ময়কদের পক্ষ থেকে বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা চলছে। ছাত্রলীগের দুই নেতাকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা থানা হেফাজতে রয়েছে। মামলা রেকর্ড হওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।