Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় জোড়া খুনে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড, সাতজনের যাবজ্জীবন

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

কুমিল্লার সদর দক্ষিণের ধনাইতরীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে জোড়া খুনের ঘটনায় ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় কুমিল্লার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।

মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলাধীন ধনাইতরী গ্রামের মো. হাজী আতর আলীর ছেলে তোফায়েল আহমেদ তোতা (৩৮), মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে কামাল হোসেন (৪৮), হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৮), মো. ফরিদ উদ্দিনের ছেলে মো. মামুন (২৮), মৃত আনোয়ার আলীর ছেলে মো. বাবুল (৩৫) ও মৃত আনোয়ার আলীর হারুনুর রশিদ (৪৫)।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলাধীন ধনাইতরীর মৃত জুনাব আলীর ছেলে হায়দার আলী (৬৫), হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে আ. মান্নান (৩২), মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে জামাল হোসেন (৪৫), মৃত আ. খালেকের ছেলে আবুল বাশার (২৮), মৃত আ. রশিদের ছেলে জাকির হোসেন, মৃত আ. খালেকের ছেলে আ. কাদের (৩২)।

এজহার বর্হিভুত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন একই গ্রামের মৃত ইউসুফ মিয়ার ছেলে আব্দুল কুদ্দুস (৪৫)।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- একই গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মো. আমান (৪০) ও একই উপজেলার গ্রাম চৌয়ারা’র জুনাব আলী মো. সেলিম মিয়া (৫০)।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিজ্ঞ জেলা পিপি অ্যাডভোকেট মো. জহিরুল ইসলাম সেলিম।

আইনজীবী বলেন, প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে যাবজ্জীবনদণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে রায়ে।

মামলার বিবরণে জানা যায়- পূর্ব শত্রুতার জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরষ্পর যোগসাজশে ২০১৬ সালের ১২ আগস্ট রাত অনুমানিক সোয়া ৮টার দিকে ধনাইতরী জামতলা খোরশেদ আলমের মালিকানাধীন ‘ভাই ভাই ষ্টোর’ নামক দোকানে ঢুকে আসামিদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হায়দার আলীর নির্দেশে আসামি মো. তোফায়েল আহমেদ তোতা মিয়া বাদীর বাবা ভুক্তভোগী মো. গিয়াসউদ্দিন ও জেঠা জামাল হোসেনকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিহতের স্বজনরা কুমেক হসপিটাল নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রথমে মো. গিয়াসউদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং পরে জামাল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহত মো. গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫) বাদী হয়ে আসামি মো. তোফায়েল আহমেদ তোতাসহ ১২জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২জনকে আসামি করে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন ও মো. সহিদুর রহমান ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি মো. তোফায়েল আহমেদ তোতাসহ এজহারনামী ১২জন এবং এজহার বর্হিভুত আ. কুদ্দুসসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি মো. হারুনুর রশীদ ও আ. কুদ্দুসের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আসামি মো. তোফায়েল আহমেদ তোতাসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আসামি হায়দার আলীসহ ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে প্রত্যককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রত্যেককে অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়াও আসামি আমান ও মো. সেলিমের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।

এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্র পক্ষের কৌশলী জেলা পিপি অ্যাডভোকেট মো. জহিরুল ইসলাম সেলিম ও অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. মজিবুর রহমান বাহার এবং বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা আশা করছি উচ্চ আদালত রায় বহাল রেখে দ্রুত কার্যকর করবেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

কুমিল্লায় জোড়া খুনে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড, সাতজনের যাবজ্জীবন

প্রকাশের সময় : ০৫:০২:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

কুমিল্লার সদর দক্ষিণের ধনাইতরীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে জোড়া খুনের ঘটনায় ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় কুমিল্লার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।

মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলাধীন ধনাইতরী গ্রামের মো. হাজী আতর আলীর ছেলে তোফায়েল আহমেদ তোতা (৩৮), মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে কামাল হোসেন (৪৮), হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৮), মো. ফরিদ উদ্দিনের ছেলে মো. মামুন (২৮), মৃত আনোয়ার আলীর ছেলে মো. বাবুল (৩৫) ও মৃত আনোয়ার আলীর হারুনুর রশিদ (৪৫)।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলাধীন ধনাইতরীর মৃত জুনাব আলীর ছেলে হায়দার আলী (৬৫), হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে আ. মান্নান (৩২), মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে জামাল হোসেন (৪৫), মৃত আ. খালেকের ছেলে আবুল বাশার (২৮), মৃত আ. রশিদের ছেলে জাকির হোসেন, মৃত আ. খালেকের ছেলে আ. কাদের (৩২)।

এজহার বর্হিভুত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন একই গ্রামের মৃত ইউসুফ মিয়ার ছেলে আব্দুল কুদ্দুস (৪৫)।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- একই গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মো. আমান (৪০) ও একই উপজেলার গ্রাম চৌয়ারা’র জুনাব আলী মো. সেলিম মিয়া (৫০)।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিজ্ঞ জেলা পিপি অ্যাডভোকেট মো. জহিরুল ইসলাম সেলিম।

আইনজীবী বলেন, প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে যাবজ্জীবনদণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে রায়ে।

মামলার বিবরণে জানা যায়- পূর্ব শত্রুতার জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরষ্পর যোগসাজশে ২০১৬ সালের ১২ আগস্ট রাত অনুমানিক সোয়া ৮টার দিকে ধনাইতরী জামতলা খোরশেদ আলমের মালিকানাধীন ‘ভাই ভাই ষ্টোর’ নামক দোকানে ঢুকে আসামিদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হায়দার আলীর নির্দেশে আসামি মো. তোফায়েল আহমেদ তোতা মিয়া বাদীর বাবা ভুক্তভোগী মো. গিয়াসউদ্দিন ও জেঠা জামাল হোসেনকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিহতের স্বজনরা কুমেক হসপিটাল নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রথমে মো. গিয়াসউদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং পরে জামাল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহত মো. গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫) বাদী হয়ে আসামি মো. তোফায়েল আহমেদ তোতাসহ ১২জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২জনকে আসামি করে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন ও মো. সহিদুর রহমান ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি মো. তোফায়েল আহমেদ তোতাসহ এজহারনামী ১২জন এবং এজহার বর্হিভুত আ. কুদ্দুসসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি মো. হারুনুর রশীদ ও আ. কুদ্দুসের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আসামি মো. তোফায়েল আহমেদ তোতাসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আসামি হায়দার আলীসহ ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে প্রত্যককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রত্যেককে অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়াও আসামি আমান ও মো. সেলিমের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।

এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্র পক্ষের কৌশলী জেলা পিপি অ্যাডভোকেট মো. জহিরুল ইসলাম সেলিম ও অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. মজিবুর রহমান বাহার এবং বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা আশা করছি উচ্চ আদালত রায় বহাল রেখে দ্রুত কার্যকর করবেন।