Dhaka রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বামপন্থিদের জয়জয়কার, ঝুলন্ত পার্লামেন্টের পথে ফ্রান্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

এমনটা আশা করেনি কেউ। নাটকীয় ফলাফল। ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না কোনো দল বা জোট। শুধু তাই নয়, প্রথম দফা ভোটে জয় পাওয়া মারিন লু পেনের কট্টর-ডানপন্থি ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) জোট দ্বিতীয় দফার ভোটে নেমে গেছে তৃতীয় অবস্থানে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি আসন জিতেছে বামপন্থিদের জোট। মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ মধ্যপন্থি জোট ইনসিবেল অ্যালায়েন্স। তবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন পায়নি কেউই। এ অবস্থায় ইউরোপের শক্তিশালী এ দেশটিতে হতে যাচ্ছে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে; রোববারের ভোটে বামপন্থিদের জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট সর্বাধিক ১৮২টি আসনে জয় পেয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ মধ্যপন্থি জোট ইনসিবেল অ্যালায়েন্স ১৬৮টি আসনে জিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে প্রথম দফা ভোটে জয় পাওয়া মারিন লু পেনের কট্টর-ডানপন্থি ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) জোট রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে। এই জোট পেয়েছে ১৪৩টি আসন।

আরএন দ্বিতীয় দফা ভোটে জয়ী হওয়ার আশা করলেও তারা নেমে গেছে তৃতীয় অবস্থানে। রোববারের এ ভোটে কট্টর-ডানপন্থি ন্যাশনাল ব্যালিকে ঠেকাতে একজোট হয়ে লড়ে মধ্যপন্থি ও বামপন্থি দলগুলো। তবে কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ঝুলন্ত পার্লামেন্টের দিকেই যাচ্ছে ফ্রান্স।

কে হবেন প্রধানমন্ত্রী, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে কে নেতৃত্ব দেবেন- এ নিয়ে সামনের দিনগুলোতে চলবে রাজনৈতিক দর কষাকষি। এরই মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন মাত্র সাত মাস আগে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া গ্যাব্রিয়েল আটাল।

ফ্রান্সে পার্লামেন্টের মোট আসন ৫৭৭টি। সরকার গঠনের জন্য কোনো দল বা জোটকে ২৮৯টি আসন পেতে হবে। তিনটি দলের নেতৃত্বাধীন জোটের কেউই এ পরিমাণ আসন পায়নি।

বিবিসি প্রতিবেদন বলছে, ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) এই নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে জয়লাভ করেছিল। তারপর থেকে সকল জনমত জরিপে দলটির বিজয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। তবে এর পরিবর্তে ফ্রান্স এখন একটি ঝুলন্ত পার্লামেন্টের মুখোমুখি হচ্ছে।

তৃতীয় অবস্থানে নেমে আসার বিষয়ে আরএন নেতা জর্ডান বারডেলা বলেছেন, তাদের ক্ষমতায় যাওয়া ঠেকাতে ‘অপ্রাকৃতিক রাজনৈতিক জোট’ করা হয়েছে। আমরা ক্ষমতার জন্য ক্ষমতা চাই না।

প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ মাত্র চার সপ্তাহ আগে হঠাৎ করে নির্বাচনের ঘোষণা দেন। গত ৩০ জুন প্রথম দফার ভোটে আরএন ও সমমনা দলগুলো ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। আর বামপন্থি নিউ পপুলার ফ্রন্ট ২৮ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ নেতৃত্বে মধ্যপন্থি এনসেম্বল ব্লক প্রায় ২০ শতাংশ ভোট পেয়ে ছিল তৃতীয় স্থানে।

এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ফ্রান্সের পার্লামেন্ট তিনটি বড় জোট- বামপন্থি, মধ্যপন্থি ও ডানপন্থির মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এদের প্রত্যেকেরই পুরোপুরি পৃথক ধরনের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী রয়েছে এবং কোনো ক্ষেত্রেই একমত হওয়ার কোনো ঐতিহ্য নেই।

বামপন্থি জোটভুক্ত দলগুলোর মধ্যে কট্টর বাম, গ্রিনস ও সমাজতন্ত্রীরা আছে। তারা ভোটের আগে তাড়াহুড়া করে এ জোট গঠন করেছে। পার্লামেন্টের ৫৭৭ আসনের মধ্যে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ২৮৯ আসনে জয় দরকার, কিন্তু বামপন্থি জোট এর চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে।

পালার্মেন্ট নির্বাচনের অধিকাংশ আসনের ফল ঘোষণা হয়ে গেলেও এখনও কিছু বাকি আছে। ফ্রান্সের স্থানীয় সময় সোমবার সকালের মধ্যেই সব ফল ঘোষণা হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে জরিপ সংস্থাগুলো নির্বাচনের ফলের যে পূর্বাভাস তুলে ধরে তা সাধারণত সঠিক হয়। তাদের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বামপন্থিরা ১৮৪ থেকে ১৯৮টি আসন, মাক্রোঁর মধ্যপন্থি জোট ১৬০ থেকে ১৬৯টি আসন এবং লু পেনের আরএন ও এর মিত্ররা ১৩৫ থেকে ১৪৩টি আসন পেতে পারে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জাতীয় স্বার্থে জবাবদিহিমূলক গণমাধ্যম অপরিহার্য : পরিবেশ উপদষ্টো

বামপন্থিদের জয়জয়কার, ঝুলন্ত পার্লামেন্টের পথে ফ্রান্স

প্রকাশের সময় : ১২:৩৯:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

এমনটা আশা করেনি কেউ। নাটকীয় ফলাফল। ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না কোনো দল বা জোট। শুধু তাই নয়, প্রথম দফা ভোটে জয় পাওয়া মারিন লু পেনের কট্টর-ডানপন্থি ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) জোট দ্বিতীয় দফার ভোটে নেমে গেছে তৃতীয় অবস্থানে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি আসন জিতেছে বামপন্থিদের জোট। মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ মধ্যপন্থি জোট ইনসিবেল অ্যালায়েন্স। তবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন পায়নি কেউই। এ অবস্থায় ইউরোপের শক্তিশালী এ দেশটিতে হতে যাচ্ছে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে; রোববারের ভোটে বামপন্থিদের জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট সর্বাধিক ১৮২টি আসনে জয় পেয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ মধ্যপন্থি জোট ইনসিবেল অ্যালায়েন্স ১৬৮টি আসনে জিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে প্রথম দফা ভোটে জয় পাওয়া মারিন লু পেনের কট্টর-ডানপন্থি ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) জোট রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে। এই জোট পেয়েছে ১৪৩টি আসন।

আরএন দ্বিতীয় দফা ভোটে জয়ী হওয়ার আশা করলেও তারা নেমে গেছে তৃতীয় অবস্থানে। রোববারের এ ভোটে কট্টর-ডানপন্থি ন্যাশনাল ব্যালিকে ঠেকাতে একজোট হয়ে লড়ে মধ্যপন্থি ও বামপন্থি দলগুলো। তবে কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ঝুলন্ত পার্লামেন্টের দিকেই যাচ্ছে ফ্রান্স।

কে হবেন প্রধানমন্ত্রী, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে কে নেতৃত্ব দেবেন- এ নিয়ে সামনের দিনগুলোতে চলবে রাজনৈতিক দর কষাকষি। এরই মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন মাত্র সাত মাস আগে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া গ্যাব্রিয়েল আটাল।

ফ্রান্সে পার্লামেন্টের মোট আসন ৫৭৭টি। সরকার গঠনের জন্য কোনো দল বা জোটকে ২৮৯টি আসন পেতে হবে। তিনটি দলের নেতৃত্বাধীন জোটের কেউই এ পরিমাণ আসন পায়নি।

বিবিসি প্রতিবেদন বলছে, ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) এই নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে জয়লাভ করেছিল। তারপর থেকে সকল জনমত জরিপে দলটির বিজয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। তবে এর পরিবর্তে ফ্রান্স এখন একটি ঝুলন্ত পার্লামেন্টের মুখোমুখি হচ্ছে।

তৃতীয় অবস্থানে নেমে আসার বিষয়ে আরএন নেতা জর্ডান বারডেলা বলেছেন, তাদের ক্ষমতায় যাওয়া ঠেকাতে ‘অপ্রাকৃতিক রাজনৈতিক জোট’ করা হয়েছে। আমরা ক্ষমতার জন্য ক্ষমতা চাই না।

প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ মাত্র চার সপ্তাহ আগে হঠাৎ করে নির্বাচনের ঘোষণা দেন। গত ৩০ জুন প্রথম দফার ভোটে আরএন ও সমমনা দলগুলো ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। আর বামপন্থি নিউ পপুলার ফ্রন্ট ২৮ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ নেতৃত্বে মধ্যপন্থি এনসেম্বল ব্লক প্রায় ২০ শতাংশ ভোট পেয়ে ছিল তৃতীয় স্থানে।

এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ফ্রান্সের পার্লামেন্ট তিনটি বড় জোট- বামপন্থি, মধ্যপন্থি ও ডানপন্থির মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এদের প্রত্যেকেরই পুরোপুরি পৃথক ধরনের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী রয়েছে এবং কোনো ক্ষেত্রেই একমত হওয়ার কোনো ঐতিহ্য নেই।

বামপন্থি জোটভুক্ত দলগুলোর মধ্যে কট্টর বাম, গ্রিনস ও সমাজতন্ত্রীরা আছে। তারা ভোটের আগে তাড়াহুড়া করে এ জোট গঠন করেছে। পার্লামেন্টের ৫৭৭ আসনের মধ্যে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ২৮৯ আসনে জয় দরকার, কিন্তু বামপন্থি জোট এর চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে।

পালার্মেন্ট নির্বাচনের অধিকাংশ আসনের ফল ঘোষণা হয়ে গেলেও এখনও কিছু বাকি আছে। ফ্রান্সের স্থানীয় সময় সোমবার সকালের মধ্যেই সব ফল ঘোষণা হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে জরিপ সংস্থাগুলো নির্বাচনের ফলের যে পূর্বাভাস তুলে ধরে তা সাধারণত সঠিক হয়। তাদের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বামপন্থিরা ১৮৪ থেকে ১৯৮টি আসন, মাক্রোঁর মধ্যপন্থি জোট ১৬০ থেকে ১৬৯টি আসন এবং লু পেনের আরএন ও এর মিত্ররা ১৩৫ থেকে ১৪৩টি আসন পেতে পারে।