নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি :
নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় স্বামীকে তালাক দেওয়ার ঘটনার জেরে এক গৃহিণীর শরীরে দাহ্য পদার্থ (এসিড) নিক্ষেপ করে দগ্ধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। দগ্ধ ওই গৃহিণীর নাম হাফসা আক্তার(৩২)।
শুক্রবার (৫ জুলাই) রাত ৯ টার দিকে উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মণজাত গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তের নাম হুমায়ুন কবির বাকি। তিনি উপজেলার মাসকা ইউপির মাসকা গ্রামের মৃত জুবেদ আলীর ছেলে।
আর ভুক্তভোগী একই উপজেলার ব্রাম্মনজাত গ্রামের ফজলুর রহমান খানের মেয়ে হাফসা আক্তার।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, ১৭ বছর আগে উপজেলার ব্রাম্মনজাত গ্রামের হাফসা আক্তারের সঙ্গে মাসকা গ্রামের হুমায়ুন কবির বাকির বিয়ে হয়। বিয়ে পর কিছুদিন ভালো গেলেও স্বামীর শারীরিক সমস্যার কারণে তাদের দাম্পত্যজীবনে কলহ শুরু হয়। এইভাবে কেটে যায় প্রায় ১৭ বছর।
দেড়মাস ধরে দাম্পত্য কলহের মাত্র বেড়েছে যায়। গত ঈদের পরের দিন হাফসা আক্তার তার বাবার বাড়িতে চলে আসে। এক পর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার কাজী অফিসে গিয়ে স্বামীকে তালাক দেন। এই খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পরদিন রাতে বাড়িতে গিয়ে হাফসার মুখে অ্যাসিড ছুঁড়ে মারে। এতে তার মুখের এক পাশ ঝলসে যায়।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
ভুক্তভোগী হাফসা আক্তার জানান, বিয়ের পর থেকে তার স্বামীর শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ে। ১৭ বছর দাম্পত্য জীবনে তাদের কোনো সন্তানাদি নেই। তাকে বার বার বলার পরে সে চিকিৎসা করে না। উল্টো তাকে বেধড়ক মারপিট করে। তার সঙ্গেও বাড়ির লোকজনও তাকে নির্যাতন করতো। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার দেন-দরবার হয়েছে। চেষ্টা করেও তার সঙ্গে সংসার করতে পারছিলাম না। তার পৈশাচিক আচারণের অতিষ্ঠ হয়ে বৃহস্পতিবার তাকে তালাক দেই। এই খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে আমাদের ঘরে রাতের খাবার খাওয়ার সময় ইনজেকশনের সিরিজ দিয়ে আমার নাক-মুখে অ্যাসিড নিক্ষেপ করে সে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় উপজেলা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কল্যাণী হাসান জানায়, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
তিনি আরও জানান, এমন জঘন্যতম ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে কেন্দুয়া থানা ওসি এনামুল হককে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. লুৎফর রহমান বলেন, ওই নারী মুখে দাহ্য জাতীয় পদার্থ ছ্ুেড় মারা হয়েছে। এতে তার মুখের একপাশ ঝলসে গেছে। তবে সেটা অ্যাসিড কিনা এখনও বলা যাচ্ছে না। ওই নারী মমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এ ঘটনায় মামলা হবে বলেও জানান তিনি।
নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি 






















