নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলন জোরদার করতে সবাইকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২৯ মে) বিকালে জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে এই আহ্বান জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই যে আত্মত্যাগ, মায়ের অশ্রুধারা এটা কি বিফলে যাবে? আপনারা কি সেটা বিফলে যেতে দেবেন? এখন জেগে ওঠার সময় এসেছে। জেগে উঠবে সেই তরুণ-যুবক। আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। সমস্ত ভয়-ভীতি সবকিছু তাচ্ছিল্য করে আমাদের দেশমাতৃকার ডাকে, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার লক্ষ্যে এবং তারেক রহমানের ডাকে আসুন আমরা সবাই বেরিয়ে পড়ি। আমরা এমন একটা প্রতিরোধ গড়ে তুলি যাতে সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের রাষ্ট্র, গণতন্ত্রের রাষ্ট্র নির্মাণ করতে সক্ষম হই।
নিউইয়র্কের একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা তথ্য তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদৎ এর দিনে ঢাকার অলি গলি ছিল নীরব, নিথর ও পুরো দেশে নেমেছিল শোকের ছায়া। যেদিন তার লাশ ঢাকায় আনা হয়েছিল সেদিন সেনা সদস্যরা কোনো প্রোটোকল মানেনি। তারা হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। কান্নায় ভেঙে পড়েছিল সবাই। এমনকী দেখছি জানাজায় ইমামকে বলতে ‘আল্লাহ বাংলাদেশকে রক্ষা করো ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জিয়াউর রহমান বাকশাল যোগ দিয়েছিলেন। এটি মিথ্যা কথা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমানকে একটি ফরম দিয়েছিল, তিনি সেই ফরম ফাইলের নিচে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই সময় চালু ছিল সরকারি সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাকশালে যোগ দেয়া বাধ্যতা ছিল, কিন্তু তিনি যোগ দেননি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদ এর নতুন ধারণা দিয়েছিলেন। এটা একটা নতুন সূচনা। মুসলিম ,হিন্দু, সকল ধর্মের জাতি ঐক্যবদ্ধ করতে সকল ভাষাভাষী মানুষের জন্য জাতীয়তাবাদ গড়ে ছিলেন। সেটি পরিচয় আমরা বাংলাদেশী।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্জন্ম হয়েছিল জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই । তিনি বলেছিলেন ‘রাজনীতি হবে কৃষকের, শ্রমিক জনতার। তৃণমূল মূল থেকে রাজনীতিতে উঠে আসবে’। জিয়াউর রহমানের কৃতিত্ব কখনো জাতি অস্বীকার করবে না। আওয়ামী লীগ আজ এই মহান নেতাকে খলনায়ক বানানোর চেষ্টা করেছে। ক্ষণজন্মা মানুষটিকে নিয়ে তারা উল্টাপাল্টা কথা বলে।
জনগণ সিদ্ধান্ত নিবে কে কার বিচার করবে সরকারের প্রতি এমন প্রশ্ন রেখে মহাসচিব বলেন, ইতোমধ্যে বিচার হয়েই গেছে। নির্বাচন দেন না কেন? আমরা বলিনি, আমাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়ে দাও। আমরা বলি, নিরপেক্ষ নির্বাচন দাও, জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। তারা জানে, নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তারা ১০ শতাংশ ভোটও পাবে না।
পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ ও সেনা প্রধান আজিজ আহমেদ প্রসঙ্গ তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, বেনজীরকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরও তাকে পুলিশ প্রধান বানিয়েছিল আওয়ামী লীগ। একজন আজিজ নয়, বেনজীর নয়, হাজার হাজার আজিজ, বেনজীর তৈরি করেছে এই আওয়ামী লীগ। এরা বর্গিতে পরিণত হয়েছে। টাকা পাচার করে দেশকে শূন্য করেছে। লুটপাট, লুণ্ঠন করে সব শেষ করেছে। এ দায় সরকারকেই নিতে হবে। এই দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি জনগণের চাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা চালু করেছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বীরের যে আত্মত্যাগ ও মায়ের অশ্রুধারা কি বিফলে যাবে? না। আসুন আমরা সবাই বেরিয়ে পরি। যারা এ দেশের সংস্কৃতি দেশকে ধ্বংস করে এই দানবদের পরাজিত করতে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করি। সকলের প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব: হাফিজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ড মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, ডা: এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম।
উপস্থিতি ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন হাসান, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ।