নিজস্ব প্রতিবেদক :
বর্তমান সরকারকে নিয়ে কথা বলতে ভালো লাগে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার দাবি, এই সরকার পচে গেছে, একেবারে দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে গেছে। তারা মুখে যতই কথা বলুক, যাই করুক, আসলে এদের কোনও অতিত্ব নেই। তার প্রমাণ আজকে একেক করে বের হচ্ছে সব জায়গায়।
মঙ্গলবার (২৮ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ডামি নির্বাচনে রাতের ভোটে বিজয়ীরা লুটপাট-অপকর্মে জড়িয়েছে। স্বাধীনতার সময় যখন দলমত ছেড়ে যুদ্ধ করে দেশকে মুক্ত করেছি, আজও সেই সময় এসেছে অপকর্মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার। এখন আলোচনায় আসছে আজিজ-বেনজীরের অপকর্ম-লুটপাটের বিষয়। এই আজিজ-বেনজীর কার সৃষ্টি? এটা তো তাদেরই (আওয়ামী লীগ) সৃষ্টি।
ফখরুল বলেন, শাসকগোষ্ঠীর চামড়া মোটা হয়ে গেছে। তাদের যত কথাই বলুন কিছু যায়-আসে না, কর্ণপাত করে না। তাদের লক্ষ্য একটাই, সেটি হলো লুটপাট করা। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এটা করছে, সেই ক্ষমতাকে ভোগ করা ও লুট করার জন্য এটা করছেন।
তিনি বলেন, আজ জেনারেল আজিজের কথা বলা হচ্ছে, সেই আজিজ কার সৃষ্টি? এটা তো আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। কোথা থেকে কোথায় এসেছেন এই আজিজ? বেনজীর আহমেদের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের তথ্য বেরিয়ে আসছে। এই আজিজ-বেনজীরকে তারাই তৈরি করেছে, লালন করেছে। এই এক-দুটো ঘটনা না, চতুরদিকে তাকিয়ে দেখুন, অপকর্মের-লুটপাটের শত শত ঘটনা রয়েছে। সব জায়গায় একই অবস্থা।
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিয়ে সেটাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। অথচ এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রস্তাব আপনাদের ছিল। বেগম খালেদা জিয়া জনগণের আস্থার ওপরে সেটাকে বাস্তবায়ন করেন। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেন। আজ ভোটের অধিকার নেই, ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে রাতের আধারে ভোট অনুষ্ঠিত হয়।
‘তাদের তথাকথিত ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ীরা গ্রামেও লুটপাট করছে। মধ্যরাতের নির্বাচনের নেতারা এখন দেশের বাইরে লুটপাটের টাকা পাচার করছে। এক ভূমিমন্ত্রী দেশের বাইরে ৩৬৫টি ঘরবাড়ি করেছেন। আমাদের বয়স হয়েছে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে মারামারি করতে পারবো না, এখন যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। স্বাধীনতার সময় যখন দলমত ছেড়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, আজ সেই সময় এসে গেছে। আজ দেশ মুক্ত করতে হবে, দেশের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে হবে, পাচারকারীদের রুখে দিতে হবে।’
একটি গল্পের চরিত্রের কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এক লোক ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছেন। তখন পেছন থেকে একজন বললেন, লাভ নেই, তুমি মরতে পারবে না। কারণ তোমার মরার সময় হয় নাই। কিন্তু তার ৪-৫ বছর পর ওই লোক আরাম করে খেয়ে ঘুমাতে গেলে দেখেন তার মাথায় আজরাইল বসে আছেন। তখন ওই ব্যক্তি একবার এদিকে মাথা দেন তো, আবার অন্যদিকে মাথা দেন। তখন আজরাইল বললেন, লাভ নেই। তোমার মরার সময় হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আজকে এই সরকারের যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। ঘুরাঘুরি অনেক করছেন, এখন এসব বন্ধ করে আপনার দাফন-কাফন যেন সঠিকভাবে হয়, আপনাকে যেন মানুষ মনে রাখতে পারে সেইভাবে চিন্তাভাবনা করে বিদায় হন।
দেশকে বাঁচাতে হলে নতুন চিন্তাভাবনা নিয়ে আগাতে হবে বলে যোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যারা দেশকে ভালোবাসেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দানবের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। এখানে চলাও বিপদ, আন্দোলন করাও বিপদ। কিন্তু সাহস করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের চলমান আন্দোলন চলবে, সামনে আরও বেগবান হবে।
প্রকৌশলী নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।