Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে তা বিশ্বের আর কোথাও নেই : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক  : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। অনেকেই চেষ্টা করছে বাংলাদেশকে ভিন্ন পথে নিতে। কিন্তু তারা সফল হবে না। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে তা বিশ্বের আর কোথাও নেই। ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধর্মহীনতার ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে একটি গোষ্ঠী।

শনিবার (২৫ মে) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা-২০২৪ উপলক্ষ্যে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় গুরু ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেছেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে আমরা একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি। আমাদের দেশটাকে আমরা গড়ে তুলতে চাই। এখানে ধর্ম-বর্ণ বলে কোনো কথা নেই। আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। মানুষের সার্বিক উন্নয়নে, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আমরা কাজ করি।

তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের দেশটা এগিয়ে যাক। বাংলাদেশটাতে সব সময় বিভিন্ন ধর্মের মানুষ নিয়েই আমাদের চলা। সেক্ষেত্রে আমি মনে করি, সারা বিশ্বে আমরা একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি সাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশকে গড়ে তোলায়।

শেখ হাসিনা বলেন, এখানে অনেকেই আবার চেষ্টা করে বাংলাদেশকে ভিন্ন পথে নিতে। কিন্তু সেটা নিতে পারবে না। আমাদের মন-মানসিকতা, বাংলাদেশের মানুষের মন খুব উদার। সবাই একসঙ্গে চলতে আমরা পছন্দ করি। সেভাবেই আমরা চলবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক ধর্মেরই মূল কথা যেটা গৌতম বুদ্ধও বলে গেছেন মানবকল্যাণ, জগতের সব প্রাণী সুখী হোক। আমাদেরও সেই কথা। সবাই সুখে থাকবেন, সুন্দর জীবনযাপন করবেন।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ২০ বছর অশান্ত পরিবেশের কারণে ৬৪ হাজার মানুষকে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিতে হয়েছিল। সরকার চায় পাহাড়ে শান্তির পরিবেশ বিরাজ করুক। তাই সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশকে ধর্মীয় রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল খুনিরা। ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে বিপথে নেয়ার চেষ্টা করেছিল ৭৫ এর খুনিরা।

পার্বত্য এলাকার পাশাপাশি সমতলীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান নেপালে বাংলাদেশ একটি বৌদ্ধবিহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৫ আগস্ট হত্যার পর প্রথম যে ঘোষণা দেয়, তখন বাংলাদেশকে একটি ধর্মীয় রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। ঘোষণাও দিয়েছিল খুনিরা, কিন্তু সেটা টেকেনি। বাংলাদেশের মানুষ সেটা নেয়নি। কারণ বাংলাদেশকে জাতির পিতা অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে গড়তে চেয়েছিলেন। আর আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সব ধর্ম বর্ণের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে।

বিএনপি সরকার নববর্ষ ও পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, নতুন শতাব্দীতে আমরা যখন পদার্পণ করব বলে একটি প্রোগ্রাম নিয়ে জাতীয় কমিটি করেছিলাম, খালেদা জিয়া তখন ক্ষমতায়, আমাদের অনুষ্ঠান করতে দেবে না। বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা নাকি হিন্দুয়ানি। অদ্ভুত অদ্ভুত কথা শুনতে হতো। সেই অনুষ্ঠানে বাধা দিল। কিন্তু দেশের মানুষ সেই বাধা মানল না। দেশের মানুষ যেটা ন্যায়সংগত হয়, সেটিই করে। একপ্রকার জোর করেই আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকলাম, তখন হাজার হাজার মানুষ। আমরা দিবসটি উদযাপন করলাম। এখন কিন্তু পহেলা বৈশাখ, নববর্ষ আমরা উদযাপন করি। এই উৎসবটা কিন্তু ধর্ম বর্ণ সবাই মিলে পালন করি। আর প্রত্যেক ধর্মের উৎসবে সব ধর্মের মানুষ কিন্তু এই দেশে অংশ নেয়। পৃথিবীর আর কোনো রাষ্ট্রে কিন্তু এটি আছে বলে জানা নেই।

 

আবহাওয়া

সাবেক মন্ত্রী দস্তগীরের ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে তা বিশ্বের আর কোথাও নেই : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৪:৪৭:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক  : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। অনেকেই চেষ্টা করছে বাংলাদেশকে ভিন্ন পথে নিতে। কিন্তু তারা সফল হবে না। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে তা বিশ্বের আর কোথাও নেই। ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধর্মহীনতার ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে একটি গোষ্ঠী।

শনিবার (২৫ মে) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা-২০২৪ উপলক্ষ্যে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় গুরু ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেছেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে আমরা একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি। আমাদের দেশটাকে আমরা গড়ে তুলতে চাই। এখানে ধর্ম-বর্ণ বলে কোনো কথা নেই। আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। মানুষের সার্বিক উন্নয়নে, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আমরা কাজ করি।

তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের দেশটা এগিয়ে যাক। বাংলাদেশটাতে সব সময় বিভিন্ন ধর্মের মানুষ নিয়েই আমাদের চলা। সেক্ষেত্রে আমি মনে করি, সারা বিশ্বে আমরা একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি সাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশকে গড়ে তোলায়।

শেখ হাসিনা বলেন, এখানে অনেকেই আবার চেষ্টা করে বাংলাদেশকে ভিন্ন পথে নিতে। কিন্তু সেটা নিতে পারবে না। আমাদের মন-মানসিকতা, বাংলাদেশের মানুষের মন খুব উদার। সবাই একসঙ্গে চলতে আমরা পছন্দ করি। সেভাবেই আমরা চলবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক ধর্মেরই মূল কথা যেটা গৌতম বুদ্ধও বলে গেছেন মানবকল্যাণ, জগতের সব প্রাণী সুখী হোক। আমাদেরও সেই কথা। সবাই সুখে থাকবেন, সুন্দর জীবনযাপন করবেন।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ২০ বছর অশান্ত পরিবেশের কারণে ৬৪ হাজার মানুষকে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিতে হয়েছিল। সরকার চায় পাহাড়ে শান্তির পরিবেশ বিরাজ করুক। তাই সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশকে ধর্মীয় রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল খুনিরা। ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে বিপথে নেয়ার চেষ্টা করেছিল ৭৫ এর খুনিরা।

পার্বত্য এলাকার পাশাপাশি সমতলীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান নেপালে বাংলাদেশ একটি বৌদ্ধবিহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৫ আগস্ট হত্যার পর প্রথম যে ঘোষণা দেয়, তখন বাংলাদেশকে একটি ধর্মীয় রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। ঘোষণাও দিয়েছিল খুনিরা, কিন্তু সেটা টেকেনি। বাংলাদেশের মানুষ সেটা নেয়নি। কারণ বাংলাদেশকে জাতির পিতা অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে গড়তে চেয়েছিলেন। আর আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সব ধর্ম বর্ণের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে।

বিএনপি সরকার নববর্ষ ও পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, নতুন শতাব্দীতে আমরা যখন পদার্পণ করব বলে একটি প্রোগ্রাম নিয়ে জাতীয় কমিটি করেছিলাম, খালেদা জিয়া তখন ক্ষমতায়, আমাদের অনুষ্ঠান করতে দেবে না। বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা নাকি হিন্দুয়ানি। অদ্ভুত অদ্ভুত কথা শুনতে হতো। সেই অনুষ্ঠানে বাধা দিল। কিন্তু দেশের মানুষ সেই বাধা মানল না। দেশের মানুষ যেটা ন্যায়সংগত হয়, সেটিই করে। একপ্রকার জোর করেই আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকলাম, তখন হাজার হাজার মানুষ। আমরা দিবসটি উদযাপন করলাম। এখন কিন্তু পহেলা বৈশাখ, নববর্ষ আমরা উদযাপন করি। এই উৎসবটা কিন্তু ধর্ম বর্ণ সবাই মিলে পালন করি। আর প্রত্যেক ধর্মের উৎসবে সব ধর্মের মানুষ কিন্তু এই দেশে অংশ নেয়। পৃথিবীর আর কোনো রাষ্ট্রে কিন্তু এটি আছে বলে জানা নেই।