নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে না থাকলে বিএনপি সমাবেশের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে। অতীতের ইতিহাস তাই বলছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভার শুরুতে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলন এবং নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। আবারও দেশে আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা করছে দলটি। বিএনপির সমাবেশ মানেই অগ্নি সন্ত্রাস ও রক্তপাত। তাদের কাছে গোটা রাজধানীবাসীকে ছেড়ে দেয়া যাবে না।
যারা আন্দোলনে পরাজিত তারা নির্বাচনেও পরাজিত উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের দিন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতাদের দেখেছি পালানোর জন্য অলিগলি খুঁজে পাননি। তারা সমাবেশের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। তাই আমাদের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে, প্রস্তুত থাকতে হবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ভোটারদের ভয় পায়, তাই নির্বাচনে আসে না। এই ভয় থেকে নির্বাচন বয়কট করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থতা, এই ব্যর্থতার পর বিএনপি আবারও আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। অনেকে বলেন পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করছি। আজ কিন্তু আমরা কোনো সমাবেশ করিনি। সমাবেশ আমরা করব, কারণ বিএনপির সমাবেশ মানেই অগ্নিসন্ত্রাস, বিশৃঙ্খলা, রক্তপাত। বিএনপির কাছে গোটা রাজধানীকে যদি উপর ছেড়ে দিই, তাহলে জনগণের জানমাল সুরক্ষায় সমস্যাও হতে পারে। এ কারণে আমাদের থাকতে হয়।
সমাবেশ থেকে এ পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি মারামারি, সংঘর্ষ, বিরোধ কিছু হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা নাম দিয়েছি শান্তি সমাবেশ, আমরা সেভাবেই শুরু ও শেষ করেছি। আমরা যদি মাঠে না থাকি তাহলে অতীতের অভিজ্ঞতা বলে বিএনপির সমাবেশ মানেই নৈরাজ্য, পুলিশ হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, হাসপাতালে হামলা। এটা ২৮ অক্টোবর লক্ষ্য করেছি। আন্দোলন করেছে, আমরা নাকি পালানোর পথ পাব না। আর সেদিন দেখলাম কত যে দ্রুত মঞ্চ থেকে নেমে অলিগলি খুঁজে পাচ্ছিল না, পালাচ্ছিল। পালায় বিএনপি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০০৭ সালে মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে গিয়েছিল। সে নেতার আজও দেশে ফেরার সৎ সাহস হয়নি। যে নেতার নির্দেশে বিএনপি চলে সেটা রিমোট লিডারশিপ। নেতৃত্ব যদি দেশে না থাকে সে আন্দোলন কোনো দিন সফল হয় না। আন্দোলনে ব্যর্থ হলে নির্বাচনেও ব্যর্থ হয়।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে যারা রাজনীতি করে তারা যে কোনো ধরনের অপকর্ম চালাতে পারে। তবে আওয়ামী লীগ সংঘাতে জড়াবে না। সবাইকে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকার আহ্বান জানাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশনকে শান্তিপূর্ণ রেখেছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ধান কাটার মৌসুম। আবার অনেক এলাকায় ঝড় তুফান হয়েছে। তাই ভোট কিছুটা কম পড়েছে। আমার প্রশ্ন, বিএনপির আমলে কোনো নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে?
তিনি বলেন, বিএনপির ভোট বর্জনের আহ্বানকে দলের নেতাকর্মীরা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। দলটি যাদের বহিষ্কার করেছে তাদের মধ্যে অনেকেই নির্বাচিত হয়েছে। কারণ তাদের কোনো নেতাকর্মী দলের সিদ্ধান্ত মানে না।
ভুল আর ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে বিএনপি কিছুই আদায় করতে পারবে না। যতদিন তারা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরবে না, ততদিন তারা জনবিচ্ছিন্ন হবেই বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। এর ক্রেডিট নির্বাচন কমিশন ও আওয়ামী লীগকে দেয়ার কথা জানালেন দলের সাধারণ সম্পাদক।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, দুষ্টু ছেলে ইসরাইল এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নির্দেশও মানে না। তারা জাতিসংঘকে পাত্তা দেয় না। ইসরাইল সারা বিশ্বের জন্য আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় আমাদেরও সতর্ক থাকতে হবে। এই যুদ্ধ আরও ভয়াবহ হতে পারে। ক্ষমতার জন্য আজ বিএনপি এই যুদ্ধ নিয়ে কোন কথা বলে না।
দলীয় কর্মসূচির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ শনিবার (১১ মে) শান্তি উন্নয়ন সমাবেশ করবে। ১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে মহানগর, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করা হবে। আর ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বড় কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে সবাইকে কর্মসূচির কথা জানিয়েছি।
এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাশ, আইন বিষয়ক সম্পাদক নাজিবুল্লাহ হিরু প্রমুখ।