টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি :
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ঘুমন্ত স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে গৃহবধূ জাকিয়া বেগমের (২৫) বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত গৃহবধূ। এদিকে কেটে নেওয়া পুরুষাঙ্গটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এটি দ্রুত জোড়া লাগাতে না পারলে ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে বলে জানান চিকিৎসকেরা।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) ভোরে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নে ঘটনাটি ঘটে।
ভুক্তভোগীর নাম ফিরোজ মিয়া (২৮)। তিনি ওই গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে ও পেশায় একজন এক্সকেভেটর (ভেকু) চালক। জাকিয়া বেগম জিগাতলা গ্রামের মো. জামিলের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, ১২ বছর আগে উপজেলার রাউৎবাড়ী গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে ফিরোজের সঙ্গে জিগাতলা গ্রামের মো. জামিলের মেয়ে জাকিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। এ নিয়ে দফায় দফায় গ্রাম্য শালিস হয়। সম্প্রতি গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান মো. দুলাল হোসেন চকদারের উপস্থিতিতে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানার মাধ্যমে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। সেখানে শালিসে ২০ হাজার টাকা দিতে সম্মত হলেও পরবর্তীতে ৩ লাখ টাকা না দিতে পেরে ফিরোজ স্ত্রীকে আবার নিজ ঘরে ফিরিয়ে নেয়। তারপরও তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে।
মঙ্গলবার রাতে ফিরোজ বাড়ি ফিরে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। বুধবার ভোরে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী জাকিয়া বেগম তার স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে নিয়ে যায়। লজ্জার কারণে বিষয়টি গোপন রাখলেও সকালে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তা প্রকাশ পায়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। পরে তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়ে দেন।
ভুক্তভোগী বলেন, ভোরে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে লিঙ্গ কেটে ফেলে। চিৎকার শুনে পরিবার ও প্রতিবেশীরা এসে আমাকে উদ্ধার করেন। স্ত্রী জাকিয়া পালিয়ে গেছেন।
ভুক্তভোগী ফিরোজের মা ফরিদা বেগম বলেন, সকালে ফিরোজকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে আমি নাতিকে নিয়ে ঘুরতে বের হই। সাড়ে ৯টার দিকে বউ মা আমাকে কল দিয়ে বলে, ‘‘আপনি কোথায়? তাড়াতাড়ি বাড়িতে যান। আপনার ছেলে যেন কেমন করছে।’ ’ এ কথা বলেই সে ফোন কেটে দিয়ে পালিয়ে যায়। আমার ছেলের সঙ্গে যা করেছে এর উপযুক্ত বিচার চাই।’
গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদার বলেন, বিষয়টি জেনেছি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ভুক্তভোগীকে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন স্থানীয়রা। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা চলছিল। এনিয়ে একাধিকবার সালিশ করা হয়েছে।
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার কাজল তালুকদার বলেন, লিঙ্গের পুরো অংশ কেটে ফেলায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ভুক্তভোগীকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ বলেন, ঘটনাটি স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।