Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বর্তমান সরকারকে সরাতে না পারলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বর্তমান সরকারকে সরাতে না পারলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর ইস্কাটন লেডিস ক্লাবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা এবং সরকার বিরোধী আন্দোলনে নিহত হওয়া ও নিখোঁজ নেতাকর্মীদের পরিবারের সম্মানে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে ভার্চুয়ালি অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন আমরা এই পবিত্র রমজান মাসে আল্লাহর কাছে নাজাত কামনা করি। গুনাহ যেন মাফ করে দেন। তিনি যেন সত্যিকারের দেশ প্রেমিক হিসেবে বেঁচে থাকার তৌফিক দেন। এই দানব সরকার থেকে যেন মুক্তি দেন। এ সরকারকে সরাতে না পারলে ধ্বংস হয়ে যাবে দেশ। এদের বিতাড়িত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই আন্দোলন হলো জাতির মুক্তির আন্দোলন। এই দখলদার সরকারকে সরিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, এ আন্দোলনে আমরা সফল হবো ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, সরকার আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। নেতাকর্মীদের গুম করা হচ্ছে, পঙ্গু করা হচ্ছে, খুন করা হচ্ছে। বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রের সব স্তম্ভ আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

প্রতিটি বড় বিজয়ের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হয় উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আমাদের নবীজীও একদিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। আমাদের অত্যাচারিত নিপীড়িত নেতাকর্মীরাও হতাশ নয়। তারা বলছে আপনারা যদি সঠিক দিকনির্দেশনা দেন, আন্দোলনের ডাক দেন, আমরা রাজপথে প্রাণ দিয়ে হলেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, কারাগারের ভেতর ঢাকা মহানগরের হাজারো নেতাকর্মী আমি দেখেছি। পবিত্র রমজানেও তারা বিনাদোষে বন্দি জীবনযাপন করছে। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের অসংখ্য ছেলেদের পঙ্গু করা হয়েছে। বিনা কারণে ধরে নেয়া হচ্ছে। আমাদের ৬০ লাখ নেতাকর্মী ও মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। ২৮ ও ২৯ অক্টোবর ঘিরে ২ দিনে বিএনপির ৩৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। দেশের মানুষ ঠিক মতো বাজার করতে পারে না। তবুও কিন্তু তৃণমূলের নেতাকর্মীরা হতাশ নন। তারা সঠিকভাবে কর্মসূচি ও দিকনির্দেশনা চান।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটি ভয়ঙ্কর দানবের আক্রমণ চলছে আমাদের ওপর। ঢাকা মহানগর বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে কারাগারে যেতে হয়েছিল। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতি মুহুর্তে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে কারাবন্দী অবস্থায়। তারপরও আমাদের আন্দোলন চলছে ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য। আজকে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য নষ্ট করা হয়েছে। ভোটাধিকার ও কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। জনমত ছাড়াই একটি সরকার ক্ষমতায় আছে, যারা জাতির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ঢাকা মহানগর হলো আন্দোলন সংগ্রামের জন্য। আমি আহ্বান জানাবো আসুন আপনার ঢাকা মহানগরীতে বিএনপির সংগঠনকে আরো শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলুন। যাতে বিএনপির জন্য দুর্ভেদ্য হিসেবে শক্তিশালী হয়। এই দুর্গ যেন কেউ ভাঙতে না পারে। সেইভাবে গড়ে তুলতে হবে। এখন সংগঠনের প্রতি সবচেয়ে বেশি মনোনিবেশন করতে হবে। শর্টকাট পদ্ধতিতে কখনো কিছু হয় না। আজকে ফেরাউন, নমরুদ, হিটলারের মতো কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলো যখনই এসেছে তখনই তারা ভেবেছে চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে। আসুন আমরা সকলে শপথ গ্রহণ করি যেন আমরা সবখানেই তাদেরকে পরাজিত করতে পারি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজনীতিবিদদের জন্য জেলখানা সেকেন্ড হোম। আজকে গুম হওয়া পরিবারের সদস্যরা জানেন না তারা জীবিত নাকি মৃত। যার কারণে পারিবারিক সমস্যা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব চাই। বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কারো সাথে আপস করে না। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায় না। সেই আপসহীন নেত্রী যখন বন্দি, তখন গণতন্ত্রও বন্দি। আজকে অন্যায় না করে জেলে যেতে হয়, খুন হতে হয়। সিপাহীদের হাতে মার খেতে হয়।

মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবেদিন, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, গুম হওয়া পরিবারের পক্ষ থেকে বিএনপি নেতা চৌধুরী আলমের ছেলে আবু সাদাত চৌধুরী ইমন, নিহত পারভেজ হোসেনের মেয়ে রিমি, সাজেদুল হক সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি এবং আনোয়ার হোসেনের মেয়ে রাইসা বক্তব্য রাখেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

বর্তমান সরকারকে সরাতে না পারলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে : ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৮:০৮:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বর্তমান সরকারকে সরাতে না পারলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর ইস্কাটন লেডিস ক্লাবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা এবং সরকার বিরোধী আন্দোলনে নিহত হওয়া ও নিখোঁজ নেতাকর্মীদের পরিবারের সম্মানে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে ভার্চুয়ালি অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন আমরা এই পবিত্র রমজান মাসে আল্লাহর কাছে নাজাত কামনা করি। গুনাহ যেন মাফ করে দেন। তিনি যেন সত্যিকারের দেশ প্রেমিক হিসেবে বেঁচে থাকার তৌফিক দেন। এই দানব সরকার থেকে যেন মুক্তি দেন। এ সরকারকে সরাতে না পারলে ধ্বংস হয়ে যাবে দেশ। এদের বিতাড়িত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই আন্দোলন হলো জাতির মুক্তির আন্দোলন। এই দখলদার সরকারকে সরিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, এ আন্দোলনে আমরা সফল হবো ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, সরকার আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। নেতাকর্মীদের গুম করা হচ্ছে, পঙ্গু করা হচ্ছে, খুন করা হচ্ছে। বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রের সব স্তম্ভ আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

প্রতিটি বড় বিজয়ের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হয় উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আমাদের নবীজীও একদিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। আমাদের অত্যাচারিত নিপীড়িত নেতাকর্মীরাও হতাশ নয়। তারা বলছে আপনারা যদি সঠিক দিকনির্দেশনা দেন, আন্দোলনের ডাক দেন, আমরা রাজপথে প্রাণ দিয়ে হলেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, কারাগারের ভেতর ঢাকা মহানগরের হাজারো নেতাকর্মী আমি দেখেছি। পবিত্র রমজানেও তারা বিনাদোষে বন্দি জীবনযাপন করছে। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের অসংখ্য ছেলেদের পঙ্গু করা হয়েছে। বিনা কারণে ধরে নেয়া হচ্ছে। আমাদের ৬০ লাখ নেতাকর্মী ও মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। ২৮ ও ২৯ অক্টোবর ঘিরে ২ দিনে বিএনপির ৩৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। দেশের মানুষ ঠিক মতো বাজার করতে পারে না। তবুও কিন্তু তৃণমূলের নেতাকর্মীরা হতাশ নন। তারা সঠিকভাবে কর্মসূচি ও দিকনির্দেশনা চান।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটি ভয়ঙ্কর দানবের আক্রমণ চলছে আমাদের ওপর। ঢাকা মহানগর বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে কারাগারে যেতে হয়েছিল। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতি মুহুর্তে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে কারাবন্দী অবস্থায়। তারপরও আমাদের আন্দোলন চলছে ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য। আজকে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য নষ্ট করা হয়েছে। ভোটাধিকার ও কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। জনমত ছাড়াই একটি সরকার ক্ষমতায় আছে, যারা জাতির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ঢাকা মহানগর হলো আন্দোলন সংগ্রামের জন্য। আমি আহ্বান জানাবো আসুন আপনার ঢাকা মহানগরীতে বিএনপির সংগঠনকে আরো শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলুন। যাতে বিএনপির জন্য দুর্ভেদ্য হিসেবে শক্তিশালী হয়। এই দুর্গ যেন কেউ ভাঙতে না পারে। সেইভাবে গড়ে তুলতে হবে। এখন সংগঠনের প্রতি সবচেয়ে বেশি মনোনিবেশন করতে হবে। শর্টকাট পদ্ধতিতে কখনো কিছু হয় না। আজকে ফেরাউন, নমরুদ, হিটলারের মতো কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলো যখনই এসেছে তখনই তারা ভেবেছে চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে। আসুন আমরা সকলে শপথ গ্রহণ করি যেন আমরা সবখানেই তাদেরকে পরাজিত করতে পারি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজনীতিবিদদের জন্য জেলখানা সেকেন্ড হোম। আজকে গুম হওয়া পরিবারের সদস্যরা জানেন না তারা জীবিত নাকি মৃত। যার কারণে পারিবারিক সমস্যা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব চাই। বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কারো সাথে আপস করে না। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায় না। সেই আপসহীন নেত্রী যখন বন্দি, তখন গণতন্ত্রও বন্দি। আজকে অন্যায় না করে জেলে যেতে হয়, খুন হতে হয়। সিপাহীদের হাতে মার খেতে হয়।

মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবেদিন, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, গুম হওয়া পরিবারের পক্ষ থেকে বিএনপি নেতা চৌধুরী আলমের ছেলে আবু সাদাত চৌধুরী ইমন, নিহত পারভেজ হোসেনের মেয়ে রিমি, সাজেদুল হক সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি এবং আনোয়ার হোসেনের মেয়ে রাইসা বক্তব্য রাখেন।