Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টাকা লুট ও সক্ষমতা জানান দিতেই কেএনএফ এই হামলা চালিয়েছে: র‌্যাব

বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি  : 

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ননের (র‌্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মূলত টাকা লুট ও কেএনএফের সক্ষমতা জানান দিতেই বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট ও হামলা করা হয়েছে।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে সোনালী ব্যাংকের বান্দরবানের রুমা শাখার অপহৃত ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে উদ্ধার-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

খন্দকার মঈন বলেন, ‘বান্দরবান জেলায় বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংগঠন রয়েছে। তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব, উত্তরসূরিদের অনুপ্রেরণা ও বহির্বিশ্বে তাদের সহযোগীদের সংগঠনটির সক্ষমতা জানান দিতেই রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট, অপহরণ ও হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছে সশস্ত্র কেএনএফ সদস্যরা।’

তাদের আইনের আওতায় আনা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।’

এর আগেও এই কুকি-চিন সদস্যরা টাকার বিনিময়ে জঙ্গী সদস্যদের অস্ত্র পরিচালনা প্রশিক্ষণসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ব্যাংক ম্যানেজার ও অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, রুমা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলা উদ্ধার করা না গেলেও র‌্যাব, সেনাবাহিনী ও পুলিশসহ সবার প্রচেষ্টায় কোনোরূপ ঝুকি না নিয়ে তাদের কয়েকটি কৌশলের একটি ব্যাবহার করে অপহরণের শিকার রুমা সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে সুস্থ-স্বাভাবিক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। গোপনীয়তার কারণে কোন কৌশল অবলম্বন এবং রুমার কোন স্থান থেকে ম্যানেজারকে উদ্ধার করা হয়েছে তা জানাননি তিনি। এছাড়া এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।

খন্দকার আল মঈন বলেন, কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসীরা ১০ থেকে ১২ জন ছিল। তাদের হাতে অস্ত্র ছিল, সবই লুণ্ঠিত। অপহরণের আগে তারা ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে এক কোটি টাকা চায়। তাহলে তাকে ছেড়ে দেবে বলে জানায়। তারা ভল্টের চাবি চায়। কিন্তু ম্যানেজার অত্যন্ত সাহসী, তিনি কৌশলে সব এড়িয়ে যান।

তিনি বলেন, অপহরণের পর বেথেল পাড়ার পাশ দিয়ে ব্যাংক ম্যানেজারকে হাঁটিয়ে গহিন পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর রাত ৩টার দিকে তারা ব্যাংক ম্যানেজারকে খাবার হিসেবে নুডলস দেয়। কখনো তার চোখ বাঁধা হয়েছে, আবার খুলে দেয়া হয়েছে। তারা দুইবার খাবার সরবরাহ করেছে এবং মারধরও করেছে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তার উদ্ধার প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের পরই তাকে উদ্ধারে আমরা মাঠে নামি। আমরা বেশকিছু কৌশল অবলম্বন করেছি। আমরা স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের সহযোগিতা নিয়েছি, যারা পার্বত্য অঞ্চলকে শান্ত রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আমাদের সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য সংস্থা যারা আছে সবার সহযোগিতা নিয়েছি।

খন্দকার মঈন যোগ করেন, গতকাল একটা কৌশল আমাদের কাজে এসেছে। এরপর তারা নিজেদের মোটরসাইকেলের মাঝে বসিয়ে একটি স্থানে ম্যানেজারকে রেখে গেছে। কিন্তু কৌশলগত কারণে সেই জায়গার নাম বলতে চাই না।

এ সময় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ননের (র‌্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন, লে.কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেনসহ র‌্যাবের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ফেনীর তিন নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ এক নম্বর হতে হবে : ফারুক-ই-আজম

টাকা লুট ও সক্ষমতা জানান দিতেই কেএনএফ এই হামলা চালিয়েছে: র‌্যাব

প্রকাশের সময় : ০৩:১৩:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০২৪

বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি  : 

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ননের (র‌্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মূলত টাকা লুট ও কেএনএফের সক্ষমতা জানান দিতেই বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট ও হামলা করা হয়েছে।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে সোনালী ব্যাংকের বান্দরবানের রুমা শাখার অপহৃত ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে উদ্ধার-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

খন্দকার মঈন বলেন, ‘বান্দরবান জেলায় বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংগঠন রয়েছে। তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব, উত্তরসূরিদের অনুপ্রেরণা ও বহির্বিশ্বে তাদের সহযোগীদের সংগঠনটির সক্ষমতা জানান দিতেই রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট, অপহরণ ও হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছে সশস্ত্র কেএনএফ সদস্যরা।’

তাদের আইনের আওতায় আনা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।’

এর আগেও এই কুকি-চিন সদস্যরা টাকার বিনিময়ে জঙ্গী সদস্যদের অস্ত্র পরিচালনা প্রশিক্ষণসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ব্যাংক ম্যানেজার ও অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, রুমা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলা উদ্ধার করা না গেলেও র‌্যাব, সেনাবাহিনী ও পুলিশসহ সবার প্রচেষ্টায় কোনোরূপ ঝুকি না নিয়ে তাদের কয়েকটি কৌশলের একটি ব্যাবহার করে অপহরণের শিকার রুমা সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে সুস্থ-স্বাভাবিক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। গোপনীয়তার কারণে কোন কৌশল অবলম্বন এবং রুমার কোন স্থান থেকে ম্যানেজারকে উদ্ধার করা হয়েছে তা জানাননি তিনি। এছাড়া এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।

খন্দকার আল মঈন বলেন, কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসীরা ১০ থেকে ১২ জন ছিল। তাদের হাতে অস্ত্র ছিল, সবই লুণ্ঠিত। অপহরণের আগে তারা ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে এক কোটি টাকা চায়। তাহলে তাকে ছেড়ে দেবে বলে জানায়। তারা ভল্টের চাবি চায়। কিন্তু ম্যানেজার অত্যন্ত সাহসী, তিনি কৌশলে সব এড়িয়ে যান।

তিনি বলেন, অপহরণের পর বেথেল পাড়ার পাশ দিয়ে ব্যাংক ম্যানেজারকে হাঁটিয়ে গহিন পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর রাত ৩টার দিকে তারা ব্যাংক ম্যানেজারকে খাবার হিসেবে নুডলস দেয়। কখনো তার চোখ বাঁধা হয়েছে, আবার খুলে দেয়া হয়েছে। তারা দুইবার খাবার সরবরাহ করেছে এবং মারধরও করেছে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তার উদ্ধার প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের পরই তাকে উদ্ধারে আমরা মাঠে নামি। আমরা বেশকিছু কৌশল অবলম্বন করেছি। আমরা স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের সহযোগিতা নিয়েছি, যারা পার্বত্য অঞ্চলকে শান্ত রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আমাদের সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য সংস্থা যারা আছে সবার সহযোগিতা নিয়েছি।

খন্দকার মঈন যোগ করেন, গতকাল একটা কৌশল আমাদের কাজে এসেছে। এরপর তারা নিজেদের মোটরসাইকেলের মাঝে বসিয়ে একটি স্থানে ম্যানেজারকে রেখে গেছে। কিন্তু কৌশলগত কারণে সেই জায়গার নাম বলতে চাই না।

এ সময় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ননের (র‌্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন, লে.কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেনসহ র‌্যাবের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।