রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি :
জাতীয় নির্বাচনে যে স্ট্যান্ডার্ড তৈরি হয়েছে তার নিচে নামা নয়, বরং তারচেয়ে আরও উপরে উঠতে চায় নির্বাচন কমিশন বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) দুপুরে রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমিতে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাশেদা বলেন, ভোটারের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা নির্বাচন কমিশনের প্রধান লক্ষ্য। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশন সম্পুর্ণরুপে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে পেরেছে, যা গণতন্ত্রের মূল চর্চা।
তিনি বলেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ভোটাররা আসবেন। তাঁদের ভোটাধিকার নিশ্চিতভাবে প্রয়োগ করবেন এবং বাইরে গিয়ে যাতে তাঁরা বলতে পারেন, আমার ভোটটা আমি দিয়েছি। ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাটাই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।’
রাশেদা সুলতানা বলেন, আমাদের জাতীয় ইলেকশন একটা পর্যায়ে চলে গেছে। মানে ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগ করা যে ক্ষেত্রটা, সেটা চলে গেছে। আমরা চাই আমাদের জাতীয় ইলেকশনে যে একটা পর্যায়ে তৈরি হয়েছে, একটা স্ট্যান্ডার্ড তৈরি হয়েছে। আমরা সেটা থেকে কোনো ক্রমেই নিচে নামতে চাই না। সেটা থেকে আরও ওপরে উঠতে চাই।
ভোট অবাধ-সুষ্ঠু করার কাজটি নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করে ইসি রাশেদা বলেন, ভোট সুষ্ঠু করতে হবে সব বাহিনীকে নিয়ে। সব বাহিনীকে একসঙ্গে এক ধারায় নিয়ে যাওয়াটাই এখন নির্বাচন কমিশনের প্রধান কাজ, যাতে কাজগুলো তারা সুষ্ঠুভাবে করতে পারে। সমন্বয় ছাড়া কখনো এ রকম মহাযজ্ঞ করা সম্ভব নয়।
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন ইসি রাশেদা। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে যে স্ট্যান্ডার্ড তৈরি হয়েছে, তার নিচে আমরা আর নামতে দিতে চাই না। আরও ওপরে উঠতে চাই। ভোটাররা নিশ্চিতভাবে ভোট প্রয়োগ করবেন এবং বাইরে গিয়ে যাতে তাঁরা বলতে পারেন, আমার ভোটটা আমি দিয়েছি। ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাটাই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।
নির্বাচনের বিধিবিধান পরিবর্তন হচ্ছে জানিয়ে রাশেদা সুলতানা বলেন, জামানতের ক্ষেত্রেও কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর জন্য জামানত দিতে হবে ১ লাখ টাকা। অনেকেরই প্রশ্ন, এটা বৃদ্ধি কেন করা হলো? এটা অনেক আগের মতো ২০-৩০ বছর আগের। ২০-৩০ বছর আগে যেটা প্রচলন ছিল, সেটা এখনো থাকবে এটা বাস্তবসম্মত নয়। আমরা কিন্তু এই বাস্তবতা মেনে এই জামানত বৃদ্ধি করেছি।
রাশেদা সুলতানা আরর বলেন, একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর আড়াই শ জন ভোটারের স্বাক্ষর লাগত। আমরা এটা সংশোধন করেছি। কারণ এটা সাংবিধানে সাংঘর্ষিক। একটা ভোটার আগে থেকেই একজনের পক্ষে হয়ে যাবে, মানুষ জেনে যাবে তিনি তাঁর পক্ষের লোক। এটা ভোটারের গোপনীয়তা থাকে না, তাই আমরা এটা তুলে ফেলেছি। চেক ক্রমে আমরা আস্তে আস্তে সব নির্বাচনে বিধিবিধানগুলো তুলে ফেলব।
ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, ইভিএম দিলে সব নির্বাচন করতে পারলে আমরা খুশি হতাম। তবে সক্ষমতা নেই। এখন যে ভালো ইভিএমগুলো আছে, সেগুলো দিয়ে আমরা ইলেকশন গ্রহণের কাজে লাগাতে চেয়েছি। সে ক্ষেত্রে প্রতি বিভাগের ক্ষেত্রে দুটি করে জেলায় ইভিএম ইলেকশন পাচ্ছি। রাজশাহী বিভাগের মধ্যে আমরা সিরাজগঞ্জ ও পাবনায় ইভিএমে নির্বাচন করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেখানে ইভিএমে নির্বাচন হবে, সেখানে সকল পর্যায়ে ইভিএম হবে। আর যেগুলো ব্যালট হবে, সেখানে সকল পর্যায়ে ব্যালটে হবে।
রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ফয়সাল মাহমুদ, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হেমায়েতুল ইসলাম ও রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিভাগের সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি 
























