চবি প্রতিনিধি :
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের পায়ে লুটিয়ে পড়েন ছাত্রলীগ নেতা। উপাচার্যের বাসভবনের নিচে পথরোধ করে পায়ে লুটিয়ে পড়া ছাত্রলীগ নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল।
তিনি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও একাকার গ্রুপের নেতা। এ ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তিনি তা অস্বীকার করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের নিজ বাসভবনের নিচে পথরোধ করে চাকরির জন্য পায়ে লুটিয়ে পড়েন ছাত্রলীগ নেতা। উপাচার্যের পায়ে পড়া মইনুল ইসলাম রাসেল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও একাকার গ্রুপের নেতা। এ ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফুটেজেতে দেখা যায়, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার লিফটে করে বাসার নিচে নামলে লিফটের সামনে থাকা শাখা ছাত্রলীগের কয়েকটি গ্রুপের নেতা উপাচার্যের পথরোধ করে। এসময় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও একাকার গ্রুপের নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল চাকরির জন্য উপাচার্য শিরীণ আখতারের পায়ে পড়েন। একই সময়ে আরেক সহসভাপতি ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স) গ্রুপের নেতা মুজিবর রহমানকেও পায়ে পড়তে দেখা যায়। এ সময় এ দুই নেতার পাশে ছিলেন একই গ্রুপের আরেক সহসভাপতি রোমেল হোসেন। এসময় তারা উপাচার্যের পায়ে ধরে চাকরির জন্য অনুনয় বিনয় করতে দেখা গেছে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায় মইনুল ইসলাম রাসেল পায়ে পড়লে শিরীণ আখতার বলতে থাকেন, আমার চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নাই। আমার পা ছাড়ো। এ ছাড়া তিনি তার বাসার নিচ থেকে চলে যেতে বলেন এবং পুলিশ ডাকবেন বলে জানান। শিরীণ আখতার গাড়িতে উঠে গেলে মইনুল ইসলাম রাসেল তার গাড়ির সামনে এসে পথরোধ করেন।
বুধবার (২০ মার্চ) চবির সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতার চট্টগ্রাম শহরের কাজীর দেউরি এলাকা সংলগ্ন নিজ বাসভবনে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সোমবার (২৫ মার্চ) রাতে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ২০ মার্চ সকালের। তখনো শিরীণ আখতার উপাচার্যের দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। ঘটনার পর ক্যাম্পাসে গিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিরীণ আখতার উপাচার্যের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে তার স্থলাভিষিক্ত হন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের।
এদিকে চাকরির জন্য পায়ে পড়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল বলেন, আমি চাকরির জন্য পায়ে পড়েনি। গত বছর ৩০ জানুয়ারি শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে ভাঙচুরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই কমিটি বাতিল করার জন্য ভিসিকে অনুরোধ করেছি।
এ বিষয়ে চবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ভিসি শিরীণের বাসায় যাওয়া মইনুল ও আরও দুজন আমার কমিটিতে সহ-সভাপতি ছিলেন। তারা যা করেছেন- তা অগ্রহণযোগ্য।সাবেক ভিসি শিরীণ চবিতে নিয়োগের ব্যবসা খুলে বসেছিলেন, যা আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন অডিও ক্লিপের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এজন্য কিছু ছাত্রনেতা ভেবেছিলেন এটি একটি সুযোগ যেভাবেই হোক একটা চাকরি বাগিয়ে নিতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় ভিসি শিরীণের শেষ কার্যদিবসে মইনুল হয়তো ভেবেছিলেন এটাই শেষ সুযোগ। তাই তিনি মরিয়া হয়ে ভিসির পায়ে পড়েন, যা একজন ছাত্রনেতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে লজ্জাজনক।
ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স) গ্রুপের নেতা মুজিবর রহমান বলেন, তদন্ত কমিটির বিষয়ে কথা বলতে আমি মইনুলের সঙ্গে ভিসি ম্যামের বাসায় গিয়েছিলাম।
নিয়োগের বিষয়ে এর আগে গণমাধ্যমকে শিরীণ আখতার বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে জিম্মি করে এসব নিয়োগে সই নিয়েছেন। পায়ে ধরার বিষয়ে জানতে চেয়ে শিরীণ আখতারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
চবি প্রতিনিধি 























