Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মায়ের কাছে ফোন করেই ধরা শিশুচোর দম্পতি

মায়ের কোলে রিভা মনি

নিঃসন্তান দম্পতি সোনালী-হৃদয়। দম্পতির নামের সঙ্গে সুখের রয়েছে দারুণ বৈরিতা। নিঃসন্তান এই দম্পতি অন্যের ঘর আঁধারে ঠেলে নিজের ঘরে ছড়াতে চেয়েছিলেন আলোর বিচ্ছুরণ। এজন্য পাঁচ মাস বয়সি শিশু রিভা মনিকে চুরি করতে কষেছিলেন ভয়ানক ছক। কিন্তু সেই ছক ধরা পড়েছে একটা ফোনকলের কারণে। মায়ের কাছে ফোন করে ধরা পড়েছেন সোনালী-হৃদয় দম্পতি।

গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে চুরি যাওয়া পাঁচ মাস বয়সী শিশু রিভা মনি অবশেষে উদ্ধার হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের মিরদেওহাটা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।

গাজীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) মো. আল মামুন জানান, শিশু রিভা মনিকে তুলে নেওয়ার সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করেই সোনালী-হৃদয় দম্পতি শ্রীপুরে বাসা ভাড়া নেন। সেখানে যে নাম-ঠিকানা দেওয়া হয়েছিল তা-ও ভুয়া। তারা গোপনে একটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন, যার নম্বর কাউকে দেওয়া হয়নি।

মাসখানেক আগে তাদের মোবাইল ফোনে ব্যালান্স না থাকায় প্রতিবেশী এক নারীর মোবাইল থেকে ফোন করেছিলেন সোনালী। ফোন করার ওই নম্বরটিও মুছে দিয়েছিলেন তিনি। তদন্তে বিষয়টি জেনে মুছে ফেলা নম্বর খুঁজে বের করতে অভিযানে নামে পুলিশ। ওই মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে টাঙ্গাইলের সখীপুরের হাতিয়া রাজাবাড়ি গ্রামে অভিযান চালিয়ে সোনালী আক্তারের মাকে আটক করা হয়।

পরে তার (সোনালী) মায়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই জেলার মির্জাপুরের মিরদেওয়াহাটা গ্রামের আবদুস সালামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। ওই সময় গ্রেপ্তার করা হয় সোনালী আক্তার (২৩) ও স্বামী হৃদয় মাহমুদকে (৩১)।

গ্রেপ্তারের পর ওই দম্পতি পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, শিশুটিকে চুরির উদ্দেশ্য নিয়েই দেড় মাস আগে তারা বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। আর বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় পরিচয়-ঠিকানা যা দেন, তার সবই ভুয়া। হৃদয় মাহমুদ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের শশধরপটি গ্রামের বাদল মিয়ার ছেলে। তার স্ত্রী সোনালী আক্তারের বাড়ি একই জেলার সখীপুরের হাতিয়া রাজাবাড়ি গ্রামে।

আরও পড়ুন : বিয়েতে বরের বদলে ছোট ভাই: ধরা খেলেন পাত্রী পক্ষের হাতে

শিশুটিকে উদ্ধারের পর বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার তার কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, হৃদয় ও সোনালী দম্পতিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। ফলে আদালতে তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে।

এদিকে শিশু রিভা মনিকে কোলে ফিরে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা লাইজু বেগম। তিনি বলেন, কলিজা ফিরা পাইছি। আল্লাহ আমার রিভা মনিরে ফিরাইয়া দিছে। ওরে ফিরা না পাইলে বাঁচতে পারতাম না আমি।

এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে শিশুটিকে পাশের কক্ষের ভাড়াটিয়া সোনালীর কোলে দিয়ে গোসলে গিয়েছিলেন লাইজু। মিনিট বিশেক পর ফিরে দেখেন শিশুসহ সোনালী নেই। এই ঘটনায় ওই দিন রাতেই শ্রীপুর থানায় মামলা করেন তিনি।

শ্রীপুর থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, চুরির পর যেন ধরা না পড়েন এ জন্য টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের মিরদেওহাটা গ্রামে সপ্তাহখানেক আগে বাসা ভাড়া নিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

মায়ের কাছে ফোন করেই ধরা শিশুচোর দম্পতি

প্রকাশের সময় : ০৮:০০:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর ২০২০

নিঃসন্তান দম্পতি সোনালী-হৃদয়। দম্পতির নামের সঙ্গে সুখের রয়েছে দারুণ বৈরিতা। নিঃসন্তান এই দম্পতি অন্যের ঘর আঁধারে ঠেলে নিজের ঘরে ছড়াতে চেয়েছিলেন আলোর বিচ্ছুরণ। এজন্য পাঁচ মাস বয়সি শিশু রিভা মনিকে চুরি করতে কষেছিলেন ভয়ানক ছক। কিন্তু সেই ছক ধরা পড়েছে একটা ফোনকলের কারণে। মায়ের কাছে ফোন করে ধরা পড়েছেন সোনালী-হৃদয় দম্পতি।

গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে চুরি যাওয়া পাঁচ মাস বয়সী শিশু রিভা মনি অবশেষে উদ্ধার হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের মিরদেওহাটা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।

গাজীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) মো. আল মামুন জানান, শিশু রিভা মনিকে তুলে নেওয়ার সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করেই সোনালী-হৃদয় দম্পতি শ্রীপুরে বাসা ভাড়া নেন। সেখানে যে নাম-ঠিকানা দেওয়া হয়েছিল তা-ও ভুয়া। তারা গোপনে একটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন, যার নম্বর কাউকে দেওয়া হয়নি।

মাসখানেক আগে তাদের মোবাইল ফোনে ব্যালান্স না থাকায় প্রতিবেশী এক নারীর মোবাইল থেকে ফোন করেছিলেন সোনালী। ফোন করার ওই নম্বরটিও মুছে দিয়েছিলেন তিনি। তদন্তে বিষয়টি জেনে মুছে ফেলা নম্বর খুঁজে বের করতে অভিযানে নামে পুলিশ। ওই মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে টাঙ্গাইলের সখীপুরের হাতিয়া রাজাবাড়ি গ্রামে অভিযান চালিয়ে সোনালী আক্তারের মাকে আটক করা হয়।

পরে তার (সোনালী) মায়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই জেলার মির্জাপুরের মিরদেওয়াহাটা গ্রামের আবদুস সালামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। ওই সময় গ্রেপ্তার করা হয় সোনালী আক্তার (২৩) ও স্বামী হৃদয় মাহমুদকে (৩১)।

গ্রেপ্তারের পর ওই দম্পতি পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, শিশুটিকে চুরির উদ্দেশ্য নিয়েই দেড় মাস আগে তারা বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। আর বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় পরিচয়-ঠিকানা যা দেন, তার সবই ভুয়া। হৃদয় মাহমুদ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের শশধরপটি গ্রামের বাদল মিয়ার ছেলে। তার স্ত্রী সোনালী আক্তারের বাড়ি একই জেলার সখীপুরের হাতিয়া রাজাবাড়ি গ্রামে।

আরও পড়ুন : বিয়েতে বরের বদলে ছোট ভাই: ধরা খেলেন পাত্রী পক্ষের হাতে

শিশুটিকে উদ্ধারের পর বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার তার কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, হৃদয় ও সোনালী দম্পতিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। ফলে আদালতে তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে।

এদিকে শিশু রিভা মনিকে কোলে ফিরে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা লাইজু বেগম। তিনি বলেন, কলিজা ফিরা পাইছি। আল্লাহ আমার রিভা মনিরে ফিরাইয়া দিছে। ওরে ফিরা না পাইলে বাঁচতে পারতাম না আমি।

এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে শিশুটিকে পাশের কক্ষের ভাড়াটিয়া সোনালীর কোলে দিয়ে গোসলে গিয়েছিলেন লাইজু। মিনিট বিশেক পর ফিরে দেখেন শিশুসহ সোনালী নেই। এই ঘটনায় ওই দিন রাতেই শ্রীপুর থানায় মামলা করেন তিনি।

শ্রীপুর থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, চুরির পর যেন ধরা না পড়েন এ জন্য টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের মিরদেওহাটা গ্রামে সপ্তাহখানেক আগে বাসা ভাড়া নিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা।