Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশকে বিশাল ব্যবধানে হারের লজ্জা দিলো শ্রীলঙ্কা

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৪:০৪:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪
  • ১৮৯ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

শ্রীলঙ্কার দেয়া ৫১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সর্বনাশটা রোববার (২৪ মার্চ) ডেকে এনেছিল টাইগাররা। ৪৭ রান তুলতেই হারিয়েছিল ৫ উইকেট। এরপর শেষবেলায় এবং সোমবার (২৫ মার্চ) চতুর্থ দিনে ছোট ছোট কয়েকটি জুটিতে হার ঠেকিয়ে রেখেছিলেন মুমিনুল হক। তবে শেষ পর্যন্ত বিফলেই গেল তাঁর এই প্রতিরোধ।

৭ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান তুলে আজ মধ্যাহবিরতিতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশন শুরুর পর স্কোরবোর্ডে আর ৫৩ রান যোগ হতেই বাকি ৩ উইকেট হারিয়েছে টাইগাররা। ১৮২ রানে অলআউট হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হল স্বাগতিকরা।

রানের হিসেব করলে টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার ৪৬৫ রানে। সেটাও বাংলাদেশ হেরেছে ২০০৯ সালে জানুয়ারি মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেখানে বাংলাদেশ যদি এবার লঙ্কানদের বিপক্ষে ৪৭ রানেই অলআউট হতো, তাহলে সেটা হতো বাংলাদেশের টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানে হার। সেখানে আজ চতুর্থ দিন তুলনামূলক ভালো ব্যাটিং করায় বাংলাদেশের পরাজয়ের ব্যবধানটা ৪০০ বা তার বেশি রানের হয়নি। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৮২ রানে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৮৭ রান করে অপরাজিত থাকেন মুমিনুল।

দ্বিতীয় ইনিংসে রান তাড়া করতে নেমে গতকাল তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ খেলেছে ১৩ ওভার। এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থেকে মুমিনুলকে দেখতে হয়েছে তিন সতীর্থের বিদায়। সেখানে আজ চতুর্থ দিনের তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এবার আউট হয়েছেন মুমিনুলের আরেক সতীর্থ তাইজুল ইসলাম। ইনিংসের ১৬তম ওভারের প্রথম বলে তাইজুলকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন লঙ্কান পেসার কাসুন রাজিথা। মাঠের আম্পায়ার আউট ঘোষণা করলে রিভিউ নেন তাইজুল। তবে বাংলাদেশের এই রিভিউ হয়েছে নষ্ট। স্বাগতিকদের স্কোর হয়ে য্য়া ১৫.১ ওভারে ৬ উইকেটে ৫১ রান। এমন পরিস্থিতিতে হুড়মুড়িয়ে প্রথম সেশনে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকত না। তবে মুমিনুলের ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে লঙ্কানদের অপেক্ষা বাড়তেই থাকে। আট নম্বরে নামা মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ১০৫ বলে ৬৬ রানের জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন মুমিনুল। বেশি আক্রমণাত্মক হতে গিয়েই নিজের উইকেট দিয়ে আসেন মিরাজ। ৩৩তম ওভারের তৃতীয় বলে রাজিথাকে ড্রাইভ করতে যান মিরাজ। এজ হওয়া বল সেকেন্ড স্লিপে ধরেন লঙ্কান অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। ৫০ বলে ৬ চারে ৩৩ রান করে আউট হন মিরাজ। ।

মিরাজের বিদায়ে বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যায় ৩২.৩ ওভারে ৭ উইকেটে ১১৭ রান। এরপর ৯ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন শরীফুল ইসলাম। শরীফুলকে নিয়ে ৮১ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়তে অবদান রাখেন মুমিনুল। এই জুটি গড়ার পথেই টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৭তম ফিফটি তুলে নেন মুমিনুল। শরীফুলকে কট এন্ড বোল্ডের ফাঁদে ফেলে জুটি ভাঙেন রাজিথা।

শরীফুলের আউট হলে বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যায় ৪৫.৫ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৪ রান। ঠিক তার পরের বলে খালেদ আহমেদের উইকেট তুলে নেন রাজিথা। ৪৬তম ওভারের শেষ বলে রাজিথাকে খোঁচা মারতে গেলে এজ হওয়া বল উইকেটের পেছনে ক্যাচ ধরেন কুশল মেন্ডিস। তাতে টেস্ট ক্যারিয়ারে এক ইনিংসে দ্বিতীয়বারের মতো ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন রাজিথা। এরপর ৫০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে নাহিদ রানাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসের সমাপ্তি টেনেছেন লাহিরু কুমারা। কুমারার বাউন্সারে হতবুদ্ধি হয়ে ব্যাটে বল লেগে যায় রানার। এজ হওয়া বল ক্যাচ ধরে লঙ্কান অধিনায়ক ধনাঞ্জয়ার উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো। লঙ্কান বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং করেন রাজিথা। লঙ্কান পেসার ৫৬ রানে নেন ৫ উইকেট।

ম্যাচসেরা হয়েছেন ধনাঞ্জয়া। দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। প্রথম ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১০২ ও ১০৮ রান করেন লঙ্কান অধিনায়ক।

এর আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম ইনিংসে ২৮০ রানে অলআউট হয়েছে লঙ্কানরা। কামিন্দু মেন্ডিস, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা দুজনেই করেন ১০২ রান। বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে ১৮৮ রানে অলআউট হয়েছে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন তাইজুল ইসলাম। ৯২ রানে এগিয়ে থাকা লঙ্কানরা দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১৮ রানে অলআউট হয়েছে। কামিন্দুর টেস্ট ক্যারিয়ারসেরা ১৬৪ রানের ইনিংসটিই সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংসের সর্বোচ্চ রান। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

বাংলাদেশকে বিশাল ব্যবধানে হারের লজ্জা দিলো শ্রীলঙ্কা

প্রকাশের সময় : ০৪:০৪:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪

স্পোর্টস ডেস্ক : 

শ্রীলঙ্কার দেয়া ৫১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সর্বনাশটা রোববার (২৪ মার্চ) ডেকে এনেছিল টাইগাররা। ৪৭ রান তুলতেই হারিয়েছিল ৫ উইকেট। এরপর শেষবেলায় এবং সোমবার (২৫ মার্চ) চতুর্থ দিনে ছোট ছোট কয়েকটি জুটিতে হার ঠেকিয়ে রেখেছিলেন মুমিনুল হক। তবে শেষ পর্যন্ত বিফলেই গেল তাঁর এই প্রতিরোধ।

৭ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান তুলে আজ মধ্যাহবিরতিতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশন শুরুর পর স্কোরবোর্ডে আর ৫৩ রান যোগ হতেই বাকি ৩ উইকেট হারিয়েছে টাইগাররা। ১৮২ রানে অলআউট হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হল স্বাগতিকরা।

রানের হিসেব করলে টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার ৪৬৫ রানে। সেটাও বাংলাদেশ হেরেছে ২০০৯ সালে জানুয়ারি মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেখানে বাংলাদেশ যদি এবার লঙ্কানদের বিপক্ষে ৪৭ রানেই অলআউট হতো, তাহলে সেটা হতো বাংলাদেশের টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানে হার। সেখানে আজ চতুর্থ দিন তুলনামূলক ভালো ব্যাটিং করায় বাংলাদেশের পরাজয়ের ব্যবধানটা ৪০০ বা তার বেশি রানের হয়নি। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৮২ রানে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৮৭ রান করে অপরাজিত থাকেন মুমিনুল।

দ্বিতীয় ইনিংসে রান তাড়া করতে নেমে গতকাল তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ খেলেছে ১৩ ওভার। এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থেকে মুমিনুলকে দেখতে হয়েছে তিন সতীর্থের বিদায়। সেখানে আজ চতুর্থ দিনের তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এবার আউট হয়েছেন মুমিনুলের আরেক সতীর্থ তাইজুল ইসলাম। ইনিংসের ১৬তম ওভারের প্রথম বলে তাইজুলকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন লঙ্কান পেসার কাসুন রাজিথা। মাঠের আম্পায়ার আউট ঘোষণা করলে রিভিউ নেন তাইজুল। তবে বাংলাদেশের এই রিভিউ হয়েছে নষ্ট। স্বাগতিকদের স্কোর হয়ে য্য়া ১৫.১ ওভারে ৬ উইকেটে ৫১ রান। এমন পরিস্থিতিতে হুড়মুড়িয়ে প্রথম সেশনে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকত না। তবে মুমিনুলের ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে লঙ্কানদের অপেক্ষা বাড়তেই থাকে। আট নম্বরে নামা মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ১০৫ বলে ৬৬ রানের জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন মুমিনুল। বেশি আক্রমণাত্মক হতে গিয়েই নিজের উইকেট দিয়ে আসেন মিরাজ। ৩৩তম ওভারের তৃতীয় বলে রাজিথাকে ড্রাইভ করতে যান মিরাজ। এজ হওয়া বল সেকেন্ড স্লিপে ধরেন লঙ্কান অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। ৫০ বলে ৬ চারে ৩৩ রান করে আউট হন মিরাজ। ।

মিরাজের বিদায়ে বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যায় ৩২.৩ ওভারে ৭ উইকেটে ১১৭ রান। এরপর ৯ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন শরীফুল ইসলাম। শরীফুলকে নিয়ে ৮১ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়তে অবদান রাখেন মুমিনুল। এই জুটি গড়ার পথেই টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৭তম ফিফটি তুলে নেন মুমিনুল। শরীফুলকে কট এন্ড বোল্ডের ফাঁদে ফেলে জুটি ভাঙেন রাজিথা।

শরীফুলের আউট হলে বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যায় ৪৫.৫ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৪ রান। ঠিক তার পরের বলে খালেদ আহমেদের উইকেট তুলে নেন রাজিথা। ৪৬তম ওভারের শেষ বলে রাজিথাকে খোঁচা মারতে গেলে এজ হওয়া বল উইকেটের পেছনে ক্যাচ ধরেন কুশল মেন্ডিস। তাতে টেস্ট ক্যারিয়ারে এক ইনিংসে দ্বিতীয়বারের মতো ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন রাজিথা। এরপর ৫০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে নাহিদ রানাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসের সমাপ্তি টেনেছেন লাহিরু কুমারা। কুমারার বাউন্সারে হতবুদ্ধি হয়ে ব্যাটে বল লেগে যায় রানার। এজ হওয়া বল ক্যাচ ধরে লঙ্কান অধিনায়ক ধনাঞ্জয়ার উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো। লঙ্কান বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং করেন রাজিথা। লঙ্কান পেসার ৫৬ রানে নেন ৫ উইকেট।

ম্যাচসেরা হয়েছেন ধনাঞ্জয়া। দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। প্রথম ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১০২ ও ১০৮ রান করেন লঙ্কান অধিনায়ক।

এর আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম ইনিংসে ২৮০ রানে অলআউট হয়েছে লঙ্কানরা। কামিন্দু মেন্ডিস, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা দুজনেই করেন ১০২ রান। বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে ১৮৮ রানে অলআউট হয়েছে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন তাইজুল ইসলাম। ৯২ রানে এগিয়ে থাকা লঙ্কানরা দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১৮ রানে অলআউট হয়েছে। কামিন্দুর টেস্ট ক্যারিয়ারসেরা ১৬৪ রানের ইনিংসটিই সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংসের সর্বোচ্চ রান। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।