চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি :
ধুমধাম করে বিয়ের মাত্র দুইদিন যেতে না যেতেই বাসায় চিরকুট লেখে পুরাতন প্রেমিকের সাথে পালিয়ে গেছেন নববধূ। তাই রাগে ক্ষোভে অপমানে শ্বশুর বাড়িতে আত্মহত্যা করেছেন স্বামী ইবাদ খান।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়ায় নববধূর ভাড়া বাসার একটি কক্ষে বিষপানে আত্মহত্যা করেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) মরদেহের দাফন সম্পন্ন হয়।
নিহত ইবাদ খান চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য সুলতানা বেগম ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম খানের ছেলে। তিনি একটি প্রাইভেট হাসপাতালের মার্কেটিংয়ের কাজ করতেন। পরিবারে দুই ভাই বোনের মধ্যে তিনি বড়।
স্থানীয়রা জানান, পারিবারিকভাবে ইবাদ খানের সাথে গত ৮ মার্চ বিআইডব্লিউটিএ’র চাঁদপুর শাখার পরিদর্শক পাইলট দিদারুল আলমের মেয়ে খাদিজা আক্তারের বিয়ে বেশ ধুমধাম করেই হয়েছিলো। তবে বিয়ের রাতেই অর্থাৎ বাসরঘরে স্বামী ইবাদ খানকে কাছে আসতে দেননি এই নববধূ। যা পরদিন সকালেই ইবাদ তার মা সুলতানা বেগমকে জানিয়েছিলেন। যদিও ইবাদকে তার মা সব ঠিক হয়ে যাবে বলে ধৈর্য ধরে থাকতে বলে। কিন্তু একই ঘটনা পরবর্তী দিনগুলোতেও ঘটতে থাকে ।
স্থানীয়রা জানান, খাদিজা আক্তার নামের এই নববধূ সোমবার (১১ মার্চ) স্বামীর বাড়িতে আসার কথা থাকলেও নিজেকে অসুস্থ দাবি করে পরদিন মঙ্গলবার আসবে বলে জানায়। কিন্তু সোমবার রাতেই তিনি একটি চিরকুট লিখে তার পুরাতন প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যান। ইবাদ খান মঙ্গলবার (১২ মার্চ) তার শ্বশুর বাড়িতে থেকে বাবা-মাকে বিষয়টি অবগত করে। খবর পেয়ে বিকেলে দ্রুত ইবাদের বাবা খোরশেদ আলম খান ও মা সুলতানা বেগম ছেলের শ্বশুর বাড়িতে যান। খাদিজার বাবা ইবাদের বাবাকে থানায় গিয়ে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। এ সময় ইবাদ খান অন্য কক্ষে ছিলেন। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে হঠাৎ চেঁচামেচির শব্দ শুনে ওই কক্ষে গিয়ে দেখেন ইবাদ বিষ খেয়ে ছটফট করছে। এরপর হাসপাতালে নেওয়ার আগেই ইবাদ মারা যায়।
ইবাদ খানের মা সুলতানা বেগম বলেন, আমার ছেলের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে নিজ বাড়ির কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। নববধূ খাদিজা আক্তারের কারণে আজকে এভাবে ঘটনা ঘটেছে। আমরা এর উপযুক্ত বিচার চাই।
এ ব্যাপারে খাদিজা আক্তারের বাবা বিআইডব্লিউটিএ’র চাঁদপুর শাখার পরিদর্শক পাইলট দিদারুল আলম মোবাইল ফোনে বলেন, মেয়ে কোথায়, কী কারণে গেছে আমার জানা নেই। জামাই কী কারণে আত্মহত্যা করছে তাও আমি জানি না। আমি অসুস্থ। পরে কথা বলব।
চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম বলেন, ইবাদ শ্বশুরবাড়িতে মারা গেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ইঁদুর মারা বিষ খেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ তার মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। তার মৃত্যুর বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। স্ত্রী বিয়ের পাঁচদিনের মাথায় প্রেমিকের সঙ্গে নববধূ চলে যাওয়ার কারণে ইবাদ আত্মহত্যা করেছে এমন অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু ইবাদের পরিবার এখন পর্যন্ত সেই বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে তারা অভিযোগ করবে বলে জানিয়েছে।