বিনোদন ডেস্ক :
মারা গেছেন সংগীতশিল্পী সাদী মোহাম্মদ (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বুধবার (১৩ মার্চ) রাত ৯টার দিকে সাদীর মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়। খবরটি নিশ্চিত করেন শিবলী মোহম্মদ।
তিনি বলেন, ‘আমি কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। ভাই আমার আর নেই। আর বেঁচে নেই।’ শিবলী জানান, আজও সাদী তানপুরা দিয়ে গানের অনুশীলন করেছেন। সন্ধ্যার পর হঠাৎ দেখেন ঘরের দরজা বন্ধ। তখন দরজা ভেঙে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেন।
২০২৩ সালের জুলাই মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ (৯৬) মারা যান। এরপর থেকেই মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন সাদী। বিষয়টি নিয়ে তাদের ঘনিষ্ঠজন নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নিপা বলেন, ‘মা মারা যাওয়ার পর থেকেই একটা ট্রমার মধ্যে চলে যান শিল্পী সাদী মহম্মদ। ঠিক স্বাভাবিক ছিলেন না মানসিকভাবে। নানা সময়ে জীবন নিয়ে আক্ষেপ করতেন।’
সাদী মোহাম্মদ রবীন্দ্রসঙ্গীতের ওপরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন। ২০০৭ সালে আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তার শ্রাবণ আকাশে ও ২০১২ সালে তার সার্থক জনম আমার অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। এছাড়াও তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সাদী মোহাম্মদ মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে শহীদ পিতার সন্তান। তার বাবার নাম শহীদ সলিমউল্লাহ। ১৯৭১ সালে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের সি-১২/১০ বাড়িটি ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা সলিম উল্লাহর বাড়িতে নিয়মিত বৈঠকে আসতেন দলের শীর্ষ নেতারা, আসতেন বঙ্গবন্ধুপুত্র শহীদ শেখ কামালও।
একাত্তরের ২৩ মার্চ তাজমহল রোডের সেই বাড়িতে সেজ ছেলে সাদি সাদী মোহাম্মদের আঁকা বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান বাবা সলিমউল্লাহ, সেই পতাকা সেলাই করে দিয়েছিলেন সাদী-শিবলীর মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ।
সেই পতাকা ওড়ানোর সূত্র ধরে একাত্তরের ২৬ মার্চ অবাঙালি বিহারি ও পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে সলিমউল্লাহর বাড়ি। পুড়িয়ে দেয়া হয় পুরো বাড়ি, গুলি করে মারা হয় সলিমউল্লাহকে।
গত বছরের জুলাই মাসে সাদী মোহাম্মদের মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ মারা যান। এরপর থেকেই নাকি নানা কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন এই সংগীত তারকা।
বিনোদন ডেস্ক 
























