Dhaka মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৯৪৮ সালেই দেশ স্বাধীনের সিদ্ধান্ত নেন বঙ্গবন্ধু : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

১৯৪৮ সালে পাকিস্তানিরা বাঙালির মাতৃভাষার অধিকার কেড়ে নেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়ার পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, দেশের স্বাধীনতার কথা আপনি কখন থেকে চিন্তা করেন। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘১৯৪৮ সালে যখন মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার পাকিস্তানিরা কেড়ে নিয়েছিল, সেদিন থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ওদের সঙ্গে আর থাকবো না’। ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই কিন্তু স্বাধীনতা। একজন নেতা নিজের জীবনের সব বিসর্জন দিয়ে একটি জাতির জন্য দিনের পর দিন কারাবরণ করেছেন। জেল-জুলুম অত্যাচার সহ্য করেছেন। যে লক্ষ্য তিনি স্থির করেছিলেন, সেই লক্ষ্য সামনে রেখে একটার পর একটা পদক্ষেপ নিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি চুয়ান্ন সালে নির্বাচনও করেছেন, ছাপ্পান্ন সালে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। নিয়ম মেনেই কিন্তু এগিয়ে গেছেন। একটি লক্ষ্য স্থির রেখে। যেটা কখনো তিনি মুখে উচ্চারণ করেননি। কিন্তু একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা বা তাদের সংগঠিত করা, ঐক্যবদ্ধ করা এটা একটা কঠিন কাজ ছিল। সেই কঠিন কাজ তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করে যান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটাই আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। যে কাজটা তিনি করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাকে করতে দেওয়া হয়নি। ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। কাজেই এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে।

“যারা জয়বাংলা স্লোগানে বিশ্বাস করে না, ৭ মার্চের ভাষণকে যারা প্রেরণা বলে মনে করে না, তারা স্বাধীন বাংলাদেশই চায় না। তারা দেশের উন্নয়ন চায় না। দেশের মানুষের অর্থসামাজিক উন্নতি চায় না। তাদের কেন মানুষ ভোট দেবে। সেজন্যই তারা বারবার ইলেকশন বানচাল করে, বারবার অগ্নি সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়।”

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য, দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করবার জন্য, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এখন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য সবাইকে কাজ করে যেতে হবে।

দেশকে ধ্বংস করতে বিএনপি-জামায়াতের যে কোনো পদক্ষেপ ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার জন্য দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন বর্জনের পর বিএনপি-জামায়াত চক্র অগ্নিসংযোগ ও জঙ্গিবাদের মাধ্যমে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে দেশকে ধ্বংস করতে নেমেছে। তারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মাধ্যমে দেশকে ধ্বংস করতে এবং জনদুর্ভোগ বাড়াতে চায়।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে তারা (বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট) ৩০টি আসন পেয়েছিল। তার পরেই তো তাদের আরও খারাপ অবস্থা। এখন তারা নির্বাচন না করে নির্বাচন বানচাল করতে এবং দেশকে ধ্বংস করতে নেমেছে। সে বিষয়ে দেশের মানুষকে সজাগ থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে বিশ্বাস করে না, ৭ মার্চের ভাষণকে প্রেরণা বলে মনে করে না, তার অর্থ তারা স্বাধীন বাংলাদেশই চায় না। বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়ন তথা তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন তারা চায় না। কাজেই তাদের মানুষ কেন ভোট দেবে।

তিনি বলেন, আজকে আমরা সরকারে আছি, জনগণ বারবার আমাদের ভোট দিয়েছে, দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আর্থসামাজিক উন্নতিও হচ্ছে। যে দলটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের হাতে গড়ে তুলেছেন, যে দল দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছে, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিজয় এনে দিয়েছে, সেই দলই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই দল ক্ষমতায় এলে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়, দেশের উন্নতি হয়। যে যত কথাই বলুক, এই বাস্তবতা সবাইকে স্বীকার করতে হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আসলে যার দাঁত তার ব্যথা, যে কষ্ট করে সে বোঝে, মানুষের জন্য তার কী করতে হবে। আজকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে রেখে যান। কিন্তু এর পরের ২৯ বছরে দেশ কিন্তু এক কদমও আগে বাড়েনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই দেশ সামনের দিকে এগিয়ে গেছে এবং ইনশাল্লাহ্ একদিন জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো।

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, যারা জয় বাংলার স্লোগান চায় না, ৭ মার্চের ভাষণে যারা বিশ্বাস করে না, তারা দেশের উন্নয়ন চায় না। তাদের কেন মানুষ ভোট দেবে? জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। দীর্ঘ ২৪ বছরের সংগ্রাম এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। সংগ্রামের পথ বেয়ে রক্তের অক্ষরে লেখা হয়েছে মাতৃভাষায় কথা বলার এবং আমাদের স্বাধীনতার অধিকার।

তিনি বলেন, সশস্ত্র বিপ্লবের মধ্য দিয়ে দেশটা স্বাধীন করা যায় কিনা সেই চেষ্টা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু এতে সফল হতে পারেননি। তখনও দেশের মানুষ রাজনৈতিকভাবে অতটা তৈরি ছিলেন না। তাই সংগঠন তৈরির জন্য মানুষের মধ্যে চেতনা গড়াই ছিল বঙ্গবন্ধুর গুরু দায়িত্ব। তখন থেকে সেই দায়িত্ব নেন তিনি।

সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৬২ সালেও তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি যে সশস্ত্র বিপ্লবের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তখন তা পাকিস্তান বুঝতে পারেনি। এরপরও বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন ছয় দফা পেশ করেন, তখন পাকিস্তানিরা উত্থাপনই করতে দেবে না। তাকে হত্যার চক্রান্ত করা হয়েছিল। তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন। এয়ারপোর্টে প্রথম ছয় দফার তথ্য দেন। এরপর প্রেস কনফারেন্স করেন। আওয়ামী লীগ কাউন্সিল করে, সেটা পাস করান। ৫৩ দিনে ৫২টা সভা করেছিলেন। ছয় দফার মধ্যে একদফা ছিল স্বাধীনতা।

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, দলের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বেনজীর আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ, মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদক এস. এম. মান্নান কচি ও মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

আবৃত্তিকার শিমুল মুস্তাফা কবি নির্মলেন্দু গুণ-এর ‘স্বাধীনতা এই শব্দটি কী করে আমাদের হলো’ কবিতাটি আবৃত্তি করে শোনান। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ ও উপপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আওয়াল শামীম আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

খানাখন্দে ভরা নোয়াখালীর অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক, বাড়ছে দুর্ঘটনা ও জনদুর্ভোগ

১৯৪৮ সালেই দেশ স্বাধীনের সিদ্ধান্ত নেন বঙ্গবন্ধু : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৯:৩৮:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

১৯৪৮ সালে পাকিস্তানিরা বাঙালির মাতৃভাষার অধিকার কেড়ে নেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়ার পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, দেশের স্বাধীনতার কথা আপনি কখন থেকে চিন্তা করেন। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘১৯৪৮ সালে যখন মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার পাকিস্তানিরা কেড়ে নিয়েছিল, সেদিন থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ওদের সঙ্গে আর থাকবো না’। ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই কিন্তু স্বাধীনতা। একজন নেতা নিজের জীবনের সব বিসর্জন দিয়ে একটি জাতির জন্য দিনের পর দিন কারাবরণ করেছেন। জেল-জুলুম অত্যাচার সহ্য করেছেন। যে লক্ষ্য তিনি স্থির করেছিলেন, সেই লক্ষ্য সামনে রেখে একটার পর একটা পদক্ষেপ নিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি চুয়ান্ন সালে নির্বাচনও করেছেন, ছাপ্পান্ন সালে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। নিয়ম মেনেই কিন্তু এগিয়ে গেছেন। একটি লক্ষ্য স্থির রেখে। যেটা কখনো তিনি মুখে উচ্চারণ করেননি। কিন্তু একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা বা তাদের সংগঠিত করা, ঐক্যবদ্ধ করা এটা একটা কঠিন কাজ ছিল। সেই কঠিন কাজ তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করে যান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটাই আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। যে কাজটা তিনি করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাকে করতে দেওয়া হয়নি। ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। কাজেই এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে।

“যারা জয়বাংলা স্লোগানে বিশ্বাস করে না, ৭ মার্চের ভাষণকে যারা প্রেরণা বলে মনে করে না, তারা স্বাধীন বাংলাদেশই চায় না। তারা দেশের উন্নয়ন চায় না। দেশের মানুষের অর্থসামাজিক উন্নতি চায় না। তাদের কেন মানুষ ভোট দেবে। সেজন্যই তারা বারবার ইলেকশন বানচাল করে, বারবার অগ্নি সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়।”

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য, দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করবার জন্য, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এখন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য সবাইকে কাজ করে যেতে হবে।

দেশকে ধ্বংস করতে বিএনপি-জামায়াতের যে কোনো পদক্ষেপ ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার জন্য দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন বর্জনের পর বিএনপি-জামায়াত চক্র অগ্নিসংযোগ ও জঙ্গিবাদের মাধ্যমে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে দেশকে ধ্বংস করতে নেমেছে। তারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মাধ্যমে দেশকে ধ্বংস করতে এবং জনদুর্ভোগ বাড়াতে চায়।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে তারা (বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট) ৩০টি আসন পেয়েছিল। তার পরেই তো তাদের আরও খারাপ অবস্থা। এখন তারা নির্বাচন না করে নির্বাচন বানচাল করতে এবং দেশকে ধ্বংস করতে নেমেছে। সে বিষয়ে দেশের মানুষকে সজাগ থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে বিশ্বাস করে না, ৭ মার্চের ভাষণকে প্রেরণা বলে মনে করে না, তার অর্থ তারা স্বাধীন বাংলাদেশই চায় না। বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়ন তথা তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন তারা চায় না। কাজেই তাদের মানুষ কেন ভোট দেবে।

তিনি বলেন, আজকে আমরা সরকারে আছি, জনগণ বারবার আমাদের ভোট দিয়েছে, দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আর্থসামাজিক উন্নতিও হচ্ছে। যে দলটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের হাতে গড়ে তুলেছেন, যে দল দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছে, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিজয় এনে দিয়েছে, সেই দলই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই দল ক্ষমতায় এলে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়, দেশের উন্নতি হয়। যে যত কথাই বলুক, এই বাস্তবতা সবাইকে স্বীকার করতে হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আসলে যার দাঁত তার ব্যথা, যে কষ্ট করে সে বোঝে, মানুষের জন্য তার কী করতে হবে। আজকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে রেখে যান। কিন্তু এর পরের ২৯ বছরে দেশ কিন্তু এক কদমও আগে বাড়েনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই দেশ সামনের দিকে এগিয়ে গেছে এবং ইনশাল্লাহ্ একদিন জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো।

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, যারা জয় বাংলার স্লোগান চায় না, ৭ মার্চের ভাষণে যারা বিশ্বাস করে না, তারা দেশের উন্নয়ন চায় না। তাদের কেন মানুষ ভোট দেবে? জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। দীর্ঘ ২৪ বছরের সংগ্রাম এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। সংগ্রামের পথ বেয়ে রক্তের অক্ষরে লেখা হয়েছে মাতৃভাষায় কথা বলার এবং আমাদের স্বাধীনতার অধিকার।

তিনি বলেন, সশস্ত্র বিপ্লবের মধ্য দিয়ে দেশটা স্বাধীন করা যায় কিনা সেই চেষ্টা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু এতে সফল হতে পারেননি। তখনও দেশের মানুষ রাজনৈতিকভাবে অতটা তৈরি ছিলেন না। তাই সংগঠন তৈরির জন্য মানুষের মধ্যে চেতনা গড়াই ছিল বঙ্গবন্ধুর গুরু দায়িত্ব। তখন থেকে সেই দায়িত্ব নেন তিনি।

সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৬২ সালেও তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি যে সশস্ত্র বিপ্লবের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তখন তা পাকিস্তান বুঝতে পারেনি। এরপরও বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন ছয় দফা পেশ করেন, তখন পাকিস্তানিরা উত্থাপনই করতে দেবে না। তাকে হত্যার চক্রান্ত করা হয়েছিল। তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন। এয়ারপোর্টে প্রথম ছয় দফার তথ্য দেন। এরপর প্রেস কনফারেন্স করেন। আওয়ামী লীগ কাউন্সিল করে, সেটা পাস করান। ৫৩ দিনে ৫২টা সভা করেছিলেন। ছয় দফার মধ্যে একদফা ছিল স্বাধীনতা।

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, দলের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বেনজীর আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ, মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদক এস. এম. মান্নান কচি ও মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

আবৃত্তিকার শিমুল মুস্তাফা কবি নির্মলেন্দু গুণ-এর ‘স্বাধীনতা এই শব্দটি কী করে আমাদের হলো’ কবিতাটি আবৃত্তি করে শোনান। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ ও উপপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আওয়াল শামীম আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন।