Dhaka সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুধু গণবিরোধীই নয়, এটি পরিপূর্ণভাবে ব্যর্থ ও অন্তঃসারশূন্য : গয়েশ্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুধু গণবিরোধীই নয়, এটি পরিপূর্ণভাবে ব্যর্থ ও অন্তঃসারশূন্য উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গত ১৫ বছর ধরে গণবিদ্বেষী সরকার যে দুর্নীতি-দুঃশাসন ও দমন-দুর্বৃত্তায়ন চালিয়েছে, সমাজের প্রতিটি শ্রেণী ও পেশার মানুষ তাতে বৈষম্য, অবিচার ও নিপীড়ণের শিকার হয়েছেন।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার নিজ অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে, অবৈধ অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক সুবিধা দিয়ে ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন আদায় করেছে। বিশেষ করে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি, অসম দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, নামমাত্র মূল্যে ট্রানজিট–সুবিধা, পানি সমস্যার সমাধানহীনতা, গোপন আমদানি চুক্তিসহ জাতীয় স্বার্থবিরোধী অজস্র প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে।

তিনি বলেন, যার প্রমাণস্বরূপ ওবায়দুল কাদের বলেছেন- ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের সময় ভারতই আওয়ামী লীগের পাশে দাঁড়িয়েছিল।

বিএনপির এ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাস, রাষ্ট্রযন্ত্রের একাংশের ধ্বংসযজ্ঞ এবং বিতর্কিত দেশগুলোর হস্তক্ষেপ এই সমন্বিত অপশক্তিকে উপেক্ষা করে জনগণের সমর্থনকে উৎস হিসেবে ধারণ করে বিএনপি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় অবিচল রয়েছে।

৭ জানুয়ারি যে ‘ডামি’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তা জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা বা আকাঙ্খার প্রতিফলন ছিল না বলে দাবি করেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, বরং, নির্বাচনের নামে এটি ছিল জাতির সঙ্গে একটি সহিংস প্রতারণা, যার উদ্দেশ্য অবৈধভাবে, অনৈতিকভাবে ও অসাংবিধানিকভাবে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখা।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন। তাদের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার নিজ অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে অবৈধ অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক সুবিধা দিয়ে ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন আদায় করেছে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচন প্রহসনমূলক ও ডামি। শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ, আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাস, রাষ্ট্রযন্ত্রের একাংশের ধ্বংসযজ্ঞ এবং বিতর্কিত দেশসমূহের হস্তক্ষেপ- এই সমন্বিত অপশক্তিকে উপেক্ষা করে জনগণের সমর্থনকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার উৎস হিসেবে ধারণ করে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় অবিচল রয়েছে বিএনপি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান অস্বাভাবিক অচলাবস্থা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে তার অনিবার্য পরিণতি ও সম্পূর্ণ দায় আওয়ামী লীগকেই বহন করতে হবে। গণতান্ত্রিক অধিকারকে রুদ্ধ করার এই অশুভ প্রক্রিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সংকটকে ঘনীভূত করে তুলবে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রমাণ করে- এই দলটি কখনোই নিয়মতান্ত্রিকভাবে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করেনি।

বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, ‘২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে, ভোট ডাকাতির অভিনব সব পন্থা অবলম্বন করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে কলঙ্কিত ইতিহাস তৈরি করেছে তারই ধারাবাহিকতায় ডামি প্রার্থী, ডামি দল, ডামি ভোটার ও ডামি পর্যবেক্ষকদের সমন্বয়ে মঞ্চস্থ হয়েছে ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচন।’

গয়েশ্বর বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য গণমানুষের ন্যায্য দাবি দাওয়া আদায়ের আকাঙ্খা পূরণ। এই লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য মানুষের কাছে যাওয়া, মানুষকে সম্পৃক্ত করা, জনমত সৃষ্টি করা, গণতন্ত্রহীনতার যে পরিস্থিতি সেটি থেকে উত্তরণের জন্য শেখ হাসিনার অধীনে প্রহসনের ভোট বর্জন করা।

দলের গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের নিয়ে বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২৫ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে কেনো ফ্যাসিস্ট সরকার পরিকল্পিতভাবে গ্রেপ্তার করেছে? এই সময়ে বিএনপির রাজনীতি করার অপরাধে কেনো ১১ জন কর্মীকে কারাগারে হত্যা করেছে? এই প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরেই নিহিত বিএনপির আত্মত্যাগ, তথা সার্থকতা।

তিনি বলেন, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, প্রশাসন ও আদালতের কতিপয় সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক বিবেচনায় পদোন্নতি ও সুযোগ-সুবিধা পেয়ে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারে পরিণত হয়েছেন। তারাই আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠনে পরিণত করেছেন বিচার বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, দুদকসহ সাংবিধানিক ও বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানসমূহকে। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে লিপ্ত রয়েছেন বিএনপির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে বন্দুকের গুলিতে, গ্রেনেড মেরে, মিথ্যা মামলায় দমিত করার অপচেষ্টায়।

গয়েশ্বর রায় বলেন, হাসিনার একমাত্র সাফল্য মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি। প্রতিটি খাতের প্রতিটি খরচেই সরকারের অস্বাভাবিক লুটপাটে বাংলাদেশ আজ দেউলিয়া হওয়ার পথে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সরকারি যোগসাজশে ৮১ মিলিয়ন ডলার ডলার চুরি হয়েছে- এগুলো কার টাকা? এই পুরো টাকা বাংলাদেশের জনগণের। ব্যর্থ সরকার বাড়িয়ে চলছে বৈদেশিক খণের বোঝা, যা ইতিমধ্যে ছাড়িয়ে গিয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার।

‘আয় না বাড়লেও, লাগামহীনভাবে বাড়ছে ব্যয়, বেড়ে চলেছে প্রতিটি পণ্যের দাম। সরকারি হিসেবে বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি ২৯ লক্ষ তরুণ, নিষ্ক্রিয় ও বেকার। যদিও প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। বাস্তবতাবিবর্জিত, বিতর্কিত ও ব্যর্থ শিক্ষা ব্যবস্থা বাড়িয়ে চলছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা, আর বিদেশিরা এসে দখল করছে চাকরির বাজার।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ শেখ হাসিনার অপশাসন থেকে, মুক্তি চায় বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ। তাদের প্রত্যাশা, বিএনপির আন্দোলনের মাধ্যমে জনবিদ্বেষী ফ্যাসবাদের পতন ঘটবে, এবং দেশে আবারও সুশাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে। বিএনপির নেতৃত্বে বাংলাদেশে দ্রুত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে। ১২ কোটি ভোটারের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিশ্চিত করে, শান্তিপূর্ণ ও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন মাধ্যমে, বিএনপি আবারও স্থাপন করবে একটি নির্বাচিত ও জবাবদিহিতামূলক সরকার ইনশা আল্লাহ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইমলাম খান, ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. সিরাজুল ইসলাম, আবুল খায়ের ভুইয়া, তাহসিনা রুশদির লুনা, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, হারুন অর রশিদ প্রমুখ।

আবহাওয়া

সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি তরুণীর পা বিচ্ছিন্ন

আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুধু গণবিরোধীই নয়, এটি পরিপূর্ণভাবে ব্যর্থ ও অন্তঃসারশূন্য : গয়েশ্বর

প্রকাশের সময় : ০৫:০১:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুধু গণবিরোধীই নয়, এটি পরিপূর্ণভাবে ব্যর্থ ও অন্তঃসারশূন্য উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গত ১৫ বছর ধরে গণবিদ্বেষী সরকার যে দুর্নীতি-দুঃশাসন ও দমন-দুর্বৃত্তায়ন চালিয়েছে, সমাজের প্রতিটি শ্রেণী ও পেশার মানুষ তাতে বৈষম্য, অবিচার ও নিপীড়ণের শিকার হয়েছেন।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার নিজ অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে, অবৈধ অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক সুবিধা দিয়ে ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন আদায় করেছে। বিশেষ করে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি, অসম দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, নামমাত্র মূল্যে ট্রানজিট–সুবিধা, পানি সমস্যার সমাধানহীনতা, গোপন আমদানি চুক্তিসহ জাতীয় স্বার্থবিরোধী অজস্র প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে।

তিনি বলেন, যার প্রমাণস্বরূপ ওবায়দুল কাদের বলেছেন- ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের সময় ভারতই আওয়ামী লীগের পাশে দাঁড়িয়েছিল।

বিএনপির এ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাস, রাষ্ট্রযন্ত্রের একাংশের ধ্বংসযজ্ঞ এবং বিতর্কিত দেশগুলোর হস্তক্ষেপ এই সমন্বিত অপশক্তিকে উপেক্ষা করে জনগণের সমর্থনকে উৎস হিসেবে ধারণ করে বিএনপি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় অবিচল রয়েছে।

৭ জানুয়ারি যে ‘ডামি’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তা জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা বা আকাঙ্খার প্রতিফলন ছিল না বলে দাবি করেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, বরং, নির্বাচনের নামে এটি ছিল জাতির সঙ্গে একটি সহিংস প্রতারণা, যার উদ্দেশ্য অবৈধভাবে, অনৈতিকভাবে ও অসাংবিধানিকভাবে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখা।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন। তাদের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার নিজ অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে অবৈধ অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক সুবিধা দিয়ে ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন আদায় করেছে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচন প্রহসনমূলক ও ডামি। শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ, আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাস, রাষ্ট্রযন্ত্রের একাংশের ধ্বংসযজ্ঞ এবং বিতর্কিত দেশসমূহের হস্তক্ষেপ- এই সমন্বিত অপশক্তিকে উপেক্ষা করে জনগণের সমর্থনকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার উৎস হিসেবে ধারণ করে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় অবিচল রয়েছে বিএনপি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান অস্বাভাবিক অচলাবস্থা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে তার অনিবার্য পরিণতি ও সম্পূর্ণ দায় আওয়ামী লীগকেই বহন করতে হবে। গণতান্ত্রিক অধিকারকে রুদ্ধ করার এই অশুভ প্রক্রিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সংকটকে ঘনীভূত করে তুলবে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রমাণ করে- এই দলটি কখনোই নিয়মতান্ত্রিকভাবে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করেনি।

বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, ‘২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে, ভোট ডাকাতির অভিনব সব পন্থা অবলম্বন করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে কলঙ্কিত ইতিহাস তৈরি করেছে তারই ধারাবাহিকতায় ডামি প্রার্থী, ডামি দল, ডামি ভোটার ও ডামি পর্যবেক্ষকদের সমন্বয়ে মঞ্চস্থ হয়েছে ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচন।’

গয়েশ্বর বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য গণমানুষের ন্যায্য দাবি দাওয়া আদায়ের আকাঙ্খা পূরণ। এই লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য মানুষের কাছে যাওয়া, মানুষকে সম্পৃক্ত করা, জনমত সৃষ্টি করা, গণতন্ত্রহীনতার যে পরিস্থিতি সেটি থেকে উত্তরণের জন্য শেখ হাসিনার অধীনে প্রহসনের ভোট বর্জন করা।

দলের গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের নিয়ে বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২৫ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে কেনো ফ্যাসিস্ট সরকার পরিকল্পিতভাবে গ্রেপ্তার করেছে? এই সময়ে বিএনপির রাজনীতি করার অপরাধে কেনো ১১ জন কর্মীকে কারাগারে হত্যা করেছে? এই প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরেই নিহিত বিএনপির আত্মত্যাগ, তথা সার্থকতা।

তিনি বলেন, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, প্রশাসন ও আদালতের কতিপয় সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক বিবেচনায় পদোন্নতি ও সুযোগ-সুবিধা পেয়ে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারে পরিণত হয়েছেন। তারাই আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠনে পরিণত করেছেন বিচার বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, দুদকসহ সাংবিধানিক ও বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানসমূহকে। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে লিপ্ত রয়েছেন বিএনপির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে বন্দুকের গুলিতে, গ্রেনেড মেরে, মিথ্যা মামলায় দমিত করার অপচেষ্টায়।

গয়েশ্বর রায় বলেন, হাসিনার একমাত্র সাফল্য মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি। প্রতিটি খাতের প্রতিটি খরচেই সরকারের অস্বাভাবিক লুটপাটে বাংলাদেশ আজ দেউলিয়া হওয়ার পথে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সরকারি যোগসাজশে ৮১ মিলিয়ন ডলার ডলার চুরি হয়েছে- এগুলো কার টাকা? এই পুরো টাকা বাংলাদেশের জনগণের। ব্যর্থ সরকার বাড়িয়ে চলছে বৈদেশিক খণের বোঝা, যা ইতিমধ্যে ছাড়িয়ে গিয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার।

‘আয় না বাড়লেও, লাগামহীনভাবে বাড়ছে ব্যয়, বেড়ে চলেছে প্রতিটি পণ্যের দাম। সরকারি হিসেবে বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি ২৯ লক্ষ তরুণ, নিষ্ক্রিয় ও বেকার। যদিও প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। বাস্তবতাবিবর্জিত, বিতর্কিত ও ব্যর্থ শিক্ষা ব্যবস্থা বাড়িয়ে চলছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা, আর বিদেশিরা এসে দখল করছে চাকরির বাজার।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ শেখ হাসিনার অপশাসন থেকে, মুক্তি চায় বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ। তাদের প্রত্যাশা, বিএনপির আন্দোলনের মাধ্যমে জনবিদ্বেষী ফ্যাসবাদের পতন ঘটবে, এবং দেশে আবারও সুশাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে। বিএনপির নেতৃত্বে বাংলাদেশে দ্রুত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে। ১২ কোটি ভোটারের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিশ্চিত করে, শান্তিপূর্ণ ও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন মাধ্যমে, বিএনপি আবারও স্থাপন করবে একটি নির্বাচিত ও জবাবদিহিতামূলক সরকার ইনশা আল্লাহ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইমলাম খান, ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. সিরাজুল ইসলাম, আবুল খায়ের ভুইয়া, তাহসিনা রুশদির লুনা, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, হারুন অর রশিদ প্রমুখ।