বগুড়া জেলা প্রতিনিধি :
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, নির্বাচনের আগে নয় মাস চালের দাম বাড়েনি। নির্বাচন পরবর্তী সরকার গঠনের সময় লোভী ব্যবসায়ীরা লোভ দমাতে পারেননি বলে দাম বেড়ে গেছে। আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধি কোনভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বগুড়া জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে করণীয় নির্ধারণে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার ব্যবসায়িদের হয়রানি করবে না। তবে কেউ যদি কোনো অনিয়ম করেন তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন মামলা করা হবে। নির্বাচনের আগে ও পরের এই সময়ে অনেক ব্যবসায়ী লোভ সামলাতে না পেরে চালের মূল্য বাড়িয়ে বাজার অস্থিতিশীল করেছিলেন। এখন সেই সুযোগ বন্ধ করতে নতুন আইন তৈরি করা হয়েছে। চালের বস্তার গায়ে উৎপাদন তারিখ, মূল্য ও কোন জাতের চাল তা লিপি বদ্ধ করতে হবে। সকলে দেশকে ভালোবাসলেই দেশ থেকে ক্ষুধা নিরুদ্দেশ হবে এবং আমাদের স্বাধীনতা স্বার্থক হবে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, যখন একটা শিয়াল ডাক দেয়, তখন সব শিয়াল একসঙ্গে ডাক দেয়। এখন বেয়াদবি মাপ করবেন। এই না যে, আমি আপনাদের শিয়াল বলছি। তবে এটাও ঠিক, চাউলের ব্যবসার বিষয়ে আপনারা শিয়ালের চেয়েও ধূর্ত। এটা অকপটে আমাকে বলতে হয়।
চাল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মিল মালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আপনারা জানেন? মিনিকেট বলে কোনো চাল নেই, আপনি মিনিকেট বলে কোনো চাল বিক্রি করতে পারবেন না। বস্তার গায়ে ধানের জাত উল্লেখ করতে হবে। মিল গেটে চালের রেট লিখতে হবে, উৎপাদনের তারিখ লিখতে হবে। আর ছাঁটাই কমাতে হবে। আমাদের প্রায় ১৬-২০ লাখ টন চাল আপনারা বাতাসে উড়ায় দেন।
সব মিল মালিকের কোনো সিন্ডিকেট নেই দাবি করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এতগুলো মিলের মধ্যে সিন্ডিকেট আছে, সেটা আমি বিশ্বাস করি না। তবে হ্যাঁ, মিল মালিকদের মধ্যে কিন্তু সেরকম প্রবণতা আছে। যদি বলেন কুষ্টিয়ার দুজন, চাঁপাইয়ের একজন বা দুজন, নওগাঁর দুজন, দিনাজপুরের দুই থেকে তিনজন, ঝিনাইদহের আছে দুজন। তারা নিজেদের মধ্যে মেসেজ চালাচালি করে যে, আজ এই দরে (চাল) বিক্রি করব, আর এই দামে ধান কিনব।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার পাল, খাদ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীসহ বগুড়ার বিভিন্ন চালকল মালিক, চালের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী।