নিজস্ব প্রতিবেদক :
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, জি বাংলা দেখতে দেখতে তিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের ফোন পেয়েছিলেন। প্রথমে তিনি বিশ্বাস করতে পারেননি। ভেবেছিলেন, মনে হয় কোনো রোগীর জন্য তদবির করবেন। কিন্তু তাকে অভিনন্দন দিয়ে বলা হলো, তাকে প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের চিকিৎসকদের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসক বাহিনী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব থেকে বড় অস্ত্র। তাদের জন্য কাজ করতে পারলে আমি আনন্দিত হব। চিকিৎসকদের সুরক্ষার ব্যাপারে কাজ করতে এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে নির্দেশনা পেয়েছি।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হলে সমন্বয় করে সঠিক এবং ভালো পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তাহলেই জনসাধারণের আস্থা ফিরে আসবে। শতভাগ হয়তো পারব না সবাই মিলে এক হয়ে কাজ করলে অবশ্যই অনেক কাজ এগিয়ে যাবে।
চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি কিছুদিন আগেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছি। পূর্বে আমি যেমন ছিলাম, এখনও তেমনি আছি। আমি একজন সাধারণ মানুষ। যেকোনো সমস্যায় আমার কাছে আসবেন, যথাসাধ্য সমাধানের চেষ্টা করব।
সামন্ত লাল সেন বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মাথায় একটা বিষয় খুব কাজ করছে, সেটি হলো আমরা যদি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দ্বারপ্রান্তে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে পারি, তাহলে শহরে রোগীর চাপ অনেকটাই কমে যাবে। এজন্য আমাদের যা যা করণীয় আমরা সবই করব। সর্বপ্রথম আমাদের উপজেলা, জেলায় চিকিৎসকদের কাজের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, চিকিৎসা সেবা শুধুমাত্র একজন চিকিৎসকের কাজ নয়। এটি একটি সমন্বিত কার্যক্রম। এজন্য যেমন চিকিৎসক দরকার, তেমনি নার্স দরকার, যন্ত্রপাতি, ওষুধপত্র দরকার। এছাড়াও চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য একটা সুন্দর পরিচ্ছন্নতা দরকার, তারপর পরিচালনার জন্য দক্ষ প্রশাসন দরকার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা শুধু সমালোচনা করি মফস্বল এলাকায় ডাক্তার নেই কিন্তু সেখানে কি ডাক্তারের কাজের একটা পরিবেশ আমরা তৈরি করতে পেরেছি? পারিনি। এজন্য আমাদের একটা পরিবেশও তৈরি করা দরকার।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সবসময় শুনতে হয় যে, রোগীরা চিকিৎসা নিতে বিদেশ চলে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমি বলি, মানুষ তো শপিং করতেও বিদেশে যায়। চিকিৎসা সেবায় আমরা যা করি, পৃথিবীর অন্যকোনো দেশে কি ভিন্ন কিছু করে? আমি মনে করি আমাদের চিকিৎসকরা এখন যথেষ্ট দক্ষ। আমরা যেকোনো রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে সক্ষম।
চিকিৎসকদের উদ্দেশে ডা. সামন্ত লাল বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই যেখানে যাই, চিকিৎসকদের নিয়ে নানা কথা শুনতে হয়। আমি নিজেও একজন চিকিৎসক, আমি আমার পেশা ও পেশাজীবীদের নিয়ে কোনো ধরনের নেতিবাচক কিছু শুনতে চাই না। আমরা মানুষের সেবা করার জন্য এ পেশায় এসেছি।
এর আগে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, বিএমআরসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ, বিএসএমএমইউর সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত ও আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাচিপ মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলনের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জামালউদ্দিন।
নিজস্ব প্রতিবেদক 






















