Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাবেক চেয়ারম্যান হত্যা মামলায় বর্তমান চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার ৮

পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি : 

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখর কুমার সিকদারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বর্তমান চেয়ারম্যান মিঠুন হালদারসহ আটজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) এ ঘটনায় নিহত চেয়ারম্যান শেখর সিকদারের স্ত্রী মালা মন্ডল বাদী হয়ে এজাহার নামীয় ১৫ জন এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে নেছারাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর আগে বরিশালে বেলা ১২টায় র‌্যাব-৮-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী যুবায়ের আলম প্রেস ব্রিফিংয়ের চার আসামিকে গ্রেপ্তারের কথা জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মামলার প্রধান আসামি আটঘর-কুড়িয়ানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিঠুন হালদার (৪৫), শংকর সরকার (৪৬), আমিনুল ইসলাম ওরফে বাকিবিল্লাহ (২৫), তাপস মজুমদার (৫০), স্বাধীন হালদার (৩২), বাবুল হাওলাদার (৫৫), সুষময় হালদার (১৮) ও জালিস মাহমুদ (২৪)।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- পংকজ সরকার (৫৫), মো. জহির (৪৫), মনি বড়াল (৪০), বুলু মন্ডল (৪০), শান্তি বড়াল (৫০), সঞ্জিব মিস্ত্রী ওরফে মোডাই (৪৫), মিলন পাইক (৪২), স্বপন মন্ডল (৪৮), সঞ্জয় বিশ্বাস (৩৬), সুষময় হালদার (১৮) ও জালিস মাহমুদ (২৪)।

মঙ্গলবার দিবাগত ভোররাতে র‌্যাব-৮ এর একটি দল বাগেরহাটের মোল্লারহাট এলাকা থেকে চেয়ারম্যান মিঠুন হালদার তার ছোট ভাই সুষময় হালদার, বাকিবিল্লাহ ও জালিস মাহমুদকে আটক করে। বুধবার বিকেলে আটককৃতদের নেছারাবাদ থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব। বাকি চার আসামিকে কুড়িয়ানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বুধবার সকালে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মুকিত হাসান খাঁন, নেছারাবাদের ইউএনও মনিরুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার সাবিহা মেহেবুবা ও নেছারাবাদ থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা কুড়িয়ানা বাজার সংলগ্ন কেন্দ্রীয় দূর্গা মন্দিরে উপস্থিত এলাকাবাসীকে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে তাদেরকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান। পরে পুলিশ সুপার ও অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা নিহত চেয়ারম্যানের বাসভবনে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন।

দুপুরে নেছারাবাদ থানা প্রাঙ্গণে সাংবাদকিদের উদ্দেশ্যে প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম (পিপিএম)।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে উপজেলার আটঘর-কুড়িয়ানা ইউনিয়নের ৪২ নম্বর কুড়িয়ানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মিঠুন হালদারের আগে ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখর সিকদারকে অতিথি করা নিয়ে দুই চেয়ারম্যান সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে সাবেক চেয়ারম্যান শেখর সিকদারসহ আরও চারজন আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শেখর সিকদারকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে নিহত সাবেক চেয়ারম্যান শেখর সিকদারের সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে কুড়িয়ানা বাজারের একটি অফিস, দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বর্তমান চেয়ারম্যানের বাড়িতে এবং তার দুই সমর্থকের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকায় স্থানীয় পুলিশের সাথে র‌্যাব, অতিরিক্ত পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

বুধবার বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে কুড়িয়ানার ব্রাক্ষ্মণকাঠির নিজবাড়িতে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সাবেক চেয়ারম্যান হত্যা মামলায় বর্তমান চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার ৮

প্রকাশের সময় : ০৮:১৫:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৪

পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি : 

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখর কুমার সিকদারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বর্তমান চেয়ারম্যান মিঠুন হালদারসহ আটজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) এ ঘটনায় নিহত চেয়ারম্যান শেখর সিকদারের স্ত্রী মালা মন্ডল বাদী হয়ে এজাহার নামীয় ১৫ জন এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে নেছারাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর আগে বরিশালে বেলা ১২টায় র‌্যাব-৮-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী যুবায়ের আলম প্রেস ব্রিফিংয়ের চার আসামিকে গ্রেপ্তারের কথা জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মামলার প্রধান আসামি আটঘর-কুড়িয়ানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিঠুন হালদার (৪৫), শংকর সরকার (৪৬), আমিনুল ইসলাম ওরফে বাকিবিল্লাহ (২৫), তাপস মজুমদার (৫০), স্বাধীন হালদার (৩২), বাবুল হাওলাদার (৫৫), সুষময় হালদার (১৮) ও জালিস মাহমুদ (২৪)।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- পংকজ সরকার (৫৫), মো. জহির (৪৫), মনি বড়াল (৪০), বুলু মন্ডল (৪০), শান্তি বড়াল (৫০), সঞ্জিব মিস্ত্রী ওরফে মোডাই (৪৫), মিলন পাইক (৪২), স্বপন মন্ডল (৪৮), সঞ্জয় বিশ্বাস (৩৬), সুষময় হালদার (১৮) ও জালিস মাহমুদ (২৪)।

মঙ্গলবার দিবাগত ভোররাতে র‌্যাব-৮ এর একটি দল বাগেরহাটের মোল্লারহাট এলাকা থেকে চেয়ারম্যান মিঠুন হালদার তার ছোট ভাই সুষময় হালদার, বাকিবিল্লাহ ও জালিস মাহমুদকে আটক করে। বুধবার বিকেলে আটককৃতদের নেছারাবাদ থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব। বাকি চার আসামিকে কুড়িয়ানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বুধবার সকালে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মুকিত হাসান খাঁন, নেছারাবাদের ইউএনও মনিরুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার সাবিহা মেহেবুবা ও নেছারাবাদ থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা কুড়িয়ানা বাজার সংলগ্ন কেন্দ্রীয় দূর্গা মন্দিরে উপস্থিত এলাকাবাসীকে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে তাদেরকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান। পরে পুলিশ সুপার ও অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা নিহত চেয়ারম্যানের বাসভবনে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন।

দুপুরে নেছারাবাদ থানা প্রাঙ্গণে সাংবাদকিদের উদ্দেশ্যে প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম (পিপিএম)।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে উপজেলার আটঘর-কুড়িয়ানা ইউনিয়নের ৪২ নম্বর কুড়িয়ানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মিঠুন হালদারের আগে ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখর সিকদারকে অতিথি করা নিয়ে দুই চেয়ারম্যান সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে সাবেক চেয়ারম্যান শেখর সিকদারসহ আরও চারজন আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শেখর সিকদারকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে নিহত সাবেক চেয়ারম্যান শেখর সিকদারের সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে কুড়িয়ানা বাজারের একটি অফিস, দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বর্তমান চেয়ারম্যানের বাড়িতে এবং তার দুই সমর্থকের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকায় স্থানীয় পুলিশের সাথে র‌্যাব, অতিরিক্ত পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

বুধবার বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে কুড়িয়ানার ব্রাক্ষ্মণকাঠির নিজবাড়িতে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।