Dhaka মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বন্দুক-বুলেট দিয়ে গণতন্ত্রকামী মানুষকে সরকার কখনও কাবু করতে পারবে না : মঈন খান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বিচার বিভাগের অপব্যবহার করার দ্বিতীয় নজির পৃথিবীতে নেই। আমাদের সংগ্রাম সহজ নয় বলেই, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে। সরকারের অস্ত্রর বিরুদ্ধে বুক পেতে দিয়েছি। বন্দুক-বুলেট দিয়ে গণতন্ত্রকামী মানুষকে সরকার কখনও কাবু করতে পারবে না।

রোববার (২৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ডামি নির্বাচনে অবৈধ সংসদ বাতিল ও নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভাটির আয়োজন করে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি।

মঈন খান বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল গণতন্ত্রের জন্য। এই গণতন্ত্র হরণ করেছে আওয়ামী লীগ। যদি গণতন্ত্র না থাকে, এ দেশের মানুষ কেন যুদ্ধ করেছিল, বুকের তাজা রক্ত দিয়েছিল এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগ ছিল পলায়নকারী দল এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, যুদ্ধ করেছিল দেশের খেটে খাওয়া মানুষ। আওয়ামী লীগ কোনো মুক্তিযুদ্ধ করেনি। দেশের মানুষ কানাডায় বেগম বাড়ি, সেকেন্ড হোম চায় না। তারা চায় ৫ বছর পর একদিন ভোট দিতে, সেটাই কি অপরাধ? ১৮ কোটি মানুষ কি এই অধিকারটুকু পাবে না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কালো পতাকা মিছিল নিয়ে ঠাট্টা করেছে আওয়ামী লীগ। তারা বলেছে ‘কালো পতাকা মিছিল তো শোকের’। কিন্তু আওয়ামী লীগ হয়তো জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছ। তারা এ দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এর চেয়ে আর বড় কোনো শোক নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সারা বিশ্বের স্বীকৃত পন্থা হলো কালো পতাকা মিছিল, এটা প্রতিবাদের ভাষা। আমরা কালো পতাকা মিছিলের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ভাষা ব্যবহার করেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত এই সরকারের পতন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা শান্তিপূর্ণ কালো পতাকা মিছিল করে যাবো। গণতন্ত্র কিন্তু ছেলের হাতের মোয়া নয়। ৭ জানুয়ারি আমাদের প্রত্যাশা অনেক বড় ছিল। কিন্তু, আমরা সেটি অর্জন করতে পারিনি। এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আমাদের শক্তি হচ্ছে জনগণের শক্তি।

মঈন বলেন, গণতন্ত্র কিন্তু হাতের মোয়া নয়। আমরা এটার জন্য একটি রাষ্ট্রের শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি। সেই শক্তি হলো- বুলেট। সেজন্য আমাদের আজকের এই সংগ্রাম সহজ সংগ্রাম নয়। ১৫ বছরে লাখের বেশি মামলা দেওয়া হয়েছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুটি ভিন্ন চরিত্রের রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ যা করে বিএনপি তা করে না। আওয়ামী লীগ বাকশাল করে আর বিএনপি গণতন্ত্র করে। আওয়ামী লীগ তাদের বিরোধী দলের উপরে জুলুম করে আর বিএনপি তাদের বিরোধী দলকে কথা বলার সুযোগ দেয়।

আওয়ামী লীগ কথায় কথায় নিজেদেরকে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি দাবি করে, এমন কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা যখন মানুষের উপর হায়নার উপর ঝাপিয়ে পড়েছিল তখন আওয়ামী লীগ কোথায় ছিল? এ প্রশ্ন আজকে তাদেরকে করতে হবে। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ করেনি। আওয়ামী লীগ ১৯৭২ থেকে ৭৫ সালে একবার বাকশাল গঠন করেছে, এখন তারা আবারও বাকশাল ‘টু’ গঠন করেছে।

বর্তমান সরকার কথায় কথায় বলে বিএনপি যখন সরকারে ছিল তখন নাকি আওয়ামী লীগের উপরে নির্যাতন করেছে, এমন কথা উল্লেখ করে ড. মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ আজকে বিএনপির সেক্রেটারি জেনারেলের বিরুদ্ধে ১০০টির অধিক মিথ্যা, বানোয়াট, গায়েবি মামলা দিয়েছে। বিএনপি যখন সরকারের দায়িত্বে ছিল তখন আওয়ামী লীগের যিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তার বিরুদ্ধে বিএনপি কয়টি মামলা দিয়েছে? বিএনপি একটি মামলাও দেয়নি। আজকে আমাদের চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখনকি বিএনপি আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর বিরুদ্ধে কোনও মামলা দিয়েছে? একটি মামলাও দেয়নি। তারা যে বলে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন তাদের উপর অনেক নির্যাতন করেছে, আওয়ামী লীগকে এটার হিসেব দিতে হবে। আওয়ামী লীগ এটা পারবে না, এটা সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের নামি-দামি নিউজ ম্যাগাজিন, টাইম ম্যাগাজিন গুলোতে বলা হয়েছে বাংলাদেশে এখন যে শাসন চলতেছে সেটি হলো বাকশাল ‘টু’। বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারির পর এখন একদলীয় শাসন আরও শক্তভাবে কায়েম হচ্ছে। নিউইয়র্ক টাইমস এবং ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, বাংলাদেশ উত্তর কোরিয়ার পথে হাঁটছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের মনোবল অটুট রাখুন। আওয়ামী লীগ এই গণতান্ত্রিক মানুষদের কোনো কিছুতেই কাবু করতে পারবে না। দেশের মানুষকে ভোটের অধিকার ফিরে দিতেই হবে, দিতেই হবে।

গণফোরাম সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান মো. বাবুল সরদার চাখারী, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদ একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মসিউজ্জামান প্রমুখ।

আবহাওয়া

সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি তরুণীর পা বিচ্ছিন্ন

বন্দুক-বুলেট দিয়ে গণতন্ত্রকামী মানুষকে সরকার কখনও কাবু করতে পারবে না : মঈন খান

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৪:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বিচার বিভাগের অপব্যবহার করার দ্বিতীয় নজির পৃথিবীতে নেই। আমাদের সংগ্রাম সহজ নয় বলেই, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে। সরকারের অস্ত্রর বিরুদ্ধে বুক পেতে দিয়েছি। বন্দুক-বুলেট দিয়ে গণতন্ত্রকামী মানুষকে সরকার কখনও কাবু করতে পারবে না।

রোববার (২৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ডামি নির্বাচনে অবৈধ সংসদ বাতিল ও নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভাটির আয়োজন করে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি।

মঈন খান বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল গণতন্ত্রের জন্য। এই গণতন্ত্র হরণ করেছে আওয়ামী লীগ। যদি গণতন্ত্র না থাকে, এ দেশের মানুষ কেন যুদ্ধ করেছিল, বুকের তাজা রক্ত দিয়েছিল এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগ ছিল পলায়নকারী দল এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, যুদ্ধ করেছিল দেশের খেটে খাওয়া মানুষ। আওয়ামী লীগ কোনো মুক্তিযুদ্ধ করেনি। দেশের মানুষ কানাডায় বেগম বাড়ি, সেকেন্ড হোম চায় না। তারা চায় ৫ বছর পর একদিন ভোট দিতে, সেটাই কি অপরাধ? ১৮ কোটি মানুষ কি এই অধিকারটুকু পাবে না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কালো পতাকা মিছিল নিয়ে ঠাট্টা করেছে আওয়ামী লীগ। তারা বলেছে ‘কালো পতাকা মিছিল তো শোকের’। কিন্তু আওয়ামী লীগ হয়তো জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছ। তারা এ দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এর চেয়ে আর বড় কোনো শোক নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সারা বিশ্বের স্বীকৃত পন্থা হলো কালো পতাকা মিছিল, এটা প্রতিবাদের ভাষা। আমরা কালো পতাকা মিছিলের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ভাষা ব্যবহার করেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত এই সরকারের পতন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা শান্তিপূর্ণ কালো পতাকা মিছিল করে যাবো। গণতন্ত্র কিন্তু ছেলের হাতের মোয়া নয়। ৭ জানুয়ারি আমাদের প্রত্যাশা অনেক বড় ছিল। কিন্তু, আমরা সেটি অর্জন করতে পারিনি। এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আমাদের শক্তি হচ্ছে জনগণের শক্তি।

মঈন বলেন, গণতন্ত্র কিন্তু হাতের মোয়া নয়। আমরা এটার জন্য একটি রাষ্ট্রের শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি। সেই শক্তি হলো- বুলেট। সেজন্য আমাদের আজকের এই সংগ্রাম সহজ সংগ্রাম নয়। ১৫ বছরে লাখের বেশি মামলা দেওয়া হয়েছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুটি ভিন্ন চরিত্রের রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ যা করে বিএনপি তা করে না। আওয়ামী লীগ বাকশাল করে আর বিএনপি গণতন্ত্র করে। আওয়ামী লীগ তাদের বিরোধী দলের উপরে জুলুম করে আর বিএনপি তাদের বিরোধী দলকে কথা বলার সুযোগ দেয়।

আওয়ামী লীগ কথায় কথায় নিজেদেরকে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি দাবি করে, এমন কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা যখন মানুষের উপর হায়নার উপর ঝাপিয়ে পড়েছিল তখন আওয়ামী লীগ কোথায় ছিল? এ প্রশ্ন আজকে তাদেরকে করতে হবে। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ করেনি। আওয়ামী লীগ ১৯৭২ থেকে ৭৫ সালে একবার বাকশাল গঠন করেছে, এখন তারা আবারও বাকশাল ‘টু’ গঠন করেছে।

বর্তমান সরকার কথায় কথায় বলে বিএনপি যখন সরকারে ছিল তখন নাকি আওয়ামী লীগের উপরে নির্যাতন করেছে, এমন কথা উল্লেখ করে ড. মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ আজকে বিএনপির সেক্রেটারি জেনারেলের বিরুদ্ধে ১০০টির অধিক মিথ্যা, বানোয়াট, গায়েবি মামলা দিয়েছে। বিএনপি যখন সরকারের দায়িত্বে ছিল তখন আওয়ামী লীগের যিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তার বিরুদ্ধে বিএনপি কয়টি মামলা দিয়েছে? বিএনপি একটি মামলাও দেয়নি। আজকে আমাদের চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখনকি বিএনপি আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর বিরুদ্ধে কোনও মামলা দিয়েছে? একটি মামলাও দেয়নি। তারা যে বলে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন তাদের উপর অনেক নির্যাতন করেছে, আওয়ামী লীগকে এটার হিসেব দিতে হবে। আওয়ামী লীগ এটা পারবে না, এটা সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের নামি-দামি নিউজ ম্যাগাজিন, টাইম ম্যাগাজিন গুলোতে বলা হয়েছে বাংলাদেশে এখন যে শাসন চলতেছে সেটি হলো বাকশাল ‘টু’। বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারির পর এখন একদলীয় শাসন আরও শক্তভাবে কায়েম হচ্ছে। নিউইয়র্ক টাইমস এবং ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, বাংলাদেশ উত্তর কোরিয়ার পথে হাঁটছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের মনোবল অটুট রাখুন। আওয়ামী লীগ এই গণতান্ত্রিক মানুষদের কোনো কিছুতেই কাবু করতে পারবে না। দেশের মানুষকে ভোটের অধিকার ফিরে দিতেই হবে, দিতেই হবে।

গণফোরাম সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান মো. বাবুল সরদার চাখারী, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদ একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মসিউজ্জামান প্রমুখ।