নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, বাংলাদেশে চালু হয়েছে এক ব্যক্তির শাসনব্যবস্থা। গোটা দেশ এখন তার হাতে জিম্মি হয়ে গেছে।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকারের পৈশাচিক অত্যাচারে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাবন্দি হয়ে এখনো শ্বাসরুদ্ধকর জীবনযাপন করছেন। তাদের সব মৌলিক অধিকার হরণ করে নিপীড়নের সর্বোচ্চ মাত্রা প্রয়োগ করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, কারাবন্দি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও হাজার হাজার নেতাকর্মীরা অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসা না পেয়ে অমানবিক জীবনযাপন করছেন। গণতন্ত্রকামী বিরোধী দলসহ আন্তর্জাতিক অধিকার গ্রুপ এবং গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশে বিরোধীদের ওপর সরকারি নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও রক্তপিপাসু ফ্যাসিস্ট সরকার সেগুলোকে ভ্রুক্ষেপ করছে না। কয়েক সপ্তাহে কারা হেফাজতে মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ।
উত্তর কোরিয়া মডেলের এই নির্বাচনে শেখ হাসিনা ছিলেন নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন দাবি করে রিজভী বলেন, কেউ ডামি, কেউ মনোনীত, কেউ নৌকা সবাই তার প্রার্থী। কোন আসনে কে পাস, কে ফেল তা সব তার হাতে পূর্বনির্ধারিত। ২৮ পার্সেন্ট থেকে ৪১ পার্সেন্ট ভোট কাউন্ট করার ফর্মুলা ও তার। যদিও ভোটার উপস্থিতি ছিল মাইক্রোস্কোপিক।
রিজভী আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিশ্বের প্রায় সব মানবাধিকার সংগঠন, অস্ট্রেলিয়ার প্রভাবশালী সিনেটর ডেভিড শুব্রিজসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক—রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা শেখ হাসিনার কারচুপিপূর্ণ নির্বাচন বাতিল করে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিয়ে নতুন করে জাতীয় নির্বাচন আহ্বান জানিয়েছে। সুতরাং তামাশার নির্বাচন বাতিল ও রাজবন্দিদের মুক্তির দাবি এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ধ্বনিত হচ্ছে।
রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে ডামি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘুমিয়ে থেকে নির্বাচনের নামে যেই সংসদের জন্ম দিয়েছে আগামীতে দেশে জনগণের ভোটে সরকার গঠিত হলে প্রতিটি টাকার হিসাব দিতে হবে বলে উল্লেখ করে রিজভী।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে ডামি সরকার অবৈধ ক্ষমতার উষ্ণতা অনুভব করলেও বর্তমানে দেশের উত্তরাঞ্চলে তীব্র শীতে কাঁপছে কৃষক শ্রমিক দিনমজুর নিম্ন আয়ের মানুষ। মানুষ যেখানে একবেলা খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে কিভাবে শীতবস্ত্র জোগাড় করবে? ডামি মন্ত্রীরা কি খেয়ে মন্ত্রিত্ব উদযাপন করবেন পত্রপত্রিকায় সেই তালিকা প্রকাশ করলেও বর্তমানে দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, দেশের অধিকাংশ মানুষ এখন অর্ধাহারে অনাহারে।
বিএনপি নেতাকর্মীসহ বিত্তবানদেরকে অসহায় শীতার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান রিজভী।